বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: বাংলা ছেড়েছেন তারকা মহিলা ক্রীড়াবিদ স্বপ্না বর্মণ। পুজো চলাকালীনই গুজরাতে আয়োজিত ন্যাশনাল গেমসে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন, তবে বাংলা নয়, মধ্যপ্রদেশের ক্রীড়াবিদ হিসাবে। ওই প্রতিযোগিতায় বাঙালিদের মুখ উজ্জ্বল করে একটি জাতীয় রেকর্ড করে তিনি মোট দু’টি সোনা নিজের ঝুলিতে পুরেছেন। আনন্দের মধ্যেও বাংলার বঞ্চনা কষ্ট দিচ্ছে স্বপ্নাকে। প্রতিযোগিতা শেষে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাংলা ছাড়ার প্রধান কারণ আর্থিক সাহায্য ও যোগ্য সন্মান না-পাওয়ার ক্ষোভ।
ন্যাশনাল গেমসে স্বপ্না বর্মন হাই জাম্প ও হেপ্টাথলনে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। হাই জাম্পে ন্যাশনাল রেকর্ড ভেঙে দেন। তখনই অনেকের টনক নড়ে যে একজন প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদকে হারিয়েছে বাংলা। কিন্তু স্বপ্না স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি নিজের ভিটে ছাড়ছেন না। নিজের পরিবারের সাথে জলপাইগুড়ির পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষপাড়াতেই বসবাস করবেন তিনি। তবে জাতীয় পর্যায়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলিতে তিনি বাংলার বদলে মধ্যপ্রদেশের হয়ে ট্র্যাকে নামবেন।
অনেক অভিমান নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বপ্না। তিনি যখন এশিয়ান গেমসে সোনা জিতে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন তখন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে চার কাঠা জমি পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি রাজ্য সরকার। সেই নিয়ে ক্ষোভ বর্তমান বাঙালি ক্রীড়াবিদের মনে।
স্বপ্না এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, “আমার আগে অবধি এশিয়ান গেমসে যে ক্রীড়াবিদরা স্বর্ণপদক নিয়ে ফিরেছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককে রাজ্য সরকারের তরফে জমি প্রদান করা হয়েছে। আমার ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র ব্যতিক্রম হলো। এই কঠিন সিদ্ধান্তটা নিতে বাধ্য হলাম।”
স্বপ্নার কোচ সুভাষ সরকার জানিয়েছেন, “ও সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মায়নি। একটা চাকরি করে এবং সেখান থেকে যা মাইনে পায় তার বেশিরভাগটাই ওকে বাড়িতে দিতে হয়। অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় খরচা করা ওর পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই নিজের কেরিয়ারের কথা ভেবেই মধ্যপ্রদেশের যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বপ্না।” স্বপ্না জানিয়েছেন যে মধ্যপ্রদেশ সরকার তাকে স্বর্ণ পদক জয়ের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা দেবে। রেকর্ড করলে অতিরিক্ত আর্থিক পুরস্কারের কথা বলা ছিল। অর্থাৎ প্রায় দশ লক্ষ টাকার কাছাকাছি পুরস্কার পাবেন স্বপ্না। এই অর্থ তার কেরিয়ারকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।