PM Cares Fund কি ?
● PM Cares Fund হল প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সহযোগিতা এবং বিপর্যয় ত্রাণ তহবিল। এটি এমন একটি তহবিল যা নিয়ে প্রশ্ন করা যায় না।
তদুপরি কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী সম্প্রতি একটি টুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘ করোনা মোকাবিলায় যেখানে কোনও পরীক্ষা নেই, হাসপাতাল নেই, শয্যা নেই, ভেন্টিলেটর নেই, অক্সিজেন নেই, এমনকি নেই কোনও ভ্যাকসিনও। তবে কি কেবল উদযাপনের জন্যই রয়েছে PM Cares?’ তারপরই#PMCares টুইটারে শীর্ষ ট্রেন্ডে উঠে এসেছিল। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে তুমুল বিতর্কও শুরু করেছিল। এরপরই পিএম কেয়ার ফান্ড নিয়ে কিছু তথ্য চলে এসেছে প্রকাশ্যে।
PM Cares Fund কেন গঠন করা হয়েছিল ?
● ২০২০ সালের ২৭ মার্চ, ভারত সরকার কোভিড -১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পিএম কেয়ার ফান্ড তৈরি করেছিল। এতে সাধারণ মানুষ নিজের ইচ্ছানুসারে অনুদান দিতে পারেন। এটিতে চার জন সদস্য রয়েছেন- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিথারমন। তাঁরাই এই তহবিল ব্যয় করার জন্য দায়বদ্ধ।
এখনও পর্যন্ত কত অনুদান জমা পড়েছে এই ফান্ডে ?
● PM Cares Fund- এ অনুদান এখনও দেওয়া যেতে পারে। সরকার এ বিষয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি। জানিয়ে দি, এই তহবিল আরটিআইয়ের আওতায় আসে না। তবে ২৮ শে মার্চ, প্রধানমন্ত্রী মোদীর একটি টুইটের পরে, দাতারা তাঁদের অনুদান প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে শুরু করেছিলেন।
তবে জানা গিয়েছে ২০২০ সালের ৪ জুন পর্যন্ত ওই ফান্ডে মোট ৯,৬৯০ কোটি টাকা অনুদান এসেছে। নিচে কোথা থেকে কত টাকা এল তার একটি গ্রাফিক্সের সাহায্যে পুরো হিসাব তুলে ধরা হল—-
কোথা থেকে এল ? | কত এল ? |
সরকারি সংস্থা, মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা, সরকারি কর্মীদের বেতন, সরকারি ব্যাঙ্ক, সিপিএফ, সরকারি টেলিকম কোম্পানি, সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান | ৫৩৪৯.০৪ |
কর্পোরেট হাউস, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, বেসরকারী অফিস, বেসরকারী ব্যাংক, বেসরকারী সংস্থায় কর্মরত কর্মচারীদের বেতন, এনজিও | ৪২২৩.০৩ |
খেলোয়াড়, বিসিসিআই, ফুটবল ক্লাব, ফুটবল দল, কল্পনা স্পোর্টস অ্যাপ | ৫৩.৩৩ |
বলিউড তারকা, টিভি অভিনেতা, ইউটিউবার | ৩৭.৭৫ |
ব্যক্তিবিশেষ (প্রধানমন্ত্রীর মা হিরিবাও তার সঞ্চয় থেকে 25000 দিয়েছেন)। | ২৬.৯২ |
মোট | ৯৬৯০.০৭ |
পিএম কেয়ার ফান্ড কোথায়-কত-কীসে ব্যয় করা হয়েছে ?
