বাংলাহান্ট ডেস্ক: দিল্লির (Delhi Blast) লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়েই গোয়েন্দাদের সন্দেহের তালিকায় উঠে এসেছে পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লশকর-এ-তৈবা এবং জইশ-ই-মহম্মদের নাম। এমনকি গোয়েন্দা সূত্রে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই বিস্ফোরণের নেপথ্যে থাকতে পারেন ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সইদ। সূত্রের খবর, “অপারেশন সিঁদুর”-এর বদলা নিতে হাফিজের নির্দেশে এই নাশকতার ছক কষা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিস্ফোরণের (Delhi Blast) নেপথ্যে ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূল চক্রী?
পাকিস্তানের খইরুপুর তামেওয়ালি এলাকায় ৩০ অক্টোবর লশকরের এক শীর্ষনেতা সইফুল্লাহ সইফ একটি জনসভায় ভার্চুয়াল ভাষণে বলেন, “হাফিজ সইদ চুপ করে নেই, তিনি বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারত আক্রমণের পরিকল্পনা করছেন।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, লশকর ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে ব্যবহার করে সন্ত্রাসের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে। সেই বক্তব্যের দশ দিনের মাথায় দিল্লিতে ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ (Delhi Blast)। ফলে সন্দেহের তির ঘুরছে সরাসরি হাফিজ ও তার সংগঠনের দিকে।
আরও পড়ুন:বই পোকা ছেলেটাই ফিদায়েঁ জঙ্গি! দিল্লি বিস্ফোরণে উমরের নাম জড়াতেই স্তম্ভিত পরিবার ও প্রতিবেশীরা
গোয়েন্দা রিপোর্টে জানা গিয়েছে, হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে একাধিক যুবককে সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপে যুক্ত করা হচ্ছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পালটা হামলার অংশ হিসেবেই এই বিস্ফোরণের (Delhi Blast) পরিকল্পনা বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, জইশ-ই-মহম্মদও নাশকতায় জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। সম্প্রতি সংগঠনটি মহিলাদের জন্য নতুন একটি শাখা ‘জামাত-উল-মুমিনাত’ গঠন করেছে, যার মাধ্যমে অনলাইনে জিহাদি প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে।
দিল্লি বিস্ফোরণের (Delhi Blast) ঘটনায় ইতিমধ্যেই আটক হয়েছে আট জন, যাদের মধ্যে রয়েছেন তিন জন কাশ্মীরি চিকিৎসক। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক, যা মূলত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন, মুজাম্মিল শাকিল নামে চিকিৎসক, হরিয়ানার ফরিদাবাদের একটি মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত ছিলেন। তাঁর ভাড়াবাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র।

বিস্ফোরণের (Delhi Blast) ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটি ছিল হরিয়ানার রেজিস্ট্রেশনে, যা শেষ পর্যন্ত কাশ্মীরের উমর মহম্মদের নামে ব্যবহৃত হচ্ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লার এক নম্বর গেটের সামনে সিগনালে দাঁড়িয়েছিল গাড়িটি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই প্রবল বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। আগুন ধরে যায় আশপাশের ২২টি যানবাহনে, রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে দেহাংশ। এখনো পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯, আহত ২০ জনেরও বেশি।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় ভারতীয় সেনা পাকিস্তান অধিকৃত অঞ্চলে জইশ ও লশকরের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল। সেই প্রত্যাঘাতের পাঁচ মাসের মাথায় এই বিস্ফোরণ (Delhi Blast), যা গোটা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাস্থলের ফরেন্সিক পরীক্ষা চলছে, এবং এনআইএ-র পাশাপাশি দিল্লি পুলিশ, এনএসজি ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি যৌথভাবে তদন্তে নেমেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, “যে বা যারা এর পিছনে আছে, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।” এই ঘটনায় ভারতের গোয়েন্দা মহলে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— এটি কি লশকর-জইশের যৌথ ‘বদলা’ অভিযান, নাকি নতুন কোনও আন্তর্জাতিক জঙ্গি চক্রের হাতেখড়ি দিল্লির বুকে? সময়ই দেবে তার উত্তর।












