বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ ক্রিকেট ক্রমশই একটি খেলা হিসেবে সংক্ষিপ্ত হয়ে আসছে। একসময় টেস্ট ক্রিকেট ছাড়া অন্য কোনও ফরম্যাটের ব্যাপারে ধারণাই ছিল না ক্রিকেট বিশ্বের। কিন্তু বর্তমানে টি-টেন ক্রিকেটও গোটা বিশ্ব জুড়ে যথেষ্ট জনপ্রিয়। অর্থাৎ বর্তমান যুগের ক্রিকেটের মূল সাফল্যের রহস্য একটাই, যাকে ইংরেজিতে বলা হয়ে থাকে “ইনস্ট্যান্ট ইম্প্যাক্ট”। আজ ভারতীয় ক্রিকেট দলের এমনই এক ক্রিকেটারের কথা বলব যিনি সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে এই ইম্প্যাক্টের দৌলতে যেতে ছিলেন ম্যাচের সেরা পুরস্কার।
এখানে যে ক্রিকেটারের নাম আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি তিনি নিজের আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটিয়েছিলেন ২০০৪ সালে। ইংল্যান্ডে লর্ডসে একটি ওডিআই ম্যাচের মধ্যে দিয়ে প্রথমবার ভারতের জার্সির গায়ে চাপিয়ে সিনিয়র ক্রিকেট দলের সঙ্গে খেলার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো ক্রিকেটারের উত্থান হওয়ায় তার ক্রিকেট কেরিয়ার অন্তত জাতীয় দলের হয়ে কোনওদিনই ধারাবাহিক ছিল না।
এতক্ষণে হয়তো অনেকেই বুঝতে পেরে গিয়েছেন যে এই প্রতিবেদন দীনেশ কার্তিকের কথা আলোচনা করা হবে। একসময় অনেক আশা জাগিয়ে ভারতীয় দলে আসা এই তারকা ২০২২ সালেও ভারতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের অংশ ছিলেন। তবে তার কেরিয়ার যতটা সুন্দর হতে পারতো ততটা সুন্দর হয়নি।
তবে আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয় হলো ২০০৮ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আয়োজিত নিহাদাস ট্রফির ফাইনালে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। বাংলাদেশে কোন টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জেতার অত্যন্ত কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল সেই বার। কিন্তু মাঠে নেমে ব্যাট হাতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের হাত থেকে সেই ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন কার্তিক।
প্রথমে ব্যাটিং করে ওই ম্যাচে সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজের দাপটে বাংলাদেশ ১৬৭ রানের টার্গেট রেখেছিল ভারতের সামনে। ভারতের হয়ে ওপেন করে রোহিত শর্মা সেই ম্যাচে ৫৬ রান করলেও ভারত এক সময় রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিল। ম্যাচের শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান। এমন সময় দীনেশ কার্তিক ব্যাট করতে নেমে ধ্বংস করে দেন বাংলাদেশের বোলিংকে। শেষ বলে জয়ের জন্য পাঁচ রান প্রয়োজন এমন অবস্থায় সৌম্য সরকারের ডেলিভারিতে ছক্কা মেরে ভারতকে ম্যাচ জেতান তিনি।
দীনেশ কার্তিক অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ২৯ রান করে। তিনি জিতে ছিলেন ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কারও। শুধুমাত্র ব্যাটিং করে এত কম বল খেলে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে ম্যাচের সেরা হওয়ার রেকর্ড নেই আর কোনও খেলোয়াড়ের। দীনেশ কার্তিক হয়তো ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে খুব বেশি সফল নন। কিন্তু এই ম্যাচটার জন্য তিনি ভারতীয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন।