বাংলাহান্ট ডেস্ক: দুবাই এয়ারশোতে তেজস লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্টের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় শহিদ হলেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার নমংশ সেয়াল (Namansh Syal)। মাত্র ৩৪ বছরের এই মেধাবী পাইলট হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলার পাতিয়ালকার গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১০ মিনিট নাগাদ তেজস বিমানের ফ্লাইং ডেমোনস্ট্রেশনের সময় আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিমেষের মধ্যে ভেঙে পড়ে বিমানটি। মুহূর্তের বিস্ফোরণেই প্রাণ হারান নমংশ। ঘটনাস্থলের ভয়াবহ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তেই।
তেজস যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় শহিদ উইং কমান্ডার নমংশ সেয়াল (Namansh Syal)
নমংশ সেয়ালের (Namansh Syal) শেষ কথোপকথন আজ পরিবারের মনে ঝড় তোলে। নিজের বাবা, অবসরপ্রাপ্ত স্কুলপ্রধান জগন্নাথ সেয়ালকে তিনি বলেছিলেন— “এয়ারশো দেখেছ তো? টিভি বা ইউটিউবে দেখে নিও।” সেই কথাই বাবার কাছে শেষ স্মৃতি হয়ে রইল। সন্ধেয় তাঁর বাবা ইউটিউবে ছেলের পারফরম্যান্স খুঁজছিলেন। হঠাৎ সামনে আসে ‘Tejas Crash in Dubai’ শিরোনামের ভিডিও। দেখেন জ্বলন্ত বিমানের টুকরো মাটিতে আছড়ে পড়ছে। তারপরই ছুটে ফোন করেন পুত্রবধূকে, যিনি নিজেও বায়ুসেনার উইং কমান্ডার এবং তখন কলকাতায় একটি কোর্সে ছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই এয়ারফোর্স অফিসাররা এসে দাঁড়ান তাঁদের কোয়েম্বাটুরের বাড়ির দরজায়। বাবা বুঝে যান— ছেলের আর ফেরা হল না।
আরও পড়ুন:সেজে উঠছে অযোধ্যা! রাম মন্দিরের চূড়ায় পতাকা উত্তোলন করবেন মোদী, যোগীর নেতৃত্বে চলছে প্রস্তুতি
দুর্ঘটনার সময় নমংশের (Namansh Syal) স্ত্রী কলকাতায় প্রশিক্ষণে ছিলেন। নমংশের বাবা-মা দুই সপ্তাহ আগে কোয়েম্বাটুরে নাতনি আর্যার দেখাশোনা করতে এসেছিলেন। পরিবারের ঘরে এখন গভীর শোকের ছায়া। মা এতটাই ভেঙে পড়েছেন যে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নমংশ খুব শিগগিরই স্কোয়াড্রন লিডার পদে প্রমোশন পাওয়ার কথা ছিল।
হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুক্খু এক বিবৃতিতে বলেন— “দেশ এক বীর এবং কর্তব্যপরায়ণ পাইলটকে হারাল। নমংশ সেয়ালের (Namansh Syal) অদম্য বীরত্বকে স্যালুট।” জেলা প্রশাসনও পরিবারের পাশে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি কমিশনার হেমরাজ বাইরও (Tejas Crash)।

আরও পড়ুন:দেখতে টাটকা, আসলে বাসি! মটরশুঁটি কেনার সময় দেখে নিন এই লক্ষণগুলি
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তেজস বিমানটি দুর্ঘটনার আগে একটি নেগেটিভ-জি ম্যানুভার করছিল। অত্যন্ত কম উচ্চতায় সেই ম্যানুভার থেকে বিমানটি রিকভার করতে পারেনি। শেষ মুহূর্তে বিমানের পাখা সমান হলেও ততক্ষণে উল্লম্ব গতিবেগ বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল। ফলে পাইলট ইজেক্ট করার সুযোগও পাননি।
HAL–এর তৈরি তেজস বিমান ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম গর্ব হলেও, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কারণ জানতে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে। নমংশ সেয়ালের মৃত্যুতে বায়ুসেনা, পরিবার এবং দেশ হারাল এক সাহসী, দায়িত্বশীল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অফিসারকে।












