বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ, বিদেশে জমানো সোনার ভাণ্ডার ফেরত চাইছে। মূলত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine War) পর পশ্চিমী দেশগুলি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর কারণে রাশিয়ার ৬৪০ বিলিয়ন ডলারের সোনা এবং বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার ফ্রিজ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য বিশ্বজুড়ে একাধিক দেশ তাদের সোনা ফিরিয়ে আনছে। সম্প্রতি Invesco-র এক সার্ভেতে এই তথ্য উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য যে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এবং Sovereign Wealth Fund-এর মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। গত বছর আর্থিক বাজারে তীব্র পতনের কারণে Sovereign Money Managers-রা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। পাশাপাশি, তাদের তরফে জানানো হয় যে, মুদ্রাস্ফীতি এবং জিও-পলিটিক্যাল উত্তেজনা দীর্ঘ সময়ের জন্য অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদের কৌশল পরিবর্তনের কথা ভাবছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, Invesco Global Sovereign Asset Management Study-তে ৮৫ টি Sovereign Wealth Fund এবং ৫৭ টি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ অনুমান করছে যে আগামী দশকে মুদ্রাস্ফীতির হার আগের দশকের তুলনায় বেশি হবে। এমন পরিস্থিতিতে সোনা এবং এমার্জিং মার্কেট বন্ডে বিনিয়োগ করা ভালো বলে মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু গত বছর রাশিয়ার সাথে যা ঘটেছে তা বিশ্বজুড়ে দেশগুলিকে সোনার প্রসঙ্গে তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে। সার্ভে অনুযায়ী, অধিকাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এই বিষয়ে চিন্তিত। তাদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ জানিয়েছে যে, তারা গোল্ড রিজার্ভ তাদের দেশেই রাখছে। যেখানে ২০২০ সালে এই হার ছিল ৫০ শতাংশ।
ভারতের জন্য রয়েছে ভালো খবর: এদিকে, একটি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক জানিয়েছে যে আগে তারা লন্ডনে সোনা রাখলেও এখন তা তাদের দেশে স্থানান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি, Invesco-র হেড অফ ইনস্টিটিউশন Rod Ringrow জানিয়েছেন, এখন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বলতে চাইছে যেহেতু সোনা তাদের সেহেতু সেগুলি তাদের দেশেই রাখা উচিত।
এদিকে, জিও-পলিটিক্যাল কারণের পাশাপাশি এমার্জিং মার্কেটে পাওয়া সুযোগ কিছু কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে ডলারের বাইরে বৈচিত্র্য আনতে উৎসাহিত করেছে। ওই সার্ভেতে অংশগ্রহণকারী সাত শতাংশ এজেন্সি জানিয়েছে, আমেরিকার ক্রমবর্ধমান ঋণ ডলারের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও অধিকাংশই বিশ্বাস করে যে, রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে এর কোনো বিকল্প নেই। তবে, মাত্র ১৮ শতাংশ মনে করে যে, চিনের মুদ্রা ইউয়ান এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে।
উল্লেখ্য যে, ১৪২ টি ইনস্টিটিউশনের প্রায় ৮০ শতাংশ জিও-পলিটিক্যাল উত্তেজনাকে পরবর্তী দশকের সবচেয়ে বড় বিপদ হিসেবে মনে করেছে। অপরদিকে, ৮৩ শতাংশ পরবর্তী এক বছরে মুদ্রাস্ফীতিকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করেছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ইনফ্রাস্ট্রাকচারকে সবথেকে আকর্ষণীয় অ্যাসেট ক্লাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশেষ করে রিনিউয়েবেল এনার্জি জেনারেশন সংক্রান্ত প্রোজেক্টগুলির চাহিদা সবচেয়ে বেশি রয়েছে। এদিকে, চিনকে নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদ্বেগ রয়েছে। এই কারণে, টানা দ্বিতীয় বছর ধরে ভারত বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় দেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এছাড়াও, চিনের পাশাপাশি ব্রিটেন ও ইতালিও এক্ষেত্রে অনেকেটাই পিছিয়ে গিয়েছে।