বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পাঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টি সেখানকার কংগ্রেস এবং বিজেপি দলকে ধরাশায়ী করে বিপুল পরিমাণ ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় আসার পরই দলের প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ভগবন্ত মান-এর নাম নির্বাচিত করেন। পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পরই জনগণের উদ্দেশ্যে একাধিক উন্নয়নের বার্তা দিতে দেখা যায় ভগবন্ত মানকে।
এরপর মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের প্রশংসায় অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও বলতে শোনা যায় যে, “যেভাবে আমি দিল্লিতে সবরকম দুর্নীতির হাত থেকে সেখানকার মানুষকে রক্ষা করেছি, সে রকম পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীও পাঞ্জাবকে দুর্নীতিমুক্ত করতে এবং সেখানকার মানুষকে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে রাখতে সক্ষম হবে।” কিন্তু ক্ষমতায় আসার একমাসের মধ্যেই দেখা গেলো এর বিপরীত দৃশ্য! বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের বিরুদ্ধে ‘মদ্যপ অবস্থায়’ গুরুদ্বারে প্রবেশ করার অভিযোগের ফলে গোটা পাঞ্জাব জুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
সূত্রের খবর, 14 ই এপ্রিল বৈশাখী উৎসবের দিন ভগবন্ত মানের বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় গুরুদ্বারে প্রবেশ করার অভিযোগ উঠেছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর এহেন আচরণের বিরুদ্ধে বিজেপি স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেছে বলে জানা যাচ্ছে। পাঞ্জাবের বিজেপি নেতা তাজিন্দর পাল সিংহ এদিন অভিযোগ করেন, “বৈশাখী উৎসবের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিনে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী দমদমা সাহিব গুরুদ্বারে মদ্যপ অবস্থায় ঢোকেন। এটি খুবই ঘৃণ্য কাজ এবং মুখ্যমন্ত্রীর এহেন কাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশের ডিজিকে আমি অনুরোধ করেছি। ভগবন্ত মানের উচিত এই ঘটনার জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।”
এই ঘটনা সামনে আসার পর পাঞ্জাবের অকালি দলও মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছে। তবে বর্তমানে গোটা রাজ্যে বিতর্কের ঝড় উঠলেও এ বিষয়কে গুরুত্ব দিতে নারাজ আম আদমি পার্টির নেতৃত্ব। দলের সাংসদ রাঘব চাড্ডা জানান, “পাঞ্জাবের বুকে বিধানসভা ভোটে পরাজয় এখনো মেনে নিতে পারেনি বিরোধী দলগুলি আর এই জন্যই তারা এসব কথা বলে মুখ্যমন্ত্রীর বদনাম করার চেষ্টা করে চলেছে।”
সূত্রের খবর, এসকল বিতর্ক মাঝেই এদিন পাঞ্জাব সরকার রাজ্যের প্রতিটি পরিবারের নিকট দু’মাসের জন্য বিনামূল্যে 300 ইউনিট বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা করেছে। পরের মাস থেকে প্রতিটি পরিবার এই সুবিধা পেতে চলেছে বলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, “এতদিন যাবৎ পাঞ্জাবের তপসিলি জাতি এবং পিছিয়ে থাকা শ্রেণীর মানুষের বাড়িতে প্রত্যেক মাসে বিনামূল্যে 200 ইউনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হত, কিন্তু পরের মাস থেকে তারা 300 ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিনা মূল্যে পেয়ে যাবেন।”
বিরোধী দলগুলি অবশ্য আম আদমি পার্টির এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। কংগ্রেস দলের এক নেতা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নতুন ঘোষণার পর মানুষ আদৌ বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পাবেন কিনা, সে বিষয়ে আমাদের গভীর সংশয় রয়েছে।” ফলে বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর অভিযোগ এবং আপ সরকারের বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহের ঘোষণা মাঝে পাঞ্জাবের রাজনীতির প্রাঙ্গণ ভবিষ্যতে যে সরগরম হতে চলেছে, তা অনস্বীকার্য।