বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে আমরা সকলেই প্রচলিত ১০০, ৫০০ কিংবা ২,০০০ টাকার নোটের সাথে পরিচিত। পাশাপাশি, এখন আমাদের দেশে ২,০০০ টাকার নোটই সবচেয়ে বড় অঙ্কের নোট হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা ভারতে প্রচলিত এমন একটি নোটের প্রসঙ্গে উপস্থাপিত করব যেটি অনেকের কাছেই অজানা হয়ে রয়েছে। মূলত, আমরা ১০,০০০ হাজার টাকার নোট সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।
একটা সময়ে আমাদের দেশেই প্রচলন ছিল ১০,০০০ টাকার নোটের। যদিও, এখন এই নোটের অস্তিত্ব আর নেই বললেই চলে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ভারতে প্রথমবার ১০,০০০ টাকার নোট ছাপা হয়েছিল ১৯৩৮ সালে। মূলত, ব্রিটিশ সরকারের অধীনে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই নোট ছাপিয়েছিল। তবে, জেনে অবাক হবেন যে, ভারতে দু’বার নোটবন্দির শিকার হতে হয় এই নোটকে।
১৯৩৮ সাল থেকে এই নোটের প্রচলন শুরু হলেও ঠিক তার ৮ বছর পর অর্থাৎ, ১৯৪৬ সালে প্রথমবারের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় এই নোট। এমতাবস্থায়, ওই বছরই দেশের প্রথম নোটবন্দির ঘটনা ঘটে। যদিও, তার ৮ বছর পর ১৯৫৪ সালে ফের চালু করে দেওয়া হয় ১০,০০০ টাকার নোট। তবে, আবার এই নোট বাতিল হয়ে যায় দেশের দ্বিতীয় নোটবন্দিতে। যেটি সম্পন্ন হয় ১৯৭৮ সালে।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই এই নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর তারপর থেকে আর দেশে চালু হয়নি এই বড় অঙ্কের নোট। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ১৯৭৮ সালে ঘটা নোটবন্দির জেরে তৎকালীন প্রচলিত ৫ হাজার টাকার নোট এবং ১ হাজার টাকার নোটও বাতিল করে দেয় সরকার। মূলত, দু’বারই ১০ হাজার টাকার নোট বাতিল করার পেছনে প্রধান কারণ ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই। পাশাপাশি, কালো টাকা “সাদা” করার উপায় হিসবেও বিবেচিত হয় এটি।
এদিকে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয়বার নোটবন্দির আগে আমাদের দেশে মোট ৩৪৬ টি ১০ হাজার টাকার নোট ছিল। এমতাবস্থায়, এখনও কারও কারও সংগ্রহে রয়েছে এই নোট। এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের তরফে দাবি করা হয় যে, সারা পৃথিবীতে বর্তমানে এই নোট রয়েছে ১০ টি।
এদিকে, কয়েক বছর আগে দুবাই নিবাসী রামকুমার নামের এক ব্যক্তি তাঁর কাছে থাকা ১০ হাজার টাকার নোটটির কথা সামনে আনেন। পাশাপাশি, তিনি দাবি করেন যে, ২০১৫ সালে এক পুরোনো নোট সংগ্রহকারীর কাছ থেকে ওই নোটটি তিনি পান। এমতাবস্থায়, দুবাইয়ের একটি শোরুমে রামকুমারের সংগ্রহের ১০ হাজার টাকার নোটটি পর্যটকদের দেখার উদ্দেশ্যে রাখা আছে।
কেমন দেখতে ছিল নোটটি: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, একদা ভারতে প্রচলিত ১০ হাজার টাকার আয়তাকার হলদে নোটের ঠিক উপরে গোটা অক্ষরে লেখা ছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নাম। পাশাপাশি, ওই নোটের মাঝখানে ছিল অশোক স্তম্ভ। তবে, কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর ছবি ছিল না ওই নোটে।