বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে প্ৰযুক্তি সংস্থাগুলি ২০২৩ সালে লাগাতারভাবে ছাঁটাই (Layoff) চালিয়েছে। ২০২৪ সালেও পরিস্থিতি একই। ছাঁটাই চলছেই। এদিকে, প্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে লাগাতার ছাঁটাইয়ের জেরে বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি সংস্থার কর্মীদের মধ্যে যাঁরা এখনও কাজে বহাল রয়েছেন তাঁদের প্রতিনিয়ত ভীতসন্ত্রস্ত থাকতে হচ্ছে। মনে ভয় রয়েছে হয়তো আজই খোয়াতে হবে চাকরিটা। উল্লেখ্য যে, প্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে ২০২৩ সাল জুড়ে কত সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই হয়েছে, সেসম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা গিয়েছে।
২০২৩ সালে ছাঁটাই কর্মীর সংখ্যা ২ লক্ষ ৬২ হাজার ৫৯৫ জন। মোট ১১৯০ টি প্রযুক্তি সংস্থা কর্মী ছাঁটাই করেছে। যে সমস্ত নামি প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মী ছাঁটাই চলছে সেই সংস্থাগুলির নাম একনজরে দেখে নেওয়া যাক। এই সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে নোকিয়া, পেপাল, গুগল, ইউটিউব, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, ইউনিটি, ডিসর্ট, ইবে, রায়ট গেমস, টিকটক, সেলসফোর্স, ফ্লিপকার্ট, সুইগি, উইপ্রোর মতো সংস্থা।
এদিকে, ২০২৪ সালে ধারাবাহিকভাবে গোটা বিশ্বজুড়ে কর্মী ছাঁটাই অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই বিষয়ে Layoffs.fyi নামে একটি ওয়েবসাইট যে তথ্য পেশ করেছে তাতে জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ৩২ হাজার প্রযুক্তি সংস্থার কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। চলতি বছরের আগামী মাসগুলিতেও এই পরিস্থিতির অন্যথা হবে না বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গুগল, অ্যামাজন, মেটা এবং অন্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলির তরফে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, আর্থিক ক্ষতি এড়াতে কর্মী ছাঁটাই করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে ছাঁটাই করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ১১৫ টি সংস্থায় কর্মী ছাঁটাই ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই শুরু চলছে।
আরও পড়ুন: জাহাজের ধাক্কায় বেসামাল, হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বিখ্যাত ব্রিজ! ভাইরাল ভিডিও
এমতাবস্থায়, চলতি বছরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছে কিসকো। তবে কত সংখ্যক কর্মী ইতিমধ্যে ছাঁটাই করা হয়েছে সেসম্পর্কে কিসকো কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্টভাবে কিছু জানায়নি। যদিও সূত্রের খবর, কয়েক হাজার কর্মীর চাকরি নিয়েছে কিসকো কর্তৃপক্ষ। এদিকে, কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে ভারতের প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরতদের একাংশ কাজ হারিয়ে কাজের বাজারে বিপাকে পড়েছেন। বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হু-হু করে বাড়ছে। বাড়ছে সন্তানের লেখাপড়ার খরচ-সহ আনুষঙ্গিক খরচ। এই পরিস্থিতিতে কাজ হারানো প্রযুক্তি সংস্থার কর্মীদের অসহায় অবস্থা সহজেই অনুমেয়।
আরও পড়ুন: হতাশায় ডুবে রয়েছে সমগ্ৰ বিশ্ব! শীর্ষে রয়েছে এই দেশ, কোথায় দাঁড়িয়ে ভারত?
এদিকে, প্রযুক্তি সংস্থাগুলি নির্বিচারে কর্মী ছাঁটাই করছে কেন জানা গিয়েছে তাও। প্রযুক্তি সংস্থাগুলির কর্তৃপক্ষের দাবি, অতি দক্ষ কর্মী ছাড়া বাকি কর্মীদের বেতন-সহ অন্যান্য ব্যয়ভার বহন করা আর লাভজনক নয়। এজন্য কর্মী ছাঁটাই করে সংস্থা পুনর্গঠিত করা হচ্ছে। প্রযুক্তি সংস্থাগুলির তরফে এই যুক্তি দর্শানো হলেও প্রকৃত কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, ওই সংস্থাগুলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যাপক হারে ব্যবহার করায় কর্মী সঙ্কোচন চলছে। গুগল, মাইক্রোসফট, মেটার মতো নামি সংস্থাতেও ব্যাপক হারে চালু হয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার। ফলে, সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠছে বিজ্ঞান আর্শীবাদ নাকি অভিশাপ?