বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একের পর এক দুর্নীতি এবং প্রতারণা মামলায় কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়ে চলেছে বাংলার বুকে। এসএসসি মামলায় সর্বপ্রথম পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি নগদ অর্থ উদ্ধার করে ইডি (Enforcement Directorate)।এর কয়েকদিন যেতে না যেতেই সম্প্রতি আমির খান (Amir Khan) নামে এক যুবকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১৭ কোটির অধিক টাকা। এ সকল মামলায় ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের সর্বত্র আর এবার অভিযুক্তর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) কাউন্সিলর এবং রাজ্য মন্ত্রিসভার এক প্রভাবশালী সদস্যের যুক্ত থাকার খবর মিলছে।
উল্লেখ্য, এসএসসি মামলায় পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্লাট থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাংলায়। এ সকল ঘটনায় ইতিমধ্যেই অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এর মাঝেই সম্প্রতি গার্ডেনরিচে পরিবহন ব্যবসায়ী নিসার আলির ছেলে আমির খানের বাড়ি থেকে ১৭.৩২ কোটি টাকা উদ্ধার করে তদন্তকারী অফিসাররা আর এবার এই মামলায় যুক্ত হলো তৃণমূল কাউন্সিলর এবং অপর এক প্রভাবশালী সদস্যের নাম।
কয়েক সপ্তাহ পূর্বে আমির খানের বাড়ি থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ উদ্ধার করার পর আত্মগোপন করে সে। গত শনিবার উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যেই পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাকে। এর মাঝেই এবার এই কাণ্ডে তৃণমূল কাউন্সিলর এবং মন্ত্রিসভার এক প্রভাবশালী সদস্যের যুক্ত থাকার খবর সামনে উঠে আসলো।
কিভাবে এ সকল তথ্যের সন্ধান পেল ইডি? গার্ডেনরিচে আমির খানের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পরবর্তী সময় নিউটাউনে অভিযুক্তর বান্ধবীর নামে থাকা ভাড়া ফ্ল্যাটে সন্ধান চালায় তদন্তকারী অফিসাররা। পরবর্তীতে একাধিক মোবাইলের সিম কার্ড উদ্ধার করা হয় এবং এই সকল সূত্র ধরেই সামনে উঠে আসে তৃণমূল কাউন্সিলরের নাম। অভিযোগ, ওই কাউন্সিলর অভিযুক্তর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলত তবে এক্ষেত্রে সরাসরি নয়, বরং তার এক ভাইয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখা হত বলে খবর। একইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরের মাধ্যমে আমিরের সঙ্গে মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী এক সদস্য যোগাযোগ রাখতেন বলে দাবি ইডির।
তাদের মতে, আমির খানের গেমিং অ্যাপ সংক্রান্ত প্রতারণা মামলায় এদের সকলেরই যোগসূত্র রয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রভাবশালী ওই কাউন্সিলরের মাধ্যমে প্রতারণার মোটা টাকা উপরমহলে পৌঁছে যেত। বর্তমানে আমিরের বাবা তথা পরিবহন ব্যবসায়ী নিসার খানকে নিয়েও বিস্তর জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ছেলের বাড়ি থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই যোগাযোগ একপ্রকার বন্ধ করে দিয়েছেন নিসার আলি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেফতার করার পর আমিরকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। তবে এক্ষেত্রে অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি-ও। এখন দেখার, এই মামলায় অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে দুর্নীতির নয়া কোন দিক সামনে উঠে আসে।