মামদানির জয়ে মন খারাপ ট্রাম্পের! আক্ষেপের সুরে জানালেন “সার্বভৌমত্ব হারালাম”

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: নিউ ইয়র্কের নতুন মেয়র নিয়ে ‘অখুশি’ ট্রাম্প (Donald Trump)! নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ডেমোক্র্যাট নেতা জোহরান মামদানি। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে তিনি লিখে ফেললেন ইতিহাস—নিউ ইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে। সোমবার স্থানীয় সময় গভীর রাতে প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, বিপুল ভোটে রিপাবলিকান প্রার্থীকে পরাজিত করেছেন মামদানি। তাঁর জয়ের পরেই আমেরিকার রাজনীতিতে নেমে এসেছে নতুন আলোড়ন। তবে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তেও শোনা গেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কণ্ঠে আক্ষেপের সুর।

নতুন মেয়র নির্বাচন নিয়ে কি বললেন ট্রাম্প (Donald Trump)?

মায়ামিতে আমেরিকা বিজনেস ফোরামের এক সভায় দাঁড়িয়ে ট্রাম্প (Donald Trump) বলেন, “২০২৪ সালের ৫ নভেম্বর আমেরিকার জনগণ আমাদের সরকারকে এনেছিল। আমরা আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করেছিলাম। কিন্তু গতকাল রাতে নিউ ইয়র্কে আমরা আবার কিছুটা সার্বভৌমত্ব হারালাম। তবে আমরা তা ফের পুনরুদ্ধার করব।” তাঁর অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা আমেরিকাকে সমাজতান্ত্রিক পথে ঠেলে দিচ্ছে, যা একদিন দেশের স্বাধীনতা ও অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করবে।

আরও পড়ুন:ভারত-পাক যুদ্ধে মধ্যস্থতা নিয়ে ফের নতুন দাবি ট্রাম্পের, “৮টি বিমান ধ্বংস হয়েছিল” গরমিলের নতুন কিস্তি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট

ট্রাম্প (Donald Trump) বলেন, “আমি বহু বছর ধরেই সতর্ক করে আসছি, বিরোধীরা আমেরিকাকে কমিউনিস্ট কিউবা বা সমাজতান্ত্রিক ভেনেজুয়েলায় পরিণত করতে বদ্ধপরিকর। আপনারা দেখছেন, সেই দেশগুলির কী অবস্থা হয়েছে।” তাঁর কটাক্ষ, “মামদানির নেতৃত্বে নিউ ইয়র্ক যখন সমাজতান্ত্রিক রাজ্যে পরিণত হবে, তখন নিউ ইয়র্কবাসীরা বাধ্য হবেন ফ্লোরিডায় পালিয়ে আসতে।” একইসঙ্গে ট্রাম্প দাবি করেন, “ডেমোক্র্যাটরা চরমপন্থী পথে হাঁটছে। খুব শিগগিরই মায়ামি হয়ে উঠবে নিউ ইয়র্কবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।”

অন্যদিকে, নিজের বিজয়ের পর জোহরান মামদানি বলেন, “এই জয় শুধু আমার নয়, প্রতিটি সেই নিউ ইয়র্কবাসীর, যারা পরিবর্তনে বিশ্বাস রেখেছেন। শহরের সমস্যাগুলির সমাধান করা হবে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে এবং সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে।” তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কর্মসংস্থান, আবাসন সংকট, জলবায়ু সমস্যা এবং নাগরিক সুরক্ষার মতো বিষয়গুলিতে তিনি গুরুত্ব দেবেন। মামদানি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, “আগামী ১ জানুয়ারি নববর্ষের দিন আমি মেয়র পদে শপথ নেব। সেই দিনটি হবে নিউ ইয়র্কের জন্য নতুন যুগের সূচনা।” তাঁর এই ঘোষণার পরই সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। এরপরই এই নিয়ে মুখ খোলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (Donald Trump)।

Donald Trump seemed upset over Mamdani's victory.

আরও পড়ুন:ভারতের একটি সিদ্ধান্তেই বাংলাদেশে তোলপাড়! লাফিয়ে বাড়ল এই জিনিসের দাম

উল্লেখযোগ্যভাবে, মাত্র ৩৪ বছর বয়সে মেয়র নির্বাচিত হয়ে মামদানি নিউ ইয়র্কের গত একশো বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কনিষ্ঠ মেয়র হিসেবে নাম লিখিয়েছেন। তাঁর জন্ম উগান্ডায়, পরে পরিবারসহ আমেরিকায় চলে আসেন। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি ছিলেন একজন সমাজকর্মী এবং হাউজিং রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট। তাঁর রাজনৈতিক দর্শন সর্বজনীন ন্যায়বিচার, সামাজিক সমতা এবং নাগরিক অধিকারের পক্ষে। আর অন্যদিকে তাঁর এই জয়ে কিছুটা আক্ষেপ নিয়েই ভবিষ্যতের জন্য চিন্তা প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প (Donald Trump)।

মামদানির ঐতিহাসিক জয়ে যেমন নিউ ইয়র্কে উচ্ছ্বাসের ঢেউ, তেমনই রিপাবলিকান শিবিরে উদ্বেগের সুর। ট্রাম্পের (Donald Trump) বক্তব্যে বোঝা গেল, এই নির্বাচন শুধুমাত্র নিউ ইয়র্কের নয়—এটি আমেরিকার রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিক নির্ধারণের ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল।