বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ইয়াসের দাপুটে ঘূর্ণিতে এই মুহূর্তে বিধ্বস্ত বাংলা। দুই ২৪ পরগনা ও মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রীতিমতো সমস্যায় দিন কাটাচ্ছে রাজ্যবাসী। ভেঙে গিয়েছে একের পর এক নদী বাঁধ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক লক্ষ ঘরবাড়ি। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষকে। এরই মধ্যে আজ ঝড় বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হিঙ্গলগঞ্জ থেকেই দুয়ারে সরকারের আদলে দুয়ারে ত্রাণের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান দুয়ারে সরকারের আদলেই মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ত্রাণ পৌঁছে দেবে রাজ্য সরকার। কোন ক্ষেত্রে কিভাবে ত্রাণ দেওয়া হবে সে কথাও ঘোষণা করেন তিনি।
ত্রাণ নিয়ে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষেরঃ
এরপরেই আজ এই প্রকল্পকে আক্রমণ করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সাংবাদিকদের দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “যাদের দুয়ার নাই ঘর ভেঙে গেছে তাদের কি হবে? রাজ্য সরকার যদি বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয় তাহলে তো খুব ভালো কথা। কিন্তু হয় না তো, সেখানেও তো স্বজনপোষণ হচ্ছে। সেদিন লোকেদেরকে আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে, বিজেপির লোকেদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি স্কুলে। আমাদের আলাদা ব্যবস্থা করতে হয়েছে। সরকারি ত্রাণ যাচ্ছে সেটাও রাজনৈতিক রঙ দেখে দেওয়া হচ্ছে।” তিনি জানান তার আবেদন এই সময়ে সরকার সকলকে সমান চোখে দেখুক।
পাল্টা জবাব দিলেন পুলক রায়ঃ
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগেই মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ত্রানের ক্ষেত্রে কারো কথা শোনা হবেনা। নিজের আবেদন প্রত্যেকেই নিজে করতে পারবেন। কিন্তু সে নিয়েও এদিন কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি। সেই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে এদিন মুখ খোলেন তৃণমূলের কারিগরি তথা জনস্বাস্থ্য মন্ত্রী পুলক রায়। তিনি বলেন, “দিলীপবাবু অভিযোগ করার জন্য অভিযোগ করছেন। তারা শুধু খবরে আছে মানুষের পাশে নেই। আজকে ঘূর্ণিঝড় এবং কোটাল চলে যাওয়ার পর তাঁরা অভিযোগ করছেন। রাজ্য সরকার স্বচ্ছতার সঙ্গে দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে। কোনও দুর্নীতি হবে না।”
রাজীব শুভেন্দুকে নিয়ে সরকারকে কটাক্ষ দিলীপেরঃ
গতকাল সেচবিভাগ নিয়েও যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক বছরের মধ্যেই বিদ্যাধরীর ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় তিনি বলেন, কি করে এক বছরের মধ্যে কংক্রিটের ব্রিজ ভেঙে যায়? এনিয়ে অর্থ দপ্তরকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০২০ সালের নভেম্বরে মন্ত্রিত্ব পদ ছাড়ার আগে অব্দি শেষ মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই আমফানের পর কাজ না হওয়ার সম্পূর্ণ বর্তায় তার কাঁধেই। তার সেচ মন্ত্রী ছিলেন, আরেক দলের ত্যাগী নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল বৈঠকে তাই দুজনেই ছিলেন মমতার নিশানায়। যদিও কারণ নাম সেভাবে উল্লেখ করেননি তিনি। কিন্তু আজ এরও জবাব দেন দিলীপ ঘোষ। তার মতে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সেচ মন্ত্রী থাকাকালীন বাঁধ মেরামতের কাজে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। তিনি তো ভালো কাজ করেছিলেন তবে তাকে কেন বনদপ্তরের সরিয়ে দেওয়া হলো। সব মিলিয়ে একদিকে যখন ইয়াসে বিধ্বস্ত বাংলা তখনই অন্যদিকে বদ বিবাদে যথেষ্ট সরগরম রাজ্য রাজনীতিও।