বাংলাহান্ট ডেস্ক : গতকাল ঢাকায় উদ্বোধন হল বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোর। বাংলাদেশের ইতিহাসে এদিন ছিল এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ। বহু প্রচেষ্টার পর প্রথমবারের মতো মেট্রোর চাকা গড়ালো সোনার বাংলায়। কিন্তু এপার বাংলা অর্থাৎ কলকাতায় মেট্রো রেলের ইতিহাস কিন্তু বহু পুরনো। প্রায় ৩৮ বছর আগে কলকাতায় শুরু হয় মেট্রো চলাচল। ভারতের প্রথম মেট্রোও এটি। কিন্তু সদ্য শুরু হওয়া ঢাকা মেট্রো ইতিমধ্যেই টেক্কা দিয়ে ফেলেছে কলকাতা মেট্রোকে।
বেশ কিছু বিশেষত্বের জন্য অনেকেই ‘ সদ্যোজাত ‘ ঢাকা মেট্রোকে তুলনা করতে শুরু করেছেন ‘ পুরনো ‘ কলকাতা মেট্রোর সাথে। শুরুতেই ছক ভাঙা কাজ করে দেখিয়েছে ঢাকা মেট্রো। গতকাল ঢাকা মেট্রো শুরু হয় এক মহিলা চালকের পরিচালনায়। এছাড়াও ঢাকা মেট্রো চালানোর দায়িত্বে রয়েছেন আরও ছয় মহিলা চালক। অন্যদিকে, কলকাতা মেট্রোয় এখনও পর্যন্ত কোনও মহিলা চালক নেই।
ভাড়াতেও কলকাতা মেট্রোকে টেক্কা দিয়েছে ঢাকা মেট্রো। কলকাতা মেট্রোয় ন্যূনতম ভাড়া ৫ টাকা। সেখানে ঢাকা মেট্রোয় ৫ টাকা করে গুনতে হবে প্রতি কিলোমিটার পিছু। অর্থাৎ ঢাকা মেট্রোয় একটি স্টেশন থেকে অন্য স্টেশন যেতে ন্যূনতম ২০ টাকা ভাড়া লাগবে। মজার কথা, ঢাকায় প্রথম মেট্রো স্টেশন থেকে শেষ মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত কেউ যদি যাত্রা করেন তাহলে তাকে ১০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। কিন্তু কলকাতায় সর্বোচ্চ মেট্রো ভাড়া মাত্র ২৫ টাকা।
অন্যদিকে, ঢাকার মন্ত্রীর কথায় ঢাকা মেট্রো কলকাতা মেট্রোর থেকে অনেকটাই আধুনিক। এই মেট্রো ৩৮ মিনিটে অতিক্রম করবে ১৭ টি স্টেশনের ২১.২৬ কিলোমিটার পথ। স্টেশনে প্রতি সাড়ে তিন মিনিট অন্তর ট্রেন এসে দাঁড়াবে। এছাড়াও ঢাকার মেট্রো স্টেশনে তিনটি তলা থাকবে। স্টেশন প্লাজা একতলায়, দ্বিতীয় তলায় টিকিট কাউন্টার ও মেট্রোর অফিস এবং যাত্রীদের সুবিধার জন্য কনকোর্স হল। আর তৃতীয় তলায় থাকবে রেলের প্লাটফর্ম।
এছাড়াও ঢাকা মেট্রোয় বসেছে একাধিক স্বয়ংক্রিয় টিকিট কাটার মেশিন। প্রতিটি মেট্রো স্টেশন এর দোতলায় এই মেশিন লাগানো আছে। এখান থেকে যাত্রীরা কাউন্টার কর্মীর সাহায্য ছাড়াই টিকিট কাটতে পারবেন। অন্যদিকে, মহিলা যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে তাদের জন্য আলাদা শৌচাগার, বিশ্রাম ঘর ও সদ্যোজাতদের জন্য ডায়পার পরিবর্তনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে কনকোর্স সংলগ্ন এলাকায়। এছাড়াও অন্তত পাঁচটি বিকল্প বিদ্যুৎ লাইন সংযুক্ত থাকবে ঢাকা মেট্রোর সাথে। যদি কোন কারণে ট্রেনে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তাহলে এই বিকল্প লাইন গুলোর সাহায্যে ট্রেন পরবর্তী স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে।