বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে এসআইআর (SIR) নিয়ে সোমবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করল নির্বাচন কমিশন। এই বৈঠকে নজর ছিল গোটা দেশের। নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত সেই বৈঠক থেকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আনলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার সুখবীর সিং সান্ধু এবং বিবেক যোশী।
কিভাবে শুরু হল বৈঠক?
বিকেল ৪.২৩ নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক শুরু হয়। প্রথমে সকলকে শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়ে জ্ঞানেশ কুমার বলেন, “সকলকে স্বাগত জানাই। ছট উপলক্ষে বিহারের মানুষজনকে শুভেচ্ছা জানাই। বিহারে SIR সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। একটিও ভুল কেউ ধরাতে পারেননি।” এরপর তিনি জানান, প্রথম পর্বে বিহারে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা SIR। এবার দ্বিতীয় দফায় হবে ১২টি রাজ্যে।
১২ রাজ্যে শুরু SIR, বাদ অসম
বিকেল ৪.৫০ নাগাদ কমিশনের তরফে জানানো হয়, বাংলাসহ ছত্তিশগড়, গুজরাট, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, গোয়া, আন্দামান ও নিকোবর, লাক্ষাদ্বীপ এবং পুদুচেরিতে মঙ্গলবার থেকেই শুরু হচ্ছে SIR। তবে অসমে এনআরসি প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে এবং তাদের নিজস্ব বিধান থাকায় সেখানে SIR হচ্ছে না বলে জানানো হয়।
সময়সূচি ও প্রস্তুতি ঘোষণা কমিশনের
বিকেল ৪.৪৯-এ কমিশনের তরফে জানানো হয়, ২৮ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে বিএলও-দের প্রশিক্ষণ। এরপর ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি ফর্ম বিলি হবে। ৯ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হবে খসড়া ভোটার তালিকা। ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে ৮ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত নাম বাদ বা সংশোধনের আবেদন জানানো যাবে। ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে আবেদন খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা।
কাদের দায়িত্ব কী?
কারা কোন দায়িত্বে থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তরে কমিশন ব্যাখ্যা করে বলে, অযোগ্য ভোটারদের নাম যাতে তালিকায় না ঢোকে, তার দায়িত্ব থাকবে ERO বা এনরোলমেন্ট অফিসারদের উপর। এই প্রক্রিয়ায় আন্দামান, বাংলা, ছত্তিশগড়, গোয়া, মধ্যপ্রদেশ, পুদুচেরিতে প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশি বিএলএ কাজ করবেন।
আজ রাত ১২টা থেকে কমিশনের পুরনো ভোটার তালিকা ‘ফ্রিজ’ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তারপর থেকেই পাওয়া যাবে এনুমারেশন ফর্ম। ওই ফর্মের ভিত্তিতেই হবে নাগরিকদের লিঙ্কিং ও ম্যাচিং। প্রবাসীদের কথা মাথায় রেখে অনলাইনে ফর্ম ফিল-আপের সুবিধা চালু করা হচ্ছে। নিরক্ষর ভোটারদের সাহায্যে তিনবার করে প্রতিটি বাড়িতে যাবেন বিএলওরা।
কে, কবে, কীভাবে আবেদন করবেন?
জানানো হয়েছে যে, যাঁদের ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাঁরাও ফর্ম ৬ পূরণ করতে পারবেন। যাঁদের নাম বাদ যাবে, তাঁরা প্রথমে জেলাশাসককে জানাবেন, তারপর তাঁরা ফর্ম ৬, ৭ বা ৮ পূরণ করে সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন। কমিশন জানিয়েছে, ২০০৩ সালের সূচিতে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের আর নতুন করে কোনও কাগজ দিতে হবে না। যদি বাবা-মায়ের নাম তালিকায় থাকে, তাতেও আলাদা প্রমাণের প্রয়োজন হবে না।

আরও পড়ুনঃ মঙ্গলবার থেকে বাংলায় শুরু SIR, কিভাবে হবে সমীক্ষা? কী কী নথি লাগবে? জেনে নিন
কমিশন জানিয়েছে, সব তথ্য কম্পিউটার ম্যাচিং ও ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে যাচাই করে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভারতীয় সংবিধানের ৩/২৪/সি ধারা অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা এবং কর্মী জোগান দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্যের। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বও রাজ্যের প্রশাসনের উপর বর্তাবে। সব শেষে জ্ঞানেশ কুমার বলেন, “আমরা আশা করি, সমস্ত রাজ্য তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে এবং SIR প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সফলভাবে সম্পন্ন হবে।”