● ব্যয় ১ – PMO ১৩ মে ২০২০ সালে ৩১০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে জানিয়েছিল। যার মধ্যে ৫ হাজার মেড ইন ইন্ডিয়া ভেন্টিলেটর, ২ হাজার কোটি টাকা মুল্যের বিনিময়ে কেনার কথা ছিল। সে সময় দেশে ভেন্টিলেটরগুলির অভাব ছিল। মহামারীটির আগে প্রতি বছর দেশে কেবলমাত্র ৩৩৬০টি ভেন্টিলেটর তৈরি করা হচ্ছিল।
● ব্যয় ২ – করোনা অতিমারির দ্বিতীয় বৃহত্তম সমস্যাটি ছিল অভিবাসী শ্রমিকদের বাড়িতে পৌঁছানোর বিষয়টি। তাই অভিবাসী শ্রমিকদের সহায়তার জন্য এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল সে সময়।
● ব্যয় ৩ – সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটি ছিল ভ্যাকসিন। তখন ভ্যাকসিন গবেষণায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করার কথা বলা হয়েছিল।
● ব্যয় ৪ – ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, PM Cares Fund-র ব্যয়ের সেক্রেটারি সোমনাথন বলেছিলেন যে করোনার ভ্যাকসিন প্রবর্তনের প্রথম পর্যায়ে ৮০ শতাংশ পিএম কেয়ার ফান্ড থেকে দেওয়া হচ্ছে। এটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ২,২০০ কোটি টাকা। আসলে, ২০২০ সালের বাজেটে করোনার ভ্যাকসিনের জন্য কোনও বাজেট বরাদ্দ করা হয়নি। সুতরাং, জানুয়ারী থেকে মার্চ ২০২১ এর মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আসতে, তার ব্যয়টি প্রধানমন্ত্রী কেয়ারস তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছিল।
● ব্যয় ৫ – করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিয়েছে। টাই এখন PM Cares Fund-র সাহায্যে মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, ছত্তিসগড়, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থানের ১২ টি রাজ্যে ১০০ টি হাসপাতালে অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন মেডিকেল অক্সিজেনও আমদানি করা হবে।
নিচে প্রদত্ত গ্রাফিক্সের সাহায্যে অতিসহজেই দেখে নিতে পারেন খরচের হিসাবটি—
কীসে ব্যয় ? | কত ব্যয় ? |
দেশীয় ভেন্টিলেটর উৎপাদন | ২ হাজার কোটি |
পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছন | ১০০ কোটি |
প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রবর্তন | ২,২০০ কোটি |
অক্সিজেনের জোগান | উল্লেখ নেই |
১৩ মে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট খরচ | ৩,১০০ কোটি |
২০২০ সালের আগস্টে একটি আরটিআইয়ের প্রতিক্রিয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছিল যে অন্ধ্রের সরকারী সংস্থা এএমটিজেড এবং গুজরাট ভিত্তিক বেসরকারী সংস্থা জ্যোতি সিএনসির তৈরি ভেন্টিলেটর ক্লিনিকাল পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। এগুলি হল সেই সংস্থা যাদের পিএম কেয়ার ফান্ডের টাকায় ভেন্টিলেটর তৈরির চুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
জ্যোতি সিএনসি ১২১ কোটি টাকায় ৫০০০ ভেন্টিলেটর এবং ৫০০ কোটি টাকার এএমটিজেড ১৩,৫০০ ভেন্টিলেটর তৈরি করবে। এর আগে, পিএম কেয়ার তহবিল থেকে ১০,০০০ টি ভেন্টিলেটর এবং দুটি ক্লিনিকাল ট্রায়াল ব্যর্থ হওয়ার ছিল। পরে অবশ্য তা কাজ চালিয়ে যায়।
সম্প্রতি, অগওয়ার সিইও দিবাকর বৈশ বলেছিলেন, “আমরা সরকারের নির্দেশে ১০,০০ টি ভেন্টিলেটর তৈরি করেছি। তবে এক বছর পরেও সরকার কেবল পাঁচ হাজার ভেন্টিলেটর আমাদের কাছ থেকে নিতে সক্ষম হয়েছে। পাঁচ হাজার এখনও আমাদের গুদামে পড়ে আছে।
পরে সরকারী সংস্থা এইচএলএলকে ১৩,৫০০ ভেন্টিলেটরের চুক্তি কমিয়ে ১০,০০০ করে দেওয়া হয় এবং চেন্নাই ভিত্তিক সংস্থা ট্রিভিট্রনকেও ৩০০০ অগ্রিম ও ৭০০০ বেসিক ভেন্টিলেটর তৈরির কাজ দেওয়া হয়েছিল। এ জন্য ৩৭৩ কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
তথ্য অনুসারে ট্রিভিট্রন ভেন্টিলেটর তৈরিও করে ফেলেছিল। কিন্তু টেন্ডার প্রত্যাহারের জন্য এএমটিজেড এবং এইচএলএল এর মধ্যে দন্দ বেধেছিল এবং একটিও ভেন্টিলেটর সরবরাহ করা হয়নি।