সুদের টাকা পুরোটা মিলবে তো? পিএফ নিয়ে নতুন প্রস্তাব কেন্দ্রের

Updated on:

Updated on:

EPFO Interest Rule May Change
Follow

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত কোটি কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ ভরসা প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পিএফ। বেতন থেকে কেটে নেওয়া টাকা আর সংস্থার দেওয়া অর্থ মিলিয়েই এই তহবিল তৈরি হয়। সেই টাকা লগ্নি করে যে লাভ হয়, তার বড় অংশ সুদ হিসেবে পান গ্রাহকরা। কিন্তু এবার সেই নিয়মেই বদল আনতে চাইছে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন (EPFO)।

ইপিএফও (EPFO) বিভিন্ন ঋণপত্র ও লগ্নিপত্রে এই টাকা বিনিয়োগ করে

বেসরকারি কর্মীদের বেতন থেকে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক কেটে পিএফ অ্যাকাউন্টে জমা হয়। একই পরিমাণ টাকা দেয় সংস্থাও। অর্থাৎ, এই পুরো টাকাটাই কর্মীদের নিজের উপার্জন। সরকার শুধু সেই টাকা নিরাপদে রেখে বাজারে লগ্নি করে। ইপিএফও (EPFO) বিভিন্ন ঋণপত্র ও লগ্নিপত্রে এই টাকা বিনিয়োগ করে। সেখান থেকে যে সুদ ও লাভ আসে, তা দিয়েই প্রতি বছর গ্রাহকদের পিএফে সুদ দেওয়া হয়। কিন্তু এবার সেই ব্যবস্থায় বদল আসতে পারে। ইপিএফও (EPFO) একটি নতুন প্রস্তাব এনেছে, যেখানে বলা হয়েছে লগ্নি থেকে আসা সব লাভ আর গ্রাহকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে না। সেই লাভের একটা বড় অংশ রাখা হবে একটি আলাদা তহবিলে। এই প্রস্তাব ইতিমধ্যেই পিএফ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় অছি পরিষদের সামনে পেশ করা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

এই নতুন তহবিলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইন্টারেস্ট স্টেবিলাইজেশন রিজার্ভ’। প্রস্তাব অনুযায়ী, সুদ ও পুরনো লগ্নিপত্র বিক্রি করে যে লাভ হবে, তা যদি একটি নির্দিষ্ট সীমার বেশি হয়, তাহলে সেই অতিরিক্ত টাকা আর গ্রাহকদের দেওয়া হবে না। তা জমা থাকবে এই রিজার্ভ ফান্ডে। কেন্দ্রের যুক্তি, ভবিষ্যতে যাতে (EPFO) সুদের হার খুব বেশি ওঠানামা না করে, তার জন্যই এই ব্যবস্থা।

কিন্তু এখানেই উঠছে প্রশ্ন। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে পিএফের (EPFO) মোট করপাস ছিল প্রায় ২৪ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে সেই অঙ্ক আরও বেড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, এই রিজার্ভ তহবিল মোট করপাসের ১০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। অর্থাৎ, প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত আলাদা করে রাখা হতে পারে। এত বড় অঙ্কের টাকা কেন সরিয়ে রাখা হবে, তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ এই টাকা তো গ্রাহকদেরই প্রাপ্য।

সুদের হার নিয়েও নতুন শর্ত দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পিএফের (EPFO) সুদের হারে বড় পরিবর্তন করা যাবে না। শেষ তিনটি আর্থিক বছরে যে সুদ দেওয়া হয়েছে, তার গড় হারের থেকে সর্বাধিক এক শতাংশ কম বা বেশি সুদ দেওয়া যাবে। যেমন, যদি গত তিন বছরে গড় সুদ ৭ শতাংশ হয়, তাহলে কোনও বছরেই ৮ শতাংশের বেশি সুদ দেওয়া যাবে না। এছাড়াও বলা হয়েছে, গ্রাহকদের দেওয়া সুদের হার অবশ্যই গত তিন বছরের গড় মূল্যবৃদ্ধির হার বা কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্সের থেকে অন্তত আধ শতাংশ বেশি হতে হবে। বাস্তবে গত তিন বছরে মূল্যবৃদ্ধির গড় হার ছিল চার থেকে পাঁচ শতাংশের মধ্যে। ফলে এই নিয়মেও গ্রাহকদের খুব বেশি বাড়তি লাভ হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন অনেকে।

EPFO New Rules Easy PF Withdrawal for Marriage Expenses

 

আরও পড়ুনঃ দু-তিনজনের জন্য দিল্লিতে জরুরী বৈঠক ডাকলেন অভিষেক, কারা তাঁরা? কী ঘটছে তৃণমূলের অন্দরে?

সব মিলিয়ে পিএফের (EPFO) সুদ নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত টাকার একটি বড় অংশ আলাদা তহবিলে রাখার প্রস্তাব ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এখন দেখার, এই প্রস্তাব চূড়ান্ত হলে পিএফ গ্রাহকদের সুদের অঙ্কে বাস্তবে কতটা প্রভাব পড়ে।