৫০ শতাংশের শুল্কের কারণেই ভারতের সঙ্গে প্রভাবিত হয়েছে সম্পর্ক! অবশেষে স্বীকার করলেন ট্রাম্প

Published on:

Published on:

Donald Trump admit that extra tariff has affected relation with India.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই স্বীকার করে নিলেন যে শুল্কের জেরে ভারতের (India) সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার (Russia) কাছ থেকে তেল আমদানি করার কারণে ভারতের উপরে তিনি ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, “ভারত রাশিয়ার অন্যতম বড় গ্রাহক ছিল। তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা সহজ কাজ ছিল না, কিন্তু আমি করেছি। মনে রাখবেন, এই সমস্যা শুধু আমেরিকার নয়, ইউরোপের জন্যও গুরুতর।”

ভারত নিয়ে ট্রাম্পের স্বীকারোক্তি (India)

ট্রাম্পের এই মন্তব্যে স্পষ্ট, রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়টি নিয়ে আমেরিকা-ভারত সম্পর্ক ঘোর সংকটে। যদিও একই সময়ে ট্রাম্প প্রশাসনের মনোনীত ভারতে (India) আমেরিকার হবু রাষ্ট্রদূত সার্জিও গোর জানিয়েছেন, তাঁর দেশ চাইছে ভারত রাশিয়ার পরিবর্তে আমেরিকা থেকেই তেল ও ক্রুড পণ্য আমদানি করুক। তিনি আরও বলেন, “ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা চলছে। আমাদের বাজার খোলা, ভারতও সেই সুযোগ নিক।”

আরও পড়ুন: জলে ডুবেই কি মৃত্যু? প্রকাশ্যে অনামিকার মৃত্যুর ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট

প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরেই ভারতের (India) উপরে দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করে এসেছে ট্রাম্প প্রশাসন। আগে যেখানে শুল্ক ছিল ২৫ শতাংশ, তা একলাফে বেড়ে হয়েছে ৫০ শতাংশ। ট্রাম্পের দাবি ছিল, ভারতের রাশিয়া-নির্ভরতা কমাতে এই চাপ প্রয়োজন। তবে নয়াদিল্লি এই পদক্ষেপের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভারতের তরফে বলা হয়েছে, এ ধরনের পদক্ষেপ অনৈতিক এবং তা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষতি করছে।

অন্যদিকে, সম্প্রতি রাশিয়া ও চিন ভারতের (India) সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার বার্তা দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই অবস্থায় ট্রাম্প কিছুটা নরম সুরে ফের বন্ধুত্বের কথা বলছেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে একাধিক মঞ্চে তিনি ভারতকে “বিশ্বস্ত বন্ধু” বলে উল্লেখ করেছেন।

তবে শুল্ক ইস্যু ছাড়াও ট্রাম্প সাক্ষাৎকারে ফের একবার দাবি করেছেন, তিনি নাকি বিশ্বের একাধিক বড় যুদ্ধ থামিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি সাতটা যুদ্ধ বন্ধ করেছি। ভারত (India) ও পাকিস্তানের যুদ্ধও থামিয়েছি। কঙ্গো ও রোয়ান্ডার মধ্যে যে যুদ্ধ ৩১ বছর ধরে চলছিল, যেখানে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, আমি সেটাও শেষ করেছি। যা কেউ করতে পারেনি।”

Donald Trump admit that extra tariff has affected relation with India.

আরও পড়ুন:- “আমরা যেকোনও দলকে….”, নড়বড়ে ব্যাটিং সত্ত্বেও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে হুমকি পাক অধিনায়কের

আন্তর্জাতিক মহল যদিও ট্রাম্পের এই দাবিকে অতিরঞ্জিত বলেই মনে করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত (India) ও পাকিস্তান সীমান্তের উত্তেজনা সাময়িকভাবে প্রশমিত হলেও, স্থায়ী সমাধান হয়নি। তবু ট্রাম্প নিজের ভূমিকা নিয়ে বারবার জোর দিচ্ছেন। ফলে শুল্ক, রাশিয়ার তেল আমদানি এবং যুদ্ধ থামানোর এই দাবিগুলি ঘিরে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে স্পষ্ট, দুই দেশের সম্পর্ক আপাতত টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে গেলেও, বন্ধুত্বের বার্তায় জোর দিচ্ছেন উভয় পক্ষই। মার্কিন প্রশাসন চাইছে বাণিজ্যিক চাপের মাধ্যমে ভারতকে  (India) রাশিয়া থেকে দূরে সরিয়ে আনতে, আর ভারত চাইছে জাতীয় স্বার্থে নিজেদের সিদ্ধান্ত বজায় রাখতে। এখন দেখার বিষয়, আলোচনার টেবিলে কতদূর সমঝোতায় পৌঁছতে পারেন মোদী ও ট্রাম্প।