বাংলা হান্ট ডেস্ক: বেড়াতে যেতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ কার্যত খুঁজে পাওয়া মুশকিল। রাজ্য তথা দেশের গন্ডী ছাড়িয়ে অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে পৌঁছে যান। যদিও, বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আমাদের দেশেও পর্যটকরা আসেন ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা এমন এক জায়গায় প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করতে চলেছি যাকে “এক টুকরো প্যারিস” বললেও অত্যুক্তি হয়না।
মূলত, আমরা যে জায়গাটির অবতারণা করছি সেটির নাম হল কাপুরথালা। অমৃতসর থেকে মাত্র এক ঘন্টার ব্যবধানে পাঞ্জাবের উর্বর সমভূমির কেন্দ্রস্থলে রয়েছে এই ছবির মত সুন্দর জায়গা। এমনকি, এখানকার অনবদ্য সব স্থাপত্যকীর্তির জন্য পর্যটকদের কাছে এটি “পাঞ্জাবের প্যারিস” নামেও পরিচিত।
মূলত, এখানকার রাজা জগৎজিৎ সিং ফরাসি আদব কায়দার প্রতি এতটাই আগ্রহী ছিলেন যে, ভারতের মধ্যেই তিনি কার্যত তৈরি করে ফেলেছিলেন ছোট্টো একটি প্যারিস। যদিও, একাদশ শতকে এই শহরটির সূচনা হয় রাজস্থানের জয়সলমীরের ভাটি রাজপুত বংশের হাত ধরে। তবে, বর্তমানে আপনি এখানে গেলে ফরাসিদের অনুকরণে বিভিন্ন স্থাপত্য শৈলীর পাশাপাশি, স্মৃতিসৌধ এবং ভবন দেখতে পাবেন।
এছাড়াও এখানে জগৎজিৎ মহলও দেখা যাবে, যেখানে মহারাজা জগৎজিৎ সিং থাকতেন। কিন্তু, বর্তমানে এটি একটি ক্লাবে পরিণত হয়েছে। যদিও, বিশাল এই প্রাসাদ স্বচক্ষে উপভোগ করার একটা আলাদা আনন্দ রয়েছে। এই প্রাসাদে ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি সৈনিক স্কুলও রয়েছে।
পাশাপাশি, কাপুরথালায় পর্যটকদের জন্য আরও একাধিক আকর্ষণ পরিলক্ষিত হয়। বেশ কয়েকটি সুসজ্জিত বাগান দেখা যায় এখানে। এমনকি, এগুলির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই এখানে শুধুমাত্র বাগান পরিদর্শন করতেই আসেন। শুধু তাই নয়, এখানে এসে আপনি কাঞ্জলি জলাভূমিও দেখতে পাবেন। এটি একটি মনুষ্যসৃষ্ট জলাভূমি এবং পর্যটকদের মধ্যে এর একটি আলাদা আকর্ষণ রয়েছে।
এছাড়াও, সেখানে রয়েছে এলিসি প্রাসাদ। ইন্দো-ফরাসি ধাঁচে তৈরি এই প্রাসাদটি তার স্থাপত্যশৈলীর জন্য বিখ্যাত। পাশাপাশি, এটি একটি উল্লেখযোগ্য ট্যুরিস্ট স্পটও বটে। যা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন। এই প্রাসাদটি কানওয়ার বিক্রম সিং তৈরি করেছিলেন।
পথনির্দেশ:
কাপুরথালায় বিমানপথে যেতে চাইলে আপনাকে অমৃতসরে অবস্থিত রাজা সানসি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামতে হবে। পাশাপাশি, রেলপথেও খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যাবে এখানে। এই পর্যটনকেন্দ্রের নিকটবর্তী রেল স্টেশন হল কাপুরথালা রেলওয়ে স্টেশন। যা দেশের বিভিন্ন রেল রুট এবং ট্রেনের সাথে সংযুক্ত রয়েছে। এছাড়াও, দিল্লি থেকে সড়কপথেও পৌঁছনো যাবে কাপুরথালায়। গাড়িতে সময় লাগবে ৬-৭ ঘন্টা।