গ্রিন থেকে গোল্ড— ট্রাম্পের নতুন ভিসা খেলা! মার্কিন ‘গোল্ড কার্ড’ পেতে কত খরচ করতে হবে জানেন?

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: আমেরিকায় অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন আনলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। শুক্রবার তিনি স্বাক্ষর করলেন একাধিক নতুন নির্দেশনামায়, যার মাধ্যমে চালু হল ‘গোল্ড কার্ড’ এবং ‘প্ল্যাটিনাম কার্ড’ ভিসা। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিদেশি নাগরিক যদি আমেরিকায় বসবাস করতে চান, তবে তাঁকে কমপক্ষে ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮ কোটি ৮০ লক্ষ টাকারও বেশি খরচ করতে হবে। এই খরচের পরেই পাওয়া যাবে ‘গোল্ড কার্ড’। অন্যদিকে, মার্কিন সংস্থাগুলি যদি বিদেশি দক্ষ কর্মীদের দ্রুত ভিসা নিশ্চিত করতে চায়, তবে তাদের গুনতে হবে ২০ লক্ষ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১৭ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার বেশি।

ট্রাম্পের গোল্ড কার্ড চালু (Donald Trump)

নির্দেশনামায় স্বাক্ষরের পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (Donald Trump) জানান, এই পরিকল্পনা আমেরিকার অর্থনীতির জন্য যুগান্তকারী হতে চলেছে। তাঁর বক্তব্য, “আমার মনে হয় এটি দারুণ সফল হবে। এর ফলে কয়েক কোটি ডলার আসবে, কর কমবে এবং ভাল ভাল কাজ তৈরি হবে।” পরে সমাজমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, “আমেরিকার করদাতারা বৈধ অভিবাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে লাভবান হবেন।” উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই ট্রাম্প ‘গোল্ড কার্ড’ চালুর কথা জানিয়েছিলেন, এবার সেটাই বাস্তবায়িত হল।

আরও পড়ুন:অশান্তির আগুনে পুড়ে ছাই প্রায় গোটা দেশ, আর্থিক ক্ষতিপূরণ মেটাতে পুনর্গঠনে মরিয়া নেপাল

এতদিন বিদেশীরা আমেরিকায় স্থায়ী বসবাসের জন্য কেবল ‘গ্রিন কার্ড’-এর জন্য আবেদন করতে পারতেন। এবার তার পাশাপাশি নতুন বিকল্প চালু করল ট্রাম্প (Donald Trump)। আমেরিকার বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক এ প্রসঙ্গে জানান, গোল্ড কার্ড প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মেধাবীদের জন্য, যাঁরা আমেরিকায় নতুন কাজ ও ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি করবেন। তাঁর মতে, গ্রিন কার্ড পাওয়া ব্যক্তিরা আমেরিকায় বিভিন্ন সংস্থার উচ্চ পদে কাজ করবেন এবং মার্কিন নাগরিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করবেন। তাই তাঁদের উপস্থিতি আমেরিকার কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রকে সমৃদ্ধ করবে, কাজ কেড়ে নেবে না।

এছাড়াও চালু হল প্ল্যাটিনাম কার্ড ভিসার পরিকল্পনা। এই ভিসা পেতে কোনও বিদেশিকে খরচ করতে হবে অন্তত ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৪ কোটি টাকারও বেশি। প্ল্যাটিনাম কার্ড পেলে এক জন অভিবাসী বছরে ২৭০ দিন পর্যন্ত আমেরিকায় থাকতে পারবেন এবং উপার্জিত অর্থের জন্য মার্কিন প্রশাসনকে কোনও কর দিতে হবে না। তবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মার্কিন আইনসভার অনুমোদন প্রয়োজন। লুটনিক জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষেই সেই অনুমোদন মিলতে পারে (Donald Trump)।

শুক্রবারই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (Donald Trump) আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন যে, এখন থেকে মার্কিন সংস্থাগুলিকে প্রতি বছর এক লক্ষ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা, দিতে হবে সরকারকে যদি তারা এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করতে চায়। এইচ-১বি একটি অ-অভিবাসী ভিসা, যার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের দক্ষ কর্মীরা আমেরিকায় থেকে সেখানকার সংস্থার হয়ে কাজ করেন। ট্রাম্প সরাসরি এই ভিসা বন্ধ করছেন না, তবে বিশাল অঙ্কের অতিরিক্ত ফি ধার্য করার ফলে সংস্থাগুলি আর আগের মতো বিদেশি কর্মী নিয়োগে উৎসাহী নাও হতে পারে।

Donald Trump started new visa game

আরও পড়ুন:অপারেশন সিঁদুরে খতম মাসুদ আজহারের ভাই, স্মরণসভার আড়ালে নতুন ষড়যন্ত্রের ছক পাকিস্তানে!

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের (Donald Trump) এই সিদ্ধান্ত আমেরিকার অর্থনীতিতে বিপুল অর্থ প্রবাহ ঘটালেও দক্ষ বিদেশি কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করবে। বিশেষত ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি খাত, যারা দীর্ঘদিন ধরে এইচ-১বি ভিসার প্রধান সুবিধাভোগী, তারা সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেতে পারে। একদিকে গোল্ড ও প্ল্যাটিনাম ভিসার মাধ্যমে ধনী ও মেধাবীদের আমেরিকা টানার চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে সাধারণ দক্ষ কর্মীদের জন্য আমেরিকার দরজা কার্যত সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে।