বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২২ সালের ২৩ জুলাই। নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) টানা ১৯ ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করার পর গ্রেফতার করে ইডি। এরপর দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় বছর। গত প্রায় ১৯ মাস ধরে জেলের চার দেওয়ালের মধ্যেই কেটেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জীবন।
এই সময়কালে একাধিকবার জামিনের আর্জি জানিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব। তবে কোনও সুরাহা হয়নি। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) শুনানি ছিল তাঁর জামিন মামলার। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে সেই মামলা উঠেছিল। শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির আইনজীবী দাবি করেন, স্বাধীন ভারতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো আচরণ কেউ করেননি! কেন এত বড় দাবি করা হল? সেই ব্যাখ্যাও দেন তিনি।
হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে ইডির (ED) তরফ থেকে দাবি করা হয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অঙ্গুলিহেলনেই যাবতীয় ব্যবসা চলতো। এই দুর্নীতি সংগঠনে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) পাশাপাশি আরও অনেক ব্যক্তিকে ব্যবহার করেছেন তিনি। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশেই অর্পিতা কাজ করতেন বলে দাবি করে ইডি।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল অতীতে অর্পিতাও দাবি করেছেন, সকল দুর্নীতির নেপথ্যে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে পার্থ একা নন, দুর্নীতির সঙ্গে অর্পিতাও যে সমানভাবে জড়িত তা আদালতে তুলে ধরার চেষ্টা করেন ইডির আইনজীবী। তিবি বলেন, ‘অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই দুর্নীতির কিংপিন। তবে আমরা বলছি, অর্পিতা মুখোপাধ্যায় আদতে এই দুর্নীতির রানী।‘
এখানেই না থেমে ইডির আইনজীবী আরও বলেন, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই ধরণের ঘটনা এই প্রথম। তাঁর কথায়, ‘স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ৫৪ কোটি টাকার জন্য দু’জন ব্যক্তি নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে ও দু’জনেরই দাবি এটা তাঁর নয়, অপরজনের’।
আরও পড়ুনঃ ‘স্বার্থপর…’, ভোটের আগেই তৃণমূল ‘নাম’ মুছলেন কুণাল, শীঘ্রই ছাড়ছেন দল? তোলপাড় রাজ্য
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলার শুনানি চলাকালীন এই মামলায় কতজন সাক্ষী আছে তা জানতে চান বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। ইডি উত্তরে জানায়, পাঁচটি মামলায় সাক্ষীর সংখ্যা মোট ১৬৫ জন। একথা শুনে বিচারপতি বলেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে তাহলে নিম্ন আদালতে বিচারপর্ব শেষ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই’। ইডির তরফ থেকে আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি তখন জানান, বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার জন্য তাঁরা প্রস্তুত। হাইকোর্টের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হলে রোজ নিম্ন আদালতে শুনানি করতে তৈরি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ৬ মার্চ।