বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এ যেন একেবারেই বইয়ের লেখা গল্প। একদিকে যেখানে দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে গোটা রাজ্য, শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের নামে ভরেছে দুর্নীতির তালিকা। অন্যদিকে, সেখানেই সকলকে অবাক করে জীবিকা নির্বাহের জন্য অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) জেলার এগরা (Egra) ২ ব্লকের মঞ্জুশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান (Panchayat Pradhan) পূর্ণিমা মাইতি।
শাসকদলের (Trinamool Congress) চেয়ারে বসে তিনি, তবে নেই কোনো বিলাসিতার ছোঁয়া। শোচনীয় আর্থিক অবস্থা সাথেই বাড়িঘরের জরাজীর্ণ দশা। পঞ্চায়েতের প্রধান হিসেবে সামান্য কিছু ভাতা পানি পূর্ণিমাদেবী। তবেই কোনো অভিযোগ নেই। যতটুকু ভাতা পান তাতেই তিনি সন্তুষ্ট। বাকি জীবিকা নির্বাহের জন্য অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান তিনি।
খাতা কলমে শাসক দলের নেত্রী হলেও তার সংসার কিন্তু চলে অন্যের জমিতে দিনমজুরি করেই । জানা গিয়েছে তার বাড়ির আর্থিক অবস্থা খুবই শোচনীয়। তিনি যে বাড়িটিতে থাকেন সেটারও বেহাল দশা। তবে অন্য সমস্ত উদাহরণ গুলির মত অন্যায়ভাবে প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করাতে তিনি বিশ্বাসী নন। তাই দিন মজুরিই তার পেশা। তবে অবশ্যই তা নিজের দায়িত্ব, কর্তব্য পালনের শেষেই। প্রধানের কাজ করার পর যতটুকু সময় তার হাতে থাকে সেই সময়টা ক্ষেতেই কাটান পূর্ণিমা।
তার কথায়, আগে গ্রামের সবার আবাসের ঘর জুটলে তারপরেই তিনি নিজের জন্য ভাববেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দল করে সততার রাস্তায় চলাটাকেই উচিৎ বলে মনে করেন পূর্ণিমা মাইতি। এলাকাবাসীরও তাকে নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। স্থানীয় একজনের কথায়, সময়ে অসময়ে যেকোনো সমস্যায় আমরা প্রধানকে পাশে পাই।
আর সব থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বিরোধী শিবির বিজেপির প্রধানের প্রধানের বিষয়ে তেমন কোন অভিযোগ নেই। তারাও প্রধানের এভাবে মজুরি করে সংসার চালানোকে সমর্থন করেন। অন্যদিকে নিজের পেশা নিয়ে পূর্ণিমা মাইতি বলেন, প্রধান হওয়ার আগেও মাঠে কাজ করতাম। সেইমত এখনও অন্যের জমিতে দিনমজুরি করে পেট চালাই। তবে পঞ্চায়েত অফিসের যেত হয় বলে এখন কাজটা আগের চাইতে কম করি।