বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অবশেষে আশঙ্কাই হলো সত্য! গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে যে সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee), সেটাই হলো সত্যি। আগামী শুক্রবার কয়লা পাচার কাণ্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেককে সমন পাঠিয়ে বসল ইডি (ED)। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে বিজেপির দিকে একের পর এক অভিযোগের আঙ্গুল তির ছুড়ে দিয়েছে শাসক দল।
কয়লা পাচার কাণ্ডে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর নজর রয়েছে তদন্তকারী অফিসারদের। এক্ষেত্রে কলকাতার পাশাপাশি দিল্লিতেও একাধিকবার ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয় অভিষেককে। তবে শুধুমাত্র অভিষেক নন, তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তলব করে গোয়েন্দা অফিসাররা। এই মামলায় অভিষেককে ফাঁসানো হয়ে চলেছে এবং এর পিছনে যে বিজেপির প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে, সে বিষয়ে অতীতে একাধিকবার অভিযোগ করে তৃণমূল কংগ্রেস আর এর মাঝে এদিন ফের একবার অভিষেককে সমান পাঠালো ইডি। আগামী শুক্রবার কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা দিবস উপলক্ষ্যে বেশ কয়েকটি আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই এবং ইডির মতো সংস্থাগুলির নিরপেক্ষতা নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই তিনি বলেন, “আজকের সভায় অভিষেক ভালো বক্তৃতা দিয়েছে। এবার দেখবেন, ওর কাছে না তদন্তকারী সংস্থার নোটিশ পৌঁছে যায়। এর আগেও ওকে তলব করা হয়েছে। এমনকি ওর স্ত্রীও ছাড় পায়নি। আবারও নোটিশ পাঠানো হতে পারে।”
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী কটাক্ষের সুরে বলেন, “কোনো দিন দেখবেন, অভিষেকের দুই বছরের বাচ্চাকেও নোটিশ ধরিয়ে বসবে ওরা।” তবে শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, পরবর্তীতে বক্তৃতা দিতে উঠে অভিষেকের গলাতেও শোনা যায় একই সুর।
বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “২১ শে জুলাই ‘শহীদ দিবস’ উপলক্ষ্যে আমাদের বড় সমাবেশ হয় আর ঠিক এরপরের দিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছে যায় তদন্তকারী অফিসাররা।” অভিষেকের প্রশ্ন, এক্ষেত্রে একদিন, দুদিন কিংবা তিনদিন দেরি না করে সমাবেশের পরের দিনই পৌঁছে যায় ইডি। এর পিছনে কোন কারণ রয়েছে? পরবর্তীতে একপ্রকার ভবিষ্যৎবাণী করে তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “কিছু ঘটবে। লিখে রাখুন, আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে ওরা কিছু একটা ঘটাবে।” আর অভিষেকের সেই ভবিষ্যৎবাণীই এদিন সত্যি বলো। আগামী শুক্রবার তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করে বসলো ইডি।
ইতিমধ্যে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাংলায়। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “একুশে জুলাইয়ের পর কি হয়েছে, তা সকলে দেখতে পেয়েছেন। এ সকল তলবের পিছনে যে আসলে বিজেপি নেতারা রয়েছে, তা প্রমাণিত।” অভিষেক প্রসঙ্গে কুণালের দাবি, “ওরা আসলে অভিষেককে ভয় পেয়ে গিয়েছে। সেই জন্য এইভাবে তলব করা হচ্ছে।”