বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। তার আগে শেষ বাজেট পেশ করল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার ২০২৪ সালের রাজ্য বাজেট (Budget 2024) বিধানসভায় পেশ করলেন বাংলার অর্থপ্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আর সেই বাজেটে কল্পতরু মমতা সরকার। এবারের বাজেটে সাধারণ মানুষ, বিশেষত প্রান্তিক মানুষদের সামগ্রিক উন্নয়নে জোর দিয়েছে রাজ্য।
লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য বাজেটে এক ধাক্কায় দ্বিগুন বাড়ানো হয়েছে লক্ষীর ভাণ্ডারের (Lakshmir Bhandar) টাকা। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে অর্থপ্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ভাতা ৫০০ থেকে বেড়ে ১০০০। জনজাতি মহিলাদের জন্য ভাতা হাজার থেকে বেড়ে ১২০০।’ ভোটের মুখে রাজ্যের মহিলাদের মুখে হাসি ফোটাতে মমতার এই মাস্টারস্ট্রোক যে ভালোই কাজ করবে তা বুঝতে কারও বাকি নেই।
তবে কেবল যে লক্ষীর ভাণ্ডারের ভাতা বেড়েছে তেমনটা নয়। ফের ৪% ডিএ বৃদ্ধি করা হয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের। যা মার্চ মাস থেকে কার্যকর হবে। বাজেটে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভাতা ১০০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। রাজ্য সরকার চালু করছে ‘কর্মশ্রী’নামের নয়া প্রকল্প। যার মাধ্যমে প্রত্যেক জব কার্ড হোল্ডারকে বছরে কমপক্ষে ৫০ দিনের কাজ নিশ্চিত করা হবে। মাধ্যমিক পাশ করলেই পড়ুয়াদের দেওয়া হবে স্মার্টফোন।
পাশাপাশি মিড ডে মিলের রাঁধুনিদের ভাতা বাড়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আরও একাধিক ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এদিকে বাজেট পেশের পরই এই সব ক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ (Economist) সুপর্ণ মৈত্র বলেন, “ আমার প্রশ্ন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে যে টাকা বাড়ানো হল, সেই টাকা আসবে কোথা থেকে? এত টাকা জোগাড় করবেন কোথা থেকে?”
এইভাবে অর্থনীতি চালানোর ঘোর বিরোধিতা করে তিনি দাবি করেন, এই সব ক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধির ফলে রাজ্যে ক্রমাগত ‘ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিচারে’ বরাদ্দ কমছে। তিনি বলেন রাজ্য এমন সকল খাতে টাকা ব্যয় করছে যেখান থেকে কোনও আয় হচ্ছে না। ফলে করের বোঝাও কমছে না। যা একটা অর্থনীতিকে শেষ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
আরও পড়ুন: ‘DA ৪০,০০০ শতাংশ বাড়ালেও খুশি হব না’, ক্ষোভে যা ঘটাতে চলেছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা, চাপে মমতা
রাজ্য সরকারের বাজেট প্রসঙ্গে আরেক অর্থনীতিবিদ অনির্বাণ দত্ত বলেন, ভোট বাঙ্কের জন্য প্রান্তিক মানুষদের কথা ভেবে সরকার চালনা করতে হচ্ছে। যেহেতু এবারের বাজেট প্রান্তিক মানুষমুখী তাই অর্থনীতিবিদের দাবি, রাজ্যে প্রান্তিক মানুষ আছেন ঠিকই। তবে বেকার বা কর্মহীন মানুষও প্রচুর পরিমাণে রয়েছেন। যারা নিজেদের দাবি পূরণে সরকারের দিকে চেয়ে রয়েছে।