অমিত সরকার: ইতিহাস যখন তার পাতা খুলে তখন তা থেকে বেরিয়ে আসে জীবাশ্মের মত ইতিহাসের এক অভূতপূর্ব অধ্যায়। রথচক্রে চাকার বিবর্তন ধরা পড়ে প্রতিটা আঙ্গিকে। এমনই এক ইতিহাস ধরা দিল কালিয়াগঞ্জ এর প্রান্ত গ্রামে। যার ইতিহাসের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের ইতিহাস জড়িত। যদিও স্মৃতিবিজড়িত অনেক স্বাধীনতার কথা
ইতিহাসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে পাঁচ বোনের ইতিহাস। কাকর সিংয়ের উদয় চন্ডী, কমলা বাড়ির কমলাই চন্ডী, বটতলীর গুরগুরাই চন্ডী, গিরাসিলের চন্ডী।
তবে কাকর সিং এর দুর্গা ঠাকুরের পুজো সম্পর্কে আমরা সকলেই ওয়াকিবহাল। আজ আমরা জানবো এমনই এক দুর্গাপূজার ইতিহাস তার মধ্যে লুকিয়ে আছে এক প্রাচীন স্বাধীনতার ইতিহাসের কথা।
পাথরে প্রমাণ হয়তো এর নেই যে কত বছর আগে জন্ম ইতিহাসের। তবুও স্মৃতির গ্রাফ থেকে জানা যায় যে বাহিনীর জমিদারদের ৩৩ বিঘা জমি দান করেছিল সাধু রাজবংশী কে। এরপর ছেলে খোকা রাজবংশী তার হাত ধরে সুখাই রাজবংশী বর্তমানে গোসাই রাজবংশীর রাজবংশীর হাতে রয়েছে এই পূজার দায়িত্ব।
বলি এর নিয়মঃ
পূজার পাঠা বলি তে চারটি পাঠা অবশ্যই দিতে হয় এমনকি কবুতরের বাচ্চা পাঁচ জোড়া অবশ্যই দেওয়ার নিয়ম আছে। বলি না দিলে ঠাকুর নাকি গভীরভাবে ধরা দেয়। সকলের কাছে এবং জানতে চায় তার কারণ। কোথিত আছে এই ঠাকুরের জাগ্রত অবস্থা বহু জন দেখেছে বিভিন্ন ভঙ্গিতে।
ঠাকুরের বৈশিষ্ট্যঃ
এই চণ্ডীর কোন অসুর নাই, দুটো সিংহ রয়েছে যার একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। যার উপর পা দিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে রয়েছেন। চারটি হাত রয়েছে।
স্থানঃ
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ এর 7 নং ভান্ডার পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গ্রামে এই ঠাকুরের অবস্থান।
ইতিহাসঃ
ইতিহাসটা একটু অন্যরকম জানা যায় পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পূর্বে প্রতাপ নামের একজন প্রথম পুরোহিতের দায়িত্ব সামলাতে থাকেন। এরপরই রঞ্জিত চক্রবর্তী রংপুরের একজন নামকরা পুরোহিত রাতের অন্ধকারে পূজা করতেন তিনি কুপি জ্বালিয়ে সারারাত। বর্তমানে 5 বছর ধরে উত্তম রায় চৌধুরী এই পুজোর পুরোহিতের দায়িত্বে রয়েছেন।
করুনা প্রাপ্তিঃ
কথিত আছে যে মুসলিম পীর এর দরবারে গিয়ে একজন মুসলিম বুদু চৌধুরী তার শারীরিক অক্ষমতার শুশ্রূষা করেও বহুদিন পর সুস্থ না হয়ে শেষ পর্যন্ত এই চন্ডির আশ্রয় নেন। কালিয়াগঞ্জ এর স্প্রিং মিলে কাজ করতেন দীর্ঘ বহু বছর হল। বর্তমানে তার পরিবারও তিনি সুস্থ হয়ে রয়েছেন। তার মনোস্কামনা পূর্ণ হতে তিনি মন্দিরকে অনেক গ্রিল অনেক সামগ্রী দান করেছেন। কমিটিতে রয়েছেন রবি রাজবংশী, নির্বাস রাজবংশী, গোসাই রাজবংশী, মজেম রাজবংশী। প্রাচীন বলতে এই পরিবারের শান্তি রাজবংশী যার পরিবার নিয়ম নিষ্ঠা সহকারে এই পুজো কে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।
৩ দিন এর কার্যপ্রণালীঃ তিনদিন ধরে চন্ডীমঙ্গল গান পুজোর প্রসাদ বিতরণ এবং গ্রামের সকল হিন্দু মুসলিম কে নিয়ে একত্রিত ভাবে এই পুজো উৎসব হয়। নুর ইসলাম পুজোর ক্ষেত্রে দায়িত্বে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন।