বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিস্ফোরক ডোনাল্ড ট্রাম্প। নাৎসিদের (Nazi) ইহুদি গণহত্যার কথা গোটা বিশ্ব জানে। এই ‘হলোকাস্ট’ (The Holocaust) বা গণহত্যার জন্য একাধিকবার ক্ষমাও চেয়েছে জার্মানি (Germany)। কিন্তু বাংলাদেশে (Bangladesh), তৎকালীন, পূর্ব-পাকিস্তান, খান সেনার হাতে হিন্দুদের গণহত্যার সেই ভাবে কোনও প্রচার নেই। নিজের কুকর্মের কখনও ক্ষমা চায়নি পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে হিন্দুহত্যার স্মৃতিতে ওয়াশিংটনে সৌধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। আর এই প্রতিশ্রুতিতে সাম্প্রদায়িকতার ছায়া খুঁজছে ভারতের বিরোধী দলগুলি। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্পের নীতিতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) ছাপ রয়েছে!
গত শুক্রবার দিওয়ালি উপলক্ষে ফ্লোরিডায় তাঁর রিসর্ট মার-এ-লাগোতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন প্রাক্তন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ‘রিপাবলিকান হিন্দু কোলিশন’-এর প্রায় ২০০ জন সদস্য। ওই অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন যে ২০২৪-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি জয়ী হলে ওয়াশিংটনের বুকে হিন্দু গণহত্যার স্মৃতিতে একটি সৌধ তৈরি করবেন তিনি। এছাড়া, হিন্দু কোলিশনের প্রতিষ্ঠাতা শলভ কুমারকে ভারতে রাষ্ট্রদূত হিসেবেও নিযুক্ত করবেন তিনি। বলে রাখা ভাল, রিপাবলিকান পার্টির সমর্থক ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দু-আমেরিকানদের নিয়ে ২০১৫ সালে তৈরি হয় ‘রিপাবলিকান হিন্দু কোলিশন’। আমেরিকার রাজনীতিতে তাদের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে জানা যায়। তাই আমেরিকার হিন্দু সমাজের ভোটকে নিজের দিকে টানতে চাইছেন ট্রাম্প। এমনই মনে করে ওয়াকিবহাল মহল।
মঙ্গলবার মার-এ-লাগোতে হওয়া অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও প্রকাশ করে হিন্দু কোলিশন। সেখানে দেখা যায় ট্রাম্প (Donald Trump) বলছেন, ‘হিন্দুরা আমাদের সমর্থন করেছেন। ২০১৬ ও ২০২০ সালেও ভারত এবং ভারতীয়দের সমর্থন পেয়েছি আমরা। তাই আমি ওয়াশিংটন ডিসিতে হিন্দুহত্যার স্মৃতিতে ওয়াশিংটনে সৌধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’ ট্রাম্পের দাবি, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিন্দুদের সমর্থনেই তাঁর দল জয়ী হয়। ২০২৪ সালে ক্ষমতায় ফিরলে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের পাশে দাঁড়াবেন তিনি।
তবে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে ভারতে। ট্রাম্পের এই প্রস্তাবে সাম্প্রদায়িকতার ছায়া খুঁজছে ভারতের বিরোধী দলগুলি। তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, ট্রাম্প নাকি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) নীতি মেনে চলছেন! ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা জিশান রানা বলেন, ‘আমি ট্রাম্পকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে ভারত কেবল হিন্দুদের নয়। বৈচিত্রই এই দেশের পরিচয়। তাঁর এই রকম মন্তব্য সেই পরিচয়েই আঘাত করছে। এই দেশের জন্য মুসলমান ও শিখরাও আত্মত্যাগ করেছে। এক্ষেত্রে আরএসএসয়ের কথা কিন্তু বলা যায় না।’ জনতা দল (ইউনাইটেড) নেতা জিএম শাহীনের বলেন, ‘ট্রাম্প যদি সৌধ নির্মাণ করেন তবে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ হবে।’ বিজেপি মুখপাত্র আলতাফ ঠাকুরের আবার দাবি, ‘ট্রাম্পের এই ঘোষণার কৃতিত্ব কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।’