তৈরি হতে চলেছে নয়া ইতিহাস! সাবমেরিনে সওয়ার হয়ে নৌবাহিনীর ক্ষমতা পরিদর্শন করবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু

Published on:

Published on:

Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ঐতিহাসিক, নজিরবিহীন, অতুলনীয়— এই বিশেষণগুলিও যেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর (Draupadi Murmu) এই সফরের গুরুত্ব বোঝাতে যথেষ্ট নয়। দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে ৬৭ বছর বয়সে কালভেরি ক্লাসের স্করপেন সাবমেরিনে সওয়ার হতে চলেছেন তিনি। দেশের প্রথম মহিলা রাষ্ট্রপতি হিসাবে এই বিরল ও ঐতিহাসিক সফরের মাধ্যমে অতল সমুদ্রে ভারতীয় নৌবাহিনীর ‘নিঃশব্দ যোদ্ধা’ সাবমেরিনের কার্যপ্রণালী নিজের চোখে দেখবেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। সাবমেরিনে মোতায়েন নৌসেনা অফিসার ও জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাঁকে দেখানো হবে কী ভাবে সোনার প্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ব্যবস্থা এবং টর্পেডো ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যে কোনও হামলার মোকাবিলা করা হয়।

সাবমেরিনে সওয়ার হয়ে নৌবাহিনীর ক্ষমতা পরিদর্শন করবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু (Draupadi Murmu)

রাষ্ট্রপতি ভবনের প্রকাশিত সূচি অনুযায়ী, ২৭ থেকে ৩০ ডিসেম্বর চার দিনের গোয়া, কর্ণাটক ও ঝাড়খণ্ড সফরের মধ্যেই এই সাবমেরিন যাত্রা করবেন রাষ্ট্রপতি। ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তিনি গোয়ায় পৌঁছবেন এবং ২৮ ডিসেম্বর কর্ণাটকের কারওয়ার বন্দরে অবস্থিত নৌসেনা ঘাঁটি থেকে সাবমেরিনে সওয়ার হবেন। এর আগে দেশের রাষ্ট্রপতিদের মধ্যে একমাত্র এপিজে আব্দুল কালাম ২০০৬ সালে INS সিন্ধুরক্ষ সাবমেরিনে সওয়ার হয়েছিলেন। সেই সফরে ভারতের নৌবাহিনীর সক্ষমতা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছিলেন ‘মিসাইল ম্যান’।

আরও পড়ুন:পাকিস্তানের বাড়ল চাপ! সিন্ধুচুক্তি স্থগিত থাকার আবহেই বড় পদক্ষেপ ভারতের, মিলল আপডেট

বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতির এই সাবমেরিন সফরের তাৎপর্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জুড়ে অস্থিরতা ও ভারত-বিরোধী মনোভাব, অন্যদিকে চিনের ক্রমাগত সামরিক চাপ ও চোখরাঙানি— এই পরিস্থিতিতে নৌবাহিনীর শক্তি ও প্রস্তুতি প্রদর্শনের বার্তা বহন করছে রাষ্ট্রপতির এই সফর। বিশেষত এমন সময়েই এই সফর হচ্ছে, যখন বিশাখাপত্তম থেকে সদ্যই পরমাণু চালিত INS অরিঘাত সাবমেরিন থেকে ৩,৫০০ কিলোমিটার পাল্লার কে-৪ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর এটি প্রথম নয়, এর আগেও তিনি দেশের সামরিক শক্তির বিভিন্ন দিক প্রত্যক্ষ করেছেন। ঠিক দু’বছর আগে তাঁকে সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমানের ককপিটে বসতে দেখা গিয়েছিল। এছাড়াও দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত ভারতের প্রথম এয়ারক্রাফট কেরিয়ার INS বিক্রান্ত পরিদর্শন করেছেন তিনি। এবার সাবমেরিনে সওয়ার হয়ে ভারতের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ নৌ প্রকল্পগুলির একটি, ‘প্রজেক্ট সিবার্ড’-এর সাফল্যকে সামনে আনতে চলেছেন রাষ্ট্রপতি।

President Droupadi Murmu will inspect the naval capabilities by riding in a submarine.

আরও পড়ুন:ভারতীয়দের মধ্যে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্যবসার প্রবণতা! কী জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় শিল্প মন্ত্রক?

উল্লেখ্য, প্রজেক্ট সিবার্ডের আওতায় কর্ণাটকের কারওয়ারে গড়ে উঠছে এশিয়ার বৃহত্তম ও আধুনিকতম নৌসেনা ঘাঁটি। প্রায় ১১ হাজার একর এলাকায় বিস্তৃত এই ঘাঁটি ভবিষ্যতে ভারতের সাবমেরিন, যুদ্ধজাহাজ ও এয়ারক্রাফট কেরিয়ারগুলির প্রধান ঘাঁটি হতে চলেছে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেশের আধিপত্য বজায় রাখা এবং INS বিক্রম ও INS বিক্রমাদিত্যকে সমুদ্রপথে পূর্ণ সহায়তা দেওয়াই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। নৌসেনার একটি সূত্রের মতে, রাষ্ট্রপতি মুর্মুর এই সাবমেরিন সফর নারী শক্তির বার্তাও দেবে— সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের অংশগ্রহণ যে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে, তারই প্রতীক হয়ে উঠতে পারে এই ঐতিহাসিক যাত্রা।