“ভারত আমাদের কাছ থেকে কম তেল কিনছে”, SCO সম্মেলনের পর ক্ষোভ উগরে কী জানালেন ট্রাম্প?

Published on:

Published on:

Donald Trump vents anger against India after SCO summit.

বাংলা হান্ট ডেস্ক: SCO সম্মেলনে চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বৈঠকের পর, মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের (India) ওপর তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প ভারতের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্যকে একতরফা বিপর্যয় হিসেবে বর্ণনা করে জানান যে, “ভারত বছরের পর বছর ধরে আমাদের সঙ্গে একতরফা বাণিজ্য করে আসছে। ভারত আমাদের প্রচুর পণ্য বিক্রি করে। অন্যদিকে আমাদের ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে খুব কম পণ্য বিক্রি করে।”

ভারতের (India) ওপর ক্ষোভ উগরে দিলেন ট্রাম্প:

উল্লেখ্য যে, চিনের তিয়ানজিনে সম্পন্ন হওয়া SCO শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর অংশগ্রহণের পর এটাই ট্রাম্পের প্রথম প্রতিক্রিয়া। সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ট্রুথ সোশ্যালে ক্ষোভ প্রকাশ করে ট্রাম্প লিখেছেন, “মাত্র কিছুজনই এটা বোঝেন যে আমরা ভারতের (India) সঙ্গে খুব কম বাণিজ্য করি। যদিও ভারত আমাদের সঙ্গে প্রচুর ব্যবসা করে। সোজা কথায়, ভারত আমাদের কাছে প্রচুর পণ্য বিক্রি করে। অন্যদিকে আমরা ভারতে খুব কম পরিমাণে পণ্য বিক্রি করি। আমরা তাদের সবচেয়ে বড় গ্রাহক। কিন্তু আমাদের পণ্য সেখানে বিক্রি হয় না… এখনও পর্যন্ত এই সম্পর্ক একতরফা। বহু দশক ধরে এটি চলে আসছে।”

 Trump vents anger against India after SCO summit.

ট্রাম্প এখানেই থেমে থাকেন নি। বরং, তিনি আমেরিকা থেকে ভারতের (India) অপরিশোধিত তেল কেনার বিষয়েও তিনি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, “ভারত তার বেশিরভাগ তেল এবং সামরিক সরঞ্জাম রাশিয়া থেকে কেন। তারা আমেরিকা থেকে খুব কম পণ্য কিনে। এছাড়াও, তারা আমাদের ওপর খুব বেশি পরিমাণে শুল্ক আরোপ করে। এটি অন্য যেকোনও দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এর কারণে, আমাদের ব্যবসায়ীরা ভারতে ব্যবসা করতে পারছেন না।”

আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরের শুরুতেই মিলল সুসংবাদ! গ্রাহকদের স্বস্তি দিতে বড় সিদ্ধান্ত PNB ও ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার

ভারত শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে: ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, ভারত (India) এখন কয়েক দশক ধরে আমেরিকার ওপর যে শুল্ক আরোপ করে আসছে তা সম্পূর্ণরূপে কমানোর প্রস্তাব দিচ্ছে। কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। তাদের এটা অনেক বছর আগেই করা উচিত ছিল। এদিকে, ট্রাম্পের এই প্রতিক্রিয়া এমন এক সময়ে সামনে এসেছে যখন বিশ্ব রাজনীতিতে প্রচুর অস্থিরতা চলছে। কয়েক দশক ধরে অংশীদার ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক এখন যথেষ্ট প্রভাবিত। ট্রাম্প ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। যা বিশ্বের যেকোনও দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ। এই শুল্কের কারণে আমেরিকায় ভারতীয় পণ্যের রফতানিও কমে গেছে।

এদিকে, ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের ফলে ভারত (India) ও চিনের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হতে শুরু করেছে ও। প্রধানমন্ত্রী মোদী ইতিমধ্যেই চিনের তিয়ানজিনে চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরেছেন। যেখানে সকলেই বিশ্ব বাণিজ্যে চলমান অস্থিরতার নিন্দা করেছেন। চিন, ভারত এবং রাশিয়ার কাছাকাছি আসার কারণে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও ট্রাম্পের সমালোচনা বেড়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে যে, তারা ব্যক্তিগত স্বার্থ এবং ক্ষোভের কারণে, তারা ভারতের মতো শক্তিশালী দেশকে চিনের দিকে এগিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

আরও পড়ুন: মার্কিন শুল্ক উত্তেজনার আবহে বড় সিদ্ধান্ত আম্বানি পরিবারের! স্থগিত করা হল…

নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, ট্রাম্প চেয়েছিলেন পাকিস্তানের ওপর যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে নোবেল পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করুন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদী তা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এর ফলে উভয় দেশের নেতাদের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। অন্যদিকে, দুগ্ধজাত পণ্যের বিষয়ে ভারত (India) সরকারের কঠোর অবস্থান দুই দেশের সম্পর্ককে আরও তিক্ত করে তোলে।

এরপর ট্রাম্প রাশিয়ার তেল এবং আমেরিকান পণ্যের ওপর ভারত (India) কর্তৃক আরোপিত শুল্কের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এমতাবস্থায়, ভারত সরকার এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে ওই সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণ অন্যায্য এবং ভুল বলে অভিহিত করে। প্রধানমন্ত্রী মোদী সহ সকল নেতাই প্রকাশ্যে আমেরিকার এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন এবং সরাসরি বার্তা দিয়েছেন যে, ভারত কারও কাছে মাথা নত করবে না এবং কারও নির্দেশে তার কূটনৈতিক স্বতন্ত্রতা ত্যাগ করবে না।