ভারতের বিরুদ্ধে করা “ষড়যন্ত্রে” নিজেই ফাঁসলেন ট্রাম্প! মিলল চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট, নয়া সঙ্কট আমেরিকায়

Published on:

Published on:

Trump himself gets caught up in a

বাংলা হান্ট ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও তাঁর কড়া মনোভাব প্রদর্শন করেছেন। তিনি বিশ্বের একাধিক দেশ থেকে ওষুধ আমদানির ওপর কর বা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। ট্রাম্প চান আমেরিকা এখন দেশের প্রয়োজনীয় ওষুধ নিজেই তৈরি করুক। মূলত, ট্রাম্প ভারত (India) এবং চিনকে এক্ষেত্রে বিশেষভাবে “টার্গেট” করছেন। কারণ এই ২ টি দেশই আমেরিকার ওষুধের সাপ্লাই চেনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, তাঁর সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকায় দেশীয় ওষুধ উৎপাদনের উপর আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার হবে। কিন্তু, এই আবহে এমন একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে যেটি থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে ভারতকে ঝামেলায় ফেলতে গিয়ে আমেরিকা এখন নিজেই ফাঁদে পড়েছে।

ভারতের (India) বিরুদ্ধে করা “ষড়যন্ত্রে” নিজেই ফাঁসলেন ট্রাম্প:

বড় কোম্পানিগুলি বিশাল বিনিয়োগ করছে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ট্রাম্পের হুমকির পর, বড় ওষুধ কোম্পানিগুলি আমেরিকায় তাদের কারখানা সম্প্রসারণের কথা ভাবছে। CNN-এর এক রিপোর্ট অনুসারে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা আমেরিকায় ৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এদিকে, জনসন অ্যান্ড জনসন ৫৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। অপরদিকে, এলি লিলি ২৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। সামগ্রিকভাবে, ওষুধ কোম্পানিগুলি আমেরিকায় প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, দেশের নিরাপত্তা এবং ওষুধের দাম কমানোর জন্য এই পদক্ষেপগুলি প্রয়োজনীয়। কিন্তু রিপোর্ট অনুসারে, এত কিছু করার পরেও সেদেশে ওষুধের দাম কমছে না।

আমেরিকা কি সত্যিই “আত্মনির্ভর” হতে পারবে: বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে বিষয়টা খুব একটা সহজ নয়। শুধুমাত্র কারখানাই ওষুধ তৈরির জন্য যথেষ্ট নয়, বরং এতে ব্যবহৃত কাঁচামাল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে, আমেরিকা এখনও বিদেশ থেকে এই কাঁচামাল আমদানি করে। এর মানে হল, আমেরিকা যদি সেখানে ওষুধ তৈরি করে, তবুও তাকে ভারত (India), চিন বা অন্যান্য দেশ থেকে কাঁচামাল কিনতে হবে। তা ছাড়া, আমেরিকায় ওষুধ তৈরি করা সস্তাও নয়। শ্রম থেকে শুরু করে যন্ত্রপাতি এবং বিদ্যুৎ, সবকিছুরই দাম সেখানে বেশি। তার মানে ওষুধ আমেরিকায় তৈরি হলেও, সাধারণ মানুষের পকেটের ওপর আরও চাপ বাড়বে।

Trump himself gets caught up in a

কোম্পানিগুলি জেনেরিক ওষুধ তৈরি করতে চায় না: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কিছু কোম্পানি আমেরিকায় জেনেরিক ওষুধ তৈরির কথা বলেছে। কিন্তু বেশিরভাগ কোম্পানিই তা থেকে দূরে রয়েছে। এর কারণ হল জেনেরিক ওষুধের ওপর লাভ খুবই কম। এমতাবস্থায় কোম্পানিগুলি আশঙ্কা করছে যে আমেরিকায় কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে তাদের ক্ষতি হবে এবং তারা এই ক্ষতি বহন করতে পারবে না। জানিয়ে রাখি যে, বর্তমানে আমেরিকার চিকিৎসকরা যে ওষুধগুলি লিখে দেন, এর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ জেনেরিক এবং এর বেশিরভাগই আসে বিদেশ থেকে। বিশেষ করে ভারত (India) থেকে এগুলি আমেরিকায় যায়।

আরও পড়ুন: Fixed Deposit-এ সর্বোচ্চ রিটার্ন পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ! এই ৬ টি ব্যাঙ্কে মিলছে দুর্দান্ত সুদ

খরচের কারণে স্থানীয় উৎপাদন সহজ নয়: বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন যে, আমেরিকাকে যদি ওষুধের সেক্টরে “আত্মনির্ভর” হতে হয়, সেক্ষেত্রে সরকারকে বিশাল আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। অন্যথায়, কোম্পানিগুলি আমেরিকায় বিনিয়োগ করতে দ্বিধাবোধ করবে। এদিকে, ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি ওষুধের ওপর ২০০ শতাংশ কর আরোপ করতে পারেন। তবে কোম্পানিগুলিকে তা করার আগে প্রস্তুতির জন্য এক বছর সময় দেবেন।

আরও পড়ুন: খরচ হবে ১,১৩৭ কোটি টাকা…. এই দেশকে সাহায্য করতে চলেছেন সচিন-কন্যা সারা তেন্ডুলকার

তবুও, বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেন যে, নতুন কারখানা তৈরি এবং চালু হতে কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ বছর সময় লাগবে। এছাড়াও, আমেরিকায় ওষুধ তৈরির খরচ বেশি হবে। যার কারণে ওষুধ সস্তা হবে না। তাছাড়া, যদি কাঁচামাল আমদানি করতে হয়, তাই তার ওপরেও কর আরোপ করা হবে। যার অর্থ সামগ্রিকভাবে এটি সাধারণ মানুষের পকেটে প্রভাব ফেলবে। এর পাশাপাশি, অনেক ওষুধ কোম্পানির দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সোজা কথায় বলতে গেলে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা কেবল শুনতে ভালো লাগতে পারে, কিন্তু, বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত কঠিন।