বাংলাহান্ট ডেস্ক: আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) ফের দাবি করলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ হয়েছিল তাঁর হস্তক্ষেপেই। বুধবার মায়ামিতে আমেরিকা বিজ়নেস ফোরামের মঞ্চে ট্রাম্প বলেন, তাঁর কূটনৈতিক চাপ ও বাণিজ্যচুক্তি স্থগিত রাখার হুঁশিয়ারির কারণেই দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ যুদ্ধ থেকে সরে আসে। তবে এবার তিনি আগের বক্তব্যের কিছুটা সংশোধন করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘সাত নয়, আটটি বিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। একটি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’’
ভারত-পাক যুদ্ধবিরতি নিয়ে ফের নতুন মন্তব্য ট্রাম্পের (Donald Trump)
ট্রাম্প (Donald Trump) বলেন, “সেই সময় আমি ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় দেখলাম, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ লেগে গেছে! আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম, তোমরা যদি সংঘর্ষবিরতিতে রাজি না হও, আমি তোমাদের সঙ্গে কোনও বাণিজ্যচুক্তি করব না।’’ তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, এই হুঁশিয়ারির পরেই দিল্লি ও ইসলামাবাদ যুদ্ধ থামানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
আরও পড়ুন :ব্যর্থতা ছিল সঙ্গী, তবু থামেননি ভারত — ঘরের ভাড়া কম্পিউটারের সাহায্যেই গড়লেন কোটি টাকার ব্যবসা
ট্রাম্পের (Donald Trump) দাবি, প্রথমে দুই দেশই তাঁর সতর্কবার্তা গুরুত্ব দেয়নি। তিনি বলেন, “তারা জানায়, যুদ্ধ আর বাণিজ্যের মধ্যে কোনও যোগ নেই। আমি বলেছিলাম, অবশ্যই আছে। তোমরা দু’জনেই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। তোমরা যদি যুদ্ধে জড়াও, আমেরিকা তোমাদের সঙ্গে কোনও বাণিজ্য করবে না।” পরদিনই নাকি ফোনে তিনি খবর পান, ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে। ট্রাম্পের ভাষায়, “আমি তখন বলেছিলাম, ধন্যবাদ! এবার চল, বাণিজ্যচুক্তিটা সেরে ফেলি!”
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের (Donald Trump) এই দাবি নতুন নয়। এর আগেও একাধিকবার তিনি বলেছেন, ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, তখন তিনিই পরিস্থিতি সামলেছিলেন। যদিও ভারত সব সময়ই তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ অস্বীকার করেছে। নয়াদিল্লির মতে, ভারত-পাক সম্পর্ক সম্পূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বিষয়, তাতে অন্য কোনও দেশের ভূমিকা নেই। অন্যদিকে, ইসলামাবাদ একাধিকবার আমেরিকাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। পাকিস্তান সরকার দাবি করেছে, ওয়াশিংটনের তৎপরতাতেই সীমান্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

আরও পড়ুন:SIR আবহে হারিয়ে গিয়েছে আধার-ভোটার কার্ড? আতঙ্কিত না হয়ে জানুন কী করবেন
প্রসঙ্গত, বিমান ধ্বংসের সংখ্যাতেও ট্রাম্পের (Donald Trump )বক্তব্য বারবার বদলেছে। জুলাই মাসে তিনি বলেছিলেন, পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। অক্টোবরে সেই সংখ্যা বেড়ে হয় সাত। এবার নতুন দাবি, “আসলে আটটি বিমানই গুলি করে নামানো হয়েছিল।” যদিও কোন দেশের বিমান সেই তালিকায় ছিল, তা এবারও স্পষ্ট করে জানাননি ট্রাম্প।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের (Donald Trump) এই বক্তব্যের রাজনৈতিক তাৎপর্যও আছে। আমেরিকার নির্বাচনী আবহে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের কূটনৈতিক সাফল্য তুলে ধরতে চাইছেন তিনি। তবে তাঁর এই দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। ভারতীয় কূটনৈতিক মহল বলছে, “যুদ্ধ থামানো বা সংঘর্ষবিরতির কৃতিত্ব আমেরিকার নয়, বরং তা হয়েছিল উভয় দেশের কূটনৈতিক এবং সামরিক সংযমের ফলেই।”













