রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান অনিল আম্বানির (Anil Ambani) বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে বড় পদক্ষেপ নিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। প্রায় ৩,০৮৪ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল কেন্দ্রীয় সংস্থা। সোমবার সকালে ইডি সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, অনিল আম্বানির ‘রিলায়্যান্স অনিল ধীরুভাই অম্বানী গ্রুপ’-এর (ADAG) অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম এবং বিপুল ঋণ জালিয়াতির তদন্ত চলছিল। সেই মামলার অংশ হিসেবেই এই সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের পদক্ষেপ।
অনিল আম্বানির (Anil Ambani) সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ইডির:
ইডি সূত্রের দাবি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে চারটি পৃথক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। বাজেয়াপ্ত তালিকায় রয়েছে মুম্বইয়ের অভিজাত অঞ্চল পালি হিলে আম্বানির (Anil Ambani) পরিবারের একটি বিলাসবহুল বাড়ি। এর পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন সংস্থার বাণিজ্যিক ভবন ও একাধিক স্থাবর সম্পত্তি। দিল্লির হৃদয়স্থলে মহারাজা রণজিৎ সিংহ মার্গে অবস্থিত রিলায়্যান্স সেন্টারের একটি জমিও রয়েছে বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির তালিকায়।
তার মধ্যেও সীমাবদ্ধ নয়— দিল্লি ছাড়াও নয়ডা, গাজিয়াবাদ, পুণে, মুম্বই, ঠাণে, হায়দরাবাদ, চেন্নাই এবং অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলার সম্পত্তিও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে আর্থিক অনিয়ম এবং সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়ার ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, ২০০৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে অনিল আম্বানির (Anil Ambani) সংস্থা ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। ঋণ প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় ব্যাংকিং নিয়ম ভাঙা হয়েছে এবং ঋণ অনুমোদনের সময় জড়িত বেশ কিছু ব্যক্তিকে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়েছিল বলে সন্দেহ। এসবিআই সহ দেশের আরও কয়েকটি বড় ব্যাঙ্কও আম্বানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে অনিল আম্বানিকে (Anil Ambani) দিল্লিতে ইডির দফতরে হাজিরা দিতে হয়েছিল। প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। পাশাপাশি আর এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইও সমান্তরাল তদন্ত চালাচ্ছে এই মামলা সম্পর্কিত অভিযোগে।

আরও পড়ুন:২০০৭-এর পরে যাদের জন্ম তারা করতে পারবে না ধূমপান! ভারতের এই পড়শি দেশে জারি নির্দেশিকা
ব্যবসায়িক দুনিয়ায় অনিল আম্বানি (Anil Ambani) একসময় ছিলেন শীর্ষস্থানীয় শিল্পোদ্যোগীদের একজন। তবে বিগত দশকে সংস্থাগুলির আর্থিক বিপর্যয়, বিশাল ঋণের বোঝা এবং একের পর এক আইনি জটে পড়ে তাঁর সাম্রাজ্য কার্যত ধসের মুখে। এবার ইডির এই বিশাল অঙ্কের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণে নতুন করে চাপে পড়লেন শিল্পপতি।
এখন নজর ইডির পরবর্তী পদক্ষেপ ও আদালতের ভবিষ্যৎ নির্দেশে। অনিল আম্বানি (Anil Ambani) বা তাঁর সংস্থার পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।













