ভিক্ষার টাকা জমিয়ে মোপেড কেনেন প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক! সেই গাড়িতে চেপেই স্ত্রীকে নিয়ে করছেন ভিক্ষা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায়, এক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক ভিক্ষার টাকা জমিয়ে একটি মোপেড কিনেছেন। মূলত, তিনি প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাঁর স্ত্রীকে এতদিন তাঁর ট্রাইসাইকেল ঠেলে দিতে হত। কিন্তু, এখন দু’জনেই এই মোপেডে চেপে ভিক্ষা করতে যান। এদিকে, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ওই ভিক্ষুক দম্পতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন।

বাসস্ট্যান্ডে ভিক্ষা করেন স্বামী-স্ত্রী:
এই প্রসঙ্গে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে যে, সন্তোষ কুমার সাহু এবং তাঁর স্ত্রী মুন্নি মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা জেলার অমরওয়াড়ার বাসিন্দা। সন্তোষ মূলত, দুই পায়েই হাঁটতে পারেন না। এমতাবস্থায়, কোনো কাজ করাও তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিলনা। তাই, স্বামী-স্ত্রী ছিন্দওয়াড়া বাসস্ট্যান্ডে প্রতিদিন ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

সন্তোষের একটা ট্রাইসাইকেল ছিল। সেটার সাহায্যেই তিনি বিভিন্ন জায়গায় যেতে পারতেন। যদিও, তাতে একটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হত তাঁকে। প্রায়শই রাস্তা খারাপ থাকলে তাঁর স্ত্রীকে ঠেলে দিতে হত সেই সাইকেলটি। আর যে কারণে সমস্যায় পড়তে হত ওই দু’জনকে। পাশাপাশি, মুন্নির শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় তিনি এই কাজ করতেও পারতেন না।

এভাবেই জমেছে গাড়ি কেনার টাকা:
এই প্রসঙ্গে সন্তোষ জানিয়েছেন, “মুন্নির স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। তার চিকিৎসায় ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এরপর ট্রাইসাইকেল ঠেলে দেওয়াটা মুন্নির পক্ষে যথেষ্ট কষ্টের ছিল।” এমতাবস্থায়, সন্তোষ ঠিক করেন যে, তিনি যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি মোপেড কিনবেন। তারপর সেই উদ্দেশ্যেই টাকা জমা করতে শুরু করেন তাঁরা।

WhatsApp Image 2022 05 23 at 3.26.25 PM

সন্তোষ জানিয়েছেন, প্রতিদিন ভিক্ষার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পাওয়া যেত। এছাড়া দু’বেলার খাবারও মিলে যেত। তাই, গাড়ি কেনার লক্ষ্যে তিনি এই টাকা সঞ্চয় করতে শুরু করেন। আর এভাবেই ধীরে ধীরে তিনি ৯০ হাজার টাকা জমিয়ে ফেলেছিলেন। আপাতত, সেই টাকা দিয়েই একটি মোপেড কিনেছেন তিনি। এমতাবস্থায়, মুন্নির পরিশ্রমের পাশাপাশি, তাঁর নিজের যাতায়াতের ক্ষেত্রেও অনেক সুবিধে হয়েছে। এখন স্বামী-স্ত্রী এই গাড়ি নিয়েই ভিক্ষা করতে যান।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর