বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নির্বাচনের হারের দায় যে দলের রাজ্য সভাপতির উপরেই পড়বে সেটা বলাই বাহুল্য। এ যাত্রায়ও ঠিক তেমনই হয়েছে। বঙ্গে ২০০ আসন নিয়ে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখা বিজেপি যখন মাত্র ৭৭ আসনে আটকে যায়, তখনই বিজেপির কর্মীদের নজর যায় রাজ্যের সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) উপর। তাঁরা দিলীপ ঘোষের উপরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। একাংশ দিলীপ ঘোষের উস্কানিমূলক মন্তব্যকেই হারের প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরেন। আবার অনেকে এটাও বলেন যে, উনি শুধু এসি ঘরে বসে ডায়লগ দেওয়ার নেতা।
এরপর বিজেপিতে যখন ভাঙন শুরু হয়, একের পর এক দলবদলুরা যখন বিজেপির হারের পর বেসুরো হয়ে ওঠেন। তখনও বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা দিলীপ ঘোষের উপর দায় চাপান। তাঁদের মতে, দলটা ভালই ছিল কিন্তু তৃণমূল ভাঙিয়ে দল ভরাট করতে গিয়েই দলের ব্যালেন্স হারিয়ে যায়। আর বাংলার মানুষ এই দলবদলের খেলা ভালো ভাবে নেয়নি। আর এই কারণেও বাংলায় বিজেপির হার হয়েছে।
এছাড়াও বিজেপিতে লবি বাজিরও অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিজেপির নেতা অনুপম হাজরা নিজে এই লবি বাজির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। অনেক বিজেপির নেতাদের মতে মুকুল রায়ের দলত্যাগের পিছনে দিলীপ ঘোষের একরোখা মনোভাব কাজ করেছে। নির্বাচনের বহু আগে থেকেই মুকুল আর দিলীপের মধ্যে কলহ চলছিল বলে সূত্রের খবর। নির্বাচনে মুকুল রায়কে বঞ্চিত করে রাখার পিছনেও দিলীপ ঘোষের হাত আছে বলে অভিযোগ বিজেপির একাংশের. আর এসব কারণেই জন্য অনেকেই দিলীপ ঘোষের অপসারণ চাইছেন।
তবে, বিজেপির নিয়ম মাফিক কেউ অপসারণ চাইলেও কি আর না চাইলেও কি, দিলীপবাবুকে এবার রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরতে হবে। দিলীপ ঘোষ টানা দু’বার বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদে রয়েছেন। বিজেপি পার্টির সংবিধান অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি দু’বারের বেশী একই পদে থাকতে পারবেন না। আর সেই কারণে এবার দিলীপ ঘোষের পদ যাওয়া নিশ্চিত। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রাজ্যে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবে বলে সূত্রের খবর।
তবে কেন্দ্রের তরফ থেকে দিলীপ ঘোষের জন্য ভালো কিছু ভেবে রেখেছে। জানা গিয়েছে যে, দিলীপ ঘোষকে এবার মোদী সরকারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে দলের সদস্য এবং আরএসএস ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদেই মোদী সরকার ওনাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করে পুরস্কৃত করতে চলেছে। তবে শুধু দিলীপ ঘোষই নন, এবার রাজ্যের একগাদা সাংসদ মোদী ক্যাবিনেটে জায়গা করে নিতে পারেন।