বাংলাহান্ট ডেস্ক: কঠোর পরিশ্রমের ফল সবসময় মিষ্টি হয়, একথা ভীষণভাবে বিশ্বাস করেন দেব (Dev)। দিনরাত এক করে খাটার পরেই আসে কাঙ্খিত সাফল্য। তাঁর নিজেরও এই অভিজ্ঞতা হয়েছে। কোনো রকম ফিল্মি ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকা এক নবাগত টলিউডে পা রেখে একটা গোটা প্রজন্মের আইকন স্বরূপ হয়ে উঠেছিল। আজ তিনি টলিউডের সুপারস্টার তথা তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু আকাশছোঁয়া সাফল্য ভোলাতে পারেনি পুরনো দিনগুলোকে।
বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ১৭ বছর পূর্ণ করে ফেলেছেন দেব। ‘অগ্নিশপথ’ ছবির হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন তিনি। পরাণ যায় জ্বলিয়া রে, চ্যালেঞ্জ, খোকাবাবুর মতো ছবিতে যেমন অভিনয় করেছেন, তেমনি বুনোহাঁস, জুলফিকার, ককপিটের মতো ছবিও রয়েছে দেবের ঝুলিতে। আর এখন প্রযোজক হয়ে উপহার দিচ্ছেন টনিক, কিশমিশ, কাছের মানুষ, প্রজাপতির মতো ছবি।
অনেকেই জানেন, দেবের বাবা ক্যাটারিং এর ব্যবসা চালাতেন মুম্বইতে। ঘাটালে আদি বাড়ি হলেও মা বাবার সঙ্গে মুম্বইয়ে একটা লম্বা সময় কাটিয়েছেন তিনি। খেরওয়ারির বস্তিতে থাকতেন তাঁরা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই জীবনের টুকরো কিছু স্মৃতি তুলে ধরেন দেব। তিনি জানান, বস্তিতে থাকতে থাকতে ছোট থেকেই সবকিছু ভাগ করে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়েছিল তাঁর মধ্যে।
বস্তির মানুষজনও ছিলেন উদার মানসিকতার। সবার বাড়ির দরজা সবসময় সবার জন্য খোলা থাকত। উপরন্তু দেবের পরিবারের উপরে সবার ছিল বিশেষ ভরসা। অভিনেতা বলেন, তিনি বরাবর নিজের বাবা মাকে দেখেছেন সবাইকে সাহায্য করতে। বিপদে আপদে তাই সকলে তাঁদের কাছেই আগে ছুটে আসত।
স্মৃতি হাতড়ে দেব জানান, বাবার ক্যাটারিং এর ব্যবসা থাকায় তিনি কারোর বিয়ে, অনুষ্ঠানে কম খরচে খাওয়ার দাওয়ার ব্যাপারটা সামলে দিতেন। অভিনেতার মা নিজের গয়না পর্যন্ত দিয়ে দিতেন বিয়ের কনেকে। বড় হয়ে ওঠার সময়ে বাবা মাকে দেখেই অন্যদের সাহায্য করতে শিখেছেন দেব।
ভাল স্মৃতি যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে কিছু কষ্টকর স্মৃতিও। সাক্ষাৎকারে দেব জানান, ছোটবেলায় একবার বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের বিএমডব্লিউ গাড়িটা হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখেছিলেন বলে ধমক দিয়েছিল অভিনেতার গাড়িচালক। আজ এত বছর পর সবদিক দিয়ে সফল হয়েও সেইদিনের কথাটা ভোলেননি দেব।
বাবা মা এক সময় কষ্ট করেছেন। আজ তাই তাঁদের রাজা রানীর হালে রাখতে চান অভিনেতা। আজ নিজের যোগ্যতায় ইন্ডাস্ট্রির সবথেকে ধনী অভিনেতাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। রয়েছে নিজস্ব পেন্টহাউস, গ্যারাজে বিলাসবহুল গাড়ির সারি। অন্যের গাড়ি ছুঁয়ে দেখার ‘অপরাধে’ বকা খাওয়া ছেলেটা আজ নিজেই একাধিক দামী গাড়ির মালিক। তবুও মনে অহংকার আসতে দেন না দেব। সাফল্য আসছে, আরো আসবে। কিন্তু পা মাটিতেই থাকবে, এই মন্ত্র নিয়েই চলেন দেব।