বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের বিতর্কের কেন্দ্রে আরজি কর হাসপাতাল (RG Kar)। এক বছর আগে এই হাসপাতালে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনাকে ঘিরে সিনেমা তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সূত্রের খবর পরিচালক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় ওই ঘটনা নিয়ে ‘তিলোত্তমা’ নামে একটি ছবি তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু সেই ছবি তৈরি নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন অভয়ার বাবা-মা। এই নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।
মৃতার পরিবারের স্পষ্ট আপত্তি
অভয়ার পরিবারের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, তাঁরা এই ছবির সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত হতে চান না। অভয়ার বাবা বলেন, “এই সিনেমা নিয়ে আমাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। এটা আমাদের মামলায় কোনও সাহায্যই করবে না। আমরা বিচার চাই। পরিচালক তাঁর নিজের সুবিধের জন্য এটি বানাচ্ছেন। তাঁরা বারবার ফোন করে আমাদের বিরক্ত করছেন। এই চলচ্চিত্রের সঙ্গে আমরা কোনও সম্পর্ক রাখতে চাই না।”
এই বিতর্কের মাঝে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা প্রসার ভারতী। সংস্থার প্রধান কার্যনির্বাহী আধিকারিক গৌরব দ্বিবেদী জানিয়েছেন, ছবিটি সম্প্রচারের প্রস্তাব বর্তমানে “বিবেচনাধীন”।
গল্পের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কি বলেছেন পরিচালক?
ছবিটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন জাতীয় পুরস্কার জয়ী পরিচালক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘তিলোত্তমা’ আসলে মৃতার মায়ের চোখ দিয়ে বলা হবে এক মর্মান্তিক কাহিনি। মূল চরিত্রে অভিনয় করবেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ তথা অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
উজ্জ্বল জানিয়েছেন, তিনি পরিবারের কাছ থেকে মৃতার আসল নাম ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছেন। যদিও অনুমতি না মিললেও অন্য নামে সিনেমাটি তৈরি করবেন বলে স্পষ্ট করেছেন পরিচালক। তাঁর দাবি, প্রসার ভারতীর একাধিক আধিকারিক, এমনকি চেয়ারম্যান নবনীত সেহগলও তাঁকে এই প্রজেক্টে উৎসাহ দিয়েছেন। তবে সেহগল এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
পরিচালক দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির কিছু নেতা ছবির পেছনে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিশেষ করে অগ্নিমিত্রা পলের নাম উল্লেখ করেন তিনি। যদিও রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য পরিষ্কার জানিয়েছেন, “এই ছবিটি তৈরির সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগাযোগ নেই।”
অন্যদিকে অগ্নিমিত্রা পল জানিয়েছেন, মৃতা চিকিৎসকের বাবা-মায়ের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, “আমি প্রথম থেকেই বাবা-মায়ের পাশে আছি। আমরা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। যদিও তাঁদের আইনজীবী এখনই ছবিটি তৈরি হোক, সেটা চাইছেন না। বাবা-মা রাজি না হলে আমরা এগোতে পারব না।” তিনি আরও বলেন, বাংলায় শুটিং করলে সমস্যা হতে পারে, তাই পরিচালক দিল্লিতে শুট করার পরিকল্পনা করেছেন।

আরও পড়ুনঃ ফের সরকারি হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে হেনস্থা, অভিযোগে তোলপাড় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ
পরিচালক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় ছবি তৈরি ও মুক্তির পরিকল্পনা সম্বন্ধে বলেন যে, আরজি কর (RG Kar) হাসপাতালে মর্মান্তিক ঘটনার ভিত্তিতে তৈরি হতে চলা ‘তিলোত্তমা’র শুটিং শুরু হবে আগামী ডিসেম্বর মাসে এবং ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে শেষ হবে। মার্চ মাসেই মুক্তির লক্ষ্য রয়েছে। কাকতালীয় ভাবে, সেই সময়েই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে বিধানসভা নির্বাচন, যা এই সিনেমাকে আরও রাজনৈতিক মাত্রা দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।













