বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কালীপুজোর (Kalipuja) রোশনাইয়ে মেতেছে গোটা বাংলা। চারদিকে আলোর উৎসব মাঝে অন্ধকার ক্রাশ করেছে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) জীবনে। প্রতিবছর কালীপুজো উপলক্ষে মা কালীকে ভরি ভরি গয়না পড়ালেও এ বছর জেল হেফাজতেই দিন কাটছে অনুব্রতর আর এই ইস্যুতে এবার তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতাকে চরম কটাক্ষ করে বসলেন বিজেপি (Bharatiya Janata Party) সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
দিলীপবাবু বলেন, “দুর্নীতি থেকে যে অর্থ আত্মসাৎ করেছিল, সেই টাকায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে পুজো করার দিন অচিরেই শেষ হবে। এই ধরনের অন্যায় এবার বন্ধ করা দরকার।”
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর কালীপুজোয় কোটি কোটি টাকার সোনার অলংকার নিজের হাতেই মাকে পরিয়ে দিতেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে এ বছর সেই অনুব্রত হেফাজতে থাকায় পুজো অনেকাংশেই জৌলুসহীন। সেই প্রসঙ্গে এদিন বিজেপি সাংসদ বলেন, “বাংলায় এই ধরনের পুজোর রমরমা বেড়ে চলেছে। দুর্নীতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারদা থেকে কয়লা এবং গরু পাচারের টাকা আত্মসাৎ করার মাধ্যমে ধুমধাম করে পালন করা হয় পুজো। তবে বর্তমানে অনেকাংশই বদলেছে চিত্র।”
তিনি আরো বলেন, “সারদার মালিক হেফাজতে যাওয়ার পর পুজো অনেক অংশে কমে গেছে। পার্থবাবু দুর্গা পুজো ধুমধাম করে করতেন, এখন আর নেই। কেষ্টবাবু ধুমধাম করে কালী পুজো পালন করতেন, ভরি ভরি গয়না পরানো হতো, এবারে যা হয়নি। আসলে অপকর্ম এবং দুর্নীতির মাধ্যমে পুজো এবং ভগবানের আরাধনা করা অন্যায় কাজ। এগুলো বন্ধ হওয়ার সময় এসেছে।”
অনুব্রত মণ্ডলের কালী আরাধনা প্রসঙ্গে এদিন তৃণমূল নেতা মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের পার্টি অফিস তৈরি হওয়ার পর থেকে যে পুজো শুরু হয়েছে, সেটা কেষ্ট কালী নামে পরিচিত। প্রতিবছর অনুব্রত মণ্ডল নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো সামলান। রাজগ্রাম থেকে নানুর, লাভপুর এবং অন্যান্য একাধিক প্রান্ত থেকে মানুষ পুজো দেখতে আসতেন। তবে এ বছর অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে আনন্দ কিংবা পুজোর প্রাণ কোনটাই নাই। তবে মায়ের পূজো কখনোই থেমে থাকবে না। যতটা নিষ্ঠা ভাবে পুজোর আয়োজন করা যায়, ঠিক সেভাবেই করেছি। এবারে আমাদের মন ভালো নেই, তবে পুজো আয়োজনের জন্য সব রকম প্রচেষ্টা করেছি।”
অনুব্রত মণ্ডল আয়োজিত কালীপ্রতিমা অলংকার
অনুব্রত মণ্ডলের দ্বারা আয়োজিত কালীপুজোর ক্ষেত্রে যেদিকে মানুষের সর্বপ্রথম নজর যায়, তা হল মা কালীর গায়ের ‘অলংকার’। প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যক অলংকারে মাকে ঢেকে দেন তৃণমূল নেতা। নিজের হাতে মাকে অলংকার দিয়ে পরিসজ্জিত করার পাশাপাশি সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানে নজর থাকে তাঁর। এক্ষেত্রে ২০১৯ এবং ২০২০ সালে মা ও স্ত্রী মারা যাওয়ায় নিজের হাতে সাজাতে পারেননি মাকে। তবে তা সত্ত্বেও ২০২০-এ কালী প্রতিমাকে ৩৬০ থেকে ৩৭০ ভরি অলংকারে ভরিয়ে দেন অনুব্রত। এর ঠিক পরের বছরে সেই পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় দ্বিগুনে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে মা কালীর অলংকারের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫৬০ থেকে ৫৭০ ভরি, যার মূল্য বর্তমানে তিন কোটি টাকারও বেশি।