বাংলা হান্ট ডেস্ক: দেশের বিমানযাত্রীদের স্বস্তি দিতে বড় পদক্ষেপ নিল ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (Directorate General of Civil Aviation)। সম্প্রতি বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে রিফান্ড সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ জমা পড়ছিল। টিকিট বাতিলের পর টাকা ফেরত দিতে দেরি, কোনও কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত চার্জ কাটা, কিংবা টাকা ফেরত না দিয়ে এয়ারলাইন্সের নিজস্ব ওয়ালেটে সেই অর্থ আটকে রাখা— এসব সমস্যায় নাজেহাল ছিলেন যাত্রীরা। অবশেষে সেই ক্ষোভের মুখে DGCA নতুন খসড়া নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে, যাতে যাত্রীদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে একাধিক প্রস্তাব আনা হয়েছে।
বিমানের টিকিট বাতিল নিয়ে নতুন নিয়ম DGCA (Directorate General of Civil Aviation)-র
DGCA (Directorate General of Civil Aviation)-র এই নতুন প্রস্তাবের মূল লক্ষ্য হল বিমান টিকিট রিফান্ডের ক্ষেত্রে একটি সর্বজনগ্রাহ্য মানদণ্ড স্থির করা। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সাধারণ মানুষ এই প্রস্তাব নিয়ে নিজের মতামত জানাতে পারবেন। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, টিকিট বুক করার পর যাত্রীদের হাতে থাকবে ৪৮ ঘণ্টা বা দুই দিন। এই সময়ের মধ্যে টিকিট বাতিল বা সংশোধন করলে কোনও অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে না। এই সুবিধাটি ‘লুক-ইন অপশন’ নামে পরিচিত। তবে শর্ত হল, ঘরোয়া ফ্লাইটের ক্ষেত্রে যাত্রার কমপক্ষে ৫ দিন আগে এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ১৫ দিন আগে টিকিট বুক করতে হবে, তাহলেই এই সুবিধা প্রযোজ্য হবে।
আরও পড়ুন:ফের বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে PoK! শাহবাজ সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে পথে নামল Gen-Z
ট্র্যাভেল এজেন্ট বা অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে বুক করা টিকিটের ক্ষেত্রেও রিফান্ডের দায়িত্ব সরাসরি এয়ারলাইন্সের উপর থাকবে। DGCA (Directorate General of Civil Aviation) স্পষ্ট জানিয়েছে, এজেন্টরা এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধি, তাই রিফান্ডের পুরো প্রক্রিয়া ২১ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে। আবার ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করা হলে সাত দিনের মধ্যেই টাকা ফেরত দিতে হবে। নতুন নির্দেশিকায় নামের বানান সংশোধন নিয়েও স্পষ্ট নিয়ম আনা হয়েছে। যদি টিকিট কেনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রী নিজের নামের ভুল সংশোধন করেন, তাহলে কোনও অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া যাবে না। তবে এই সুবিধা কেবল এয়ারলাইন্সের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে বুক করা টিকিটের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
যাত্রীরা যদি ৪৮ ঘণ্টার ‘লুক-ইন উইন্ডো’ মিস করেন, তবে ক্যানসেলেশন চার্জ প্রযোজ্য হবে। তবে সেই চার্জ কোনওভাবেই বেসিক ফেয়ার এবং ফুয়েল সারচার্জের পরিমাণ অতিক্রম করতে পারবে না। একইসঙ্গে DGCA (Directorate General of Civil Aviation) জানিয়েছে, যাত্রী যদি ‘নো-শো’ হন বা টিকিট ব্যবহার না করেন, তাহলেও বিমানবন্দর ফি এবং সমস্ত প্রযোজ্য ট্যাক্স ফেরত দিতে হবে।

আরও পড়ুন:মামদানির জয়ে মন খারাপ ট্রাম্পের! আক্ষেপের সুরে জানালেন “সার্বভৌমত্ব হারালাম”
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে ওয়ালেট রিফান্ডের ক্ষেত্রে। কোনও যাত্রীর অনুমতি ছাড়া এয়ারলাইন্স টাকাকে তাদের ওয়ালেটে স্থানান্তর করতে পারবে না। টাকা ফেরত দেওয়ার মাধ্যম বেছে নেওয়ার অধিকার পুরোপুরি যাত্রীর হাতে থাকবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, DGCA (Directorate General of Civil Aviation)-র এই পদক্ষেপ যাত্রীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনবে এবং এয়ারলাইন্সগুলির অস্বচ্ছতা কমাবে। বিশেষত মধ্যবিত্ত শ্রেণির যাত্রীরা, যারা প্রায়শই শেষ মুহূর্তের পরিবর্তন বা বাতিলের ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন এই নতুন নিয়ম কার্যকর হলে। DGCA-র এই সিদ্ধান্ত যাত্রী সুরক্ষায় এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে ধরা হচ্ছে।













