দুবাইয়েই পাচার ২ হাজার কোটি! বাংলায় মোট কত টাকার রেশন দুর্নীতি? সমস্ত হিসেব সামনে আনল ED

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছরের শেষ থেকে হঠাৎ রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যে। রেশন দুর্নীতির অভিযোগে রাতারাতি ইডির (Enforcement Directorates) হাতে গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্ৰিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) ওরফে বালু। মন্ত্রীর কিছুদিন আগেই এই মামলায় গ্রেফতার হন বাকিবুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী। আর এই বালু-বাকিবুর জুটি গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাদের সূত্র ধরে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনছেন গোয়েন্দারা। ২৩ পেরিয়ে বর্তমানে ২৪। আর নতুন বছরের শুরুতেই রেশন দুর্নীতি নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি ইডির।

শনিবার আদালতে ইডির দাবি, এক কোটি, দু’কোটি বা ১ হাজার কোটিও নয়, মোট ১০ হাজার কোটি টাকার রেশনে দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যে। ইডির আরও দাবি, এর মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা সদ্য ধৃত তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যর সংস্থার মাধ্যমে দুবাইয়ে পাচার করা হয়েছে। এদিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয় শঙ্কর আঢ্যকে। সেখানেই এই মারাত্মক দাবি করে ইডি।

   

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালেই উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Pargana) বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যর শ্বশুরবাড়িতে হানা দেয় ইডি। টানা ১৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর অবশেষে রাতে গ্রেফতার করা হয় শঙ্কর আঢ্যকে। সূত্রের খবর, শঙ্কর আঢ্যর শ্বশুরবাড়ি থেকে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিও বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতে জানায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠি থেকেই শঙ্করের নাম সামনে এসেছে।

এদিন স্পষ্ট ভাবেই ED জানায়, রেশনে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তবে তদন্ত যত এগোবে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা ইডির। শঙ্করকে কেন গ্রেফতার করা হল? এদিন বিচারকের এই প্রশ্নে ED জানায়, শঙ্করের সঙ্গে সংযুক্ত ৯০টি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার খোঁজ মিলেছে। এই সংস্থা গুলির মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিময় করে বিদেশে পাচার হয়েছে।

আরও পড়ুন: শেখ শাহজাহানকে নিয়ে মিথ্যে দাবি করেছেন কুণাল! তৃণমূল মুখপাত্রের পাল্টা জবাব দিল ED

আদালতে ইডির প্রশ্ন, যে টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে সেই টাকা যে দেশবিরোধী কাজ কর্মে ব্যবহার করা হচ্ছে না তার কী গ্যারান্টি রয়েছে? ওদিকে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রসঙ্গ উঠতেই ‘থ’ হয়ে যান খোদ বিচারপতি। বিচারপতি বলেন, “এর পরও আমরা বলি, আমাদের রাজ্য গরিব? আমরা গরিব রাজ্যে থাকি?”

edff

কিভাবে নাম উঠে এল শঙ্করের? এদিন ইডি আদালতে জানায়, কিছুদিন আগে যেদিন আদালতের নির্দেশে হাসপাতালে জ্যোতিপ্রিয়ের কেবিন থেকে সিসিটিভি ফুটেজ তুলে নেওয়া হয়, তার পরই তার সঙ্গে মন্ত্রী কন্যা প্ৰিয়দর্শনী দেখা করতে যায়। তার কাছে থেকেই জ্যোতিপ্রিয়র লেখা এক চিঠি উদ্ধার হয়। ইডি তরফে সেই চিঠি তুলে দাবি করা হয় চিঠিতে কার কাছে পাওনা কত, কাকে কত টাকা দিতে হবে, সেই সব কিছুর উল্লেখ ছিল। সেই চিঠি থেকেই শঙ্করের নাম সামনে যে বলে আদালতে জানায় ইডি।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর