বাংলা হান্ট ডেস্ক : কালীঘাটের ‘কাকু’র (Kalighater Kaku) কণ্ঠস্বরের নমুনাতেই লুকিয়ে রয়েছে এরাজ্যের একাধিক ‘প্রভাবশালী’ মানুষের দুর্নীতির খতিয়ান। এমনটাই দাবি করে আসছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (Enforcement Directorate)। তবে মাসের পর মাস চেষ্টা করেও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের (Sujay Krishna Bhadra) কণ্ঠস্বরের নাগাল পায়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এই সংস্থাটি। আর এবার নাকি তারা একপ্রকার বাধ্য হয়েই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করছে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, যতবারই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করা হয়েছে ততবারই অসুস্থতার দোহাই দিয়ে তা বাতিল করেছে এসএসকেএম (SSKM)। শেষে আর উপায় না দেখে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি। নিম্ন আদালতের নির্দেশেই কালীঘাটের কাকুকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবে ইডি।
শুক্রবার সকালে সেইমত অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হাজির হতেই জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতেই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের অবস্থা বাড়াবাড়ি হওয়ায় তাকে তড়িঘড়ি ইএসআই হসপিটালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। শুক্রবার সারাদিন চেষ্টা করেও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাগাল পায়নি তদন্তকারী সংস্থাটি। আর তাই এবার তিতিবিরক্ত হয়ে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার উদ্দেশ্যে দিল্লিতে বৈঠকে বসলেন ইডি কর্তারা।
আরও পড়ুন : হাহাকার পড়শি দেশে, রপ্তানি বন্ধ হতেই ২৫০ টাকা পেঁয়াজের দাম! ফের ভারতের কাছে হাত পাতল বাংলাদেশ
এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে দিচ্ছেন না। আবার অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলেও নানা আইনি সমস্যা তুলে বাধা দিচ্ছেন। জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পুরো বিষয়টি আদালতকে জানানো হবে।’ সেই সাথে কাকুর শারিরীক পরীক্ষা নিরীক্ষার সব রিপোর্ট দিল্লির চিকিৎসকদেরও দেখানো হচ্ছে বলে খবর।
আরও পড়ুন : ৩৭০ বাতিল সম্পূর্ণ বৈধ, জম্মু কাশ্মীরে নির্বাচনের ডেডলাইন বেঁধে দিল আদালত, যুগান্তকারী রায় সুপ্রিম কোর্টের
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে একটি কল রেকর্ডিং হাতে পেয়েছে ইডি। রেকর্ডিং-র এই কণ্ঠটি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বলে জানিয়েছেন ইডি। এবং তা প্রমাণ করার জন্য কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা প্রয়োজন। ‘সাউন্ডপ্রুফ’ ঘরে এই নমুনা সংগ্রহ করতে হয়, তাই সুজয়কে রাজ্য ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যাওয়ার কথা ইডির। আদালতের তরফ থেকে সেই আবেদন মঞ্জুরও হয়ে গেছে। এদিকে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে প্রায় পাঁচ মাস ধরে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে নড়ছেননা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।
ইডির দাবি, গত একমাসে একবার হলেও তদন্তের স্বার্থে ইডির হাতে তুলে দিতে পারতো এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবারও দিনভর বৈঠকের পরেও ইএসআই হসপিটালে স্থানান্তরিত করার অনুমতি দেয়নি এসএসকেএম। এক আধিকারিক জানিয়েছেন ‘এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসক ও প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের এ হেন আচরণের প্রেক্ষিতে কী ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেই বিষয়েও আইনজীবীদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।’