বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাতে মাত্র গোনা কয়েক দিন। বছর ঘুরলেই বঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Vote)। এখনো ঘোষণা হয়নি পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘন্ট। তাতে কি! নিয়তই চলছে দল বদলির খেলা। কিছুদিন আগে তৃণমূলের সেকেন্ড কমান্ডোর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বহু বিজেপির হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী। সেই ধারাই যেন অক্ষুন্ন। তবে এবার ঘটল উল্টো ঘটনা। বেজায় চটে গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন দলগাঁও বন্যপ্রাণী শাখার বিট অফিসার জগন্নাথ সাহা (Jagannath Saha)।
জগন্নাথ সাহা! বয়স হয়েছে ষাট। হাতে মাত্র এক বছর, তারপরেই চাকরি ছেড়ে অবসর। বহু বছর পরিষেবা প্রদানের পর, চাকুরীর শেষ সময়টা একটু আয়েস করে হেসে খেলে থাকতে চেয়েছিলেন এই বন আধিকারিক। কিন্তু তা আর হল কই? বুড়ো বয়সে কিনা হাতি তাড়ানোর কাজ গছিয়ে দেওয়া হল তাকে! আর এতেই রেগে-বেগে ক্ষুব্ধ হয়ে তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিলেন বিজেপিতে।
শুনতে অবাক লাগলেও তাজ্জব এই ঘটনাটি ঘটেছে ডুয়ার্সে (Dooars)। এই বয়সে এসে এখন কি আর হাতি তাড়াতে ভাল লাগে? দলগাঁও বন বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত এই কর্মী। বহুবছর সামলেছেন নিজের কাজ। চাকরি জীবনের শেষে এসে তাকে কিনা দেওয়া হল হাতি খেদানোর কাজ! গোটা ব্যাপারটাই তার মান-সম্মানে লেগেছে। আর তাই রাগে ছেড়েই দিলেন দল।
কি বললেন জগন্নাথবাবু?
তিনি জানান , আর একটা বছর পরেই অবসর। এখন বন বিভাগের অন্য শাখায় না দিয়ে, তাকে বন্যপ্রাণী শাখায় বদলি করে দেওয়া হয়েছে। গ্রামে গ্রামে ঘুরে কোথায় হাতি ঢুকেছে, কোথায় হাতি তাণ্ডব করছে, সেইসব দেখেশুনে তাকে হাতি তাড়াতে যেতে হবে। ষাট বছরে এসে এত লম্ফঝম্ফ কি আর সইবে? মনের দুঃখে প্রচণ্ড বিরক্তিতে তাই বড়সড় সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেছেন জগন্নাথবাবু।
জগন্নাথবাবুর বিজেপি যোগ নিয়েই যথেষ্টই আনন্দিত স্থানীয় বিজেপি শিবির। জগন্নাথবাবুর যোগদান প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেছেন, “তৃণমূলে আর কোন ভদ্রলোক থাকতে চাইছেন না। তাই সব দলে দলে বিজেপিতে যোগদান করছে। আর আজ একজন বন দফতরের আধিকারিক সরকারি সংগঠনের উপর বিরক্ত হয়ে প্রকাশ্যে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কার্যালয়ে এসে গেরুয়া পতাকা তুলে নিয়েছিলেন তৃনমূল পরিচালিত বানারহাট ব্লকের শালবাড়ি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কালিপদ রায়। তার সঙ্গেই যোগ দিয়েছিলেন এক পঞ্চায়েত সদস্য সহ প্রায় ১০০ জন তৃনমূল নেতা, কর্মী। আর এবার দল বদলিতে নাম লেখালেন ক্ষুব্ধ বন আধিকারিক।
অন্যদিকে, জগন্নাথবাবু যে সরকারি সংগঠনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন, তাতে রীতিমতো বিরক্ত তৃণমূল নেতৃত্ব। শাসক দল প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী সংগঠনের জেলা সভাপতি সঞ্জয় সিংহ এই বিষয়ে বলেন , জগন্নাথবাবু যা করেছেন তা নিয়ম-নীতি বিরুদ্ধ। ওর বিরুদ্ধে আইনি ব্য়বস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হবে।