আতঙ্কের দ্বিতীয় নাম ‘এল নিনো’, গরমের সমস্ত রেকর্ড ছাড়াবে ২০২৪, কী বলছে আবহাওয়াবিদরা?

বাংলা হান্ট ডেস্ক : কথায় আছে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মুড স্যুইং হয় নারী জাতির। তবে আবহাওয়ার (Weather) মুড স্যুইং-র কাছে বোধহয় মেয়েরাও হার মেনে যাবে। যেখানে ফেব্রুয়ারি মাসে শীতের আমেজ উপভোগ করার কথা সেখানে মানুষ ফ্যানের ধুলো ঝাড়তে ব্যস্ত। একাধিক রাজ্যে কনকনে ঠান্ডা কমে, তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী। গত কয়েকদিনে দেশজুড়ে বিভিন্ন জেলায় গড়ে সাত ডিগ্রি করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা (Meteorologist)।

একদিকে ভারতের (India) বিভিন্ন রাজ্যে যখন ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া তখন দক্ষিণ ভারতে বাড়ছে রোদের দাপট। এইদিন IMD-র আবহাওয়া বিজ্ঞানী এ প্রসাদ জানিয়েছেন, ‘গত বছরের তুলনায় চলতি শীতের মরশুমে ন্যূনতম গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি মরশুমে দক্ষিণ ভারতের গড় সর্বাধিক তাপমাত্রা ছিল ৩১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত বছর ছিল ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাথাকাছি। গড়ে ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে এক বছরে।’

আবহাওয়া বিজ্ঞানী এ প্রসাদের কথা অনুযায়ী, এই গোটা বিষয়টা ঘটছে ‘এল নিনো’র (El Nino) প্রভাবে। এখন প্রশ্ন আসবে ‘কী এই এল নিনো’? বলে রাখা ভালো এটা একটা সামুদ্রিক ঘটনা ৷ পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে টপিক্যাল অঞ্চলে দেখা যায়। ভূপৃষ্ঠের জলের উষ্ণায়নের জেরে তৈরি হয় এল নিনো। যার সরাসরি প্রভাব পড়ে আবহাওয়ার উপর। কোথাও অতিবৃষ্টি তো কোথাও আবার অনাবৃষ্টির জেরে হবে খরা। ‘এল নিনো’র প্রভাবে গত বছর সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছে ভারতীয়রা৷ এখন‌ প্রশ্ন হল, চলতি বছর কী হতে চলেছে?

আরও পড়ুন : জ্বলছে সন্দেশখালি, চার দিন পর নীরবতা ভাঙলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

heatwave in odisha 1

‘এল নিনো’ প্রসঙ্গে এ প্রসাদ বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় এল নিনোর সর্বাধিক প্রভাব কাজ করছে। বঙ্গোপসাগরেও এবার এর প্রভাব পড়তে শুরু করবে। দক্ষিণ আমেরিকায় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হবে। অস্ট্রেলিয়ায় খরা দেখা যাবে। ভারত মহাসাগর উপকূলেও একই পরিস্থিতি তৈরি হবে। চলতি বছর গ্রীষ্মে অন্য বছরের তুলনায় গরম বাড়বে। এল নিনো’ই এর মূল কারণ।’ আবহাওয়াবিদদের মতে, সাধারণত এল নিনোর পরের গ্রীষ্মে হিটওয়েভ অনেক বেশি বেড়ে যায়। অর্থাৎ ২০২৪-এ সেটা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

আরও পড়ুন : মন্দির সংস্করণ থেকে ওভারব্রীজ, মোট ১৩টি প্রকল্প নিয়ে বড় ঘোষণা সৌমিত্র খাঁয়ের, লাভবান হবে বিষ্ণুপুর

বিজ্ঞানীদের মতে, একদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং অন্যদিকে ‘এল নিনো’, এই দুইয়ে মিলে রেকর্ড গরম পড়বে চলতি বছরে। তবে খুশির খবর এই যে, চলতি বছর জুন, অগাস্টের মধ্যেই ‘এল নিনো’র প্রভাব কাটাতে প্রবেশ করবে ‘লা নিনা’। আবহাওয়াবিদদের কথায়, ভারতে এল নিনো ENSO অবস্থায় রূপান্তরিত হলেও, বর্ষা গত বছরের তুলনায় ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে ঘূর্ণিঝড়ের দাপটও বাড়তে পারে।

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর