দুহাত নেই, তাও চালাচ্ছিলে রিক্সা! বিরজুর পরিশ্রমকে স্যলুট জানিয়ে চাকরি দিলেন মহিন্দ্রা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আর পাঁচজন মানুষের থেকে তিনি অনেকটাই আলাদা। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে হাত এবং পা নেই তাঁর! কিন্তু রয়েছে অসম্ভব মনের জোর। আর সেই জোরকে সম্বল করেই আজ বিরজু রাম উঠে এসেছেন খবরের শিরোনামে। তবে, এই কাজে যিনি সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছেন তিনি হলেন ভারতের অন্যতম বিজনেস টাইকুন তথা মাহিন্দ্রা গ্রূপের কর্ণধার আনন্দ মাহিন্দ্রা।

পাশাপাশি, বিরজুকে দেওয়া কথাও রেখেছেন আনন্দ। দিল্লির মাহিন্দ্রা লজিস্টিক কোম্পানিতে EV চার্জিং ইয়ার্ডসে চাকরি পেয়েছেন বিরজু। আর সেই ঘটনাই টুইটারের মাধ্যমে প্রকাশ করে আনন্দ জানিয়েছেন, “প্রত্যেকের জীবনেই একটি ‘ব্রেক’ দরকার।” পাশাপাশি, মাহিন্দ্রা লজিস্টিক কোম্পানিকে ধন্যবাদও জানান তিনি।

এদিকে, বিরজুকে চাকরি দেওয়া নিয়ে ইউটিউবে যে অসংখ্য ভুয়ো ভিডিও রয়েছে তারও অবতারণা করতে দেখা যায় আনন্দকে। সেই সব ভিডিওতে জানানো হয়েছে মন্দির আর মসজিদের বাইরে গিয়ে নাকি ভিক্ষা করতে দেখা যায় বিরজুকে। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এদিকে, বিরজুর মত একজন শারীরিক প্রতিবন্ধীকে সামনে এনে যেভাবে আনন্দের মত স্বনামধন্য শিল্পপতি চাকরির সুযোগ করে দিয়েছেন তার জন্য আনন্দকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা।

এর আগেও আনন্দ বহুবার সমাজের বিভিন্ন প্রান্তিক শ্রেণির মানুষদের কথা সামনে এনেছেন। পাশাপাশি, তুলে ধরেছেন তাঁদের বিভিন্ন প্রতিভার কথাও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে একটি ভিডিও টুইটারে শেয়ার করেন আনন্দ। ওই ভিডিওতে দেখা যায় যে, হাত এবং পা ছাড়াই একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রাজপথে রিকশা চালাচ্ছেন। তাঁর ওই রিকশায় লাগানো রয়েছে একটি স্কুটির ইঞ্জিন। পাশাপাশি, রিকশাটি কেমন চালাতে হয় তাও নিজে চালিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন তিনি।

এখানেই শেষ নয়, পথচলতি মানুষদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দিতে দেখা যায় তাঁকে। দু’টি সন্তান এবং স্ত্রী সহ বৃদ্ধ বাবাকে দেখভালের জন্য দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ওই রিকশা চালাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। মোট ১ মিনিট ৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিও দেখে আনন্দ টুইট করেন যে, “আমি জানিনা ওনার বয়স কত বা ওনার বাড়ি কোথায়, কিন্তু আমি বাকরুদ্ধ ওই ভদ্রলোককে দেখে যিনি তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় আটকে না থেকে সেটিকে নিয়েই এগিয়ে চলেছেন”।

এখানেই শেষ নয়, আনন্দ আরও একধাপ এগিয়ে “মাহিন্দ্রা লজিস্টিক”কে ওই পোস্টে ট্যাগ করে জানতে চান যে, প্রতিবন্ধী ওই ব্যক্তিকে মাহিন্দ্রার লাস্ট মাইল প্রজেক্টে “বিজনেস এসোসিয়েট” করা যায় কিনা! তারপরেই ব্যক্তিটির খোঁজ করে আনন্দের টিম। শেষে পাওয়া যায় ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি তথা বিরজুকে। কথা মতো এখন বিরজু মাহিন্দ্রারই একজন সক্রিয় কর্মী।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর