বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুল হলো এমন একটি জায়গা যেখানে থেকে আমরা প্রতিনিয়ত জ্ঞান অর্জন করি। ফলে বিদ্যালয়কে মন্দিরের সাথে তুলনা করা হয়। আমরা সকলেই জানি, শিক্ষা সকলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে দেশে এমন অনেক এলাকা রয়েছে যেখানে স্কুলের অভাবে শিশুরা ঠিকমতো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না। সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যালয় নির্মাণের কাজ করা হলেও নানান কারণে তা হয়তো বন্ধ হয়ে থাকে নয়তো কার্যকর করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
তবে পৃথিবীতে যে ভালো মানুষের অভাব নেই, তারই প্রমাণ মিলেছে সম্প্রতি পাওয়া একটি খবরে। মধ্যপ্রদেশের অশোকনগরে এক কৃষক বৃজেন্দ্র সিংহ রঘুবংশী তাঁর মূল্যবান জমি সরকারকে দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে এলাকার শিশুরা উন্নত শিক্ষা লাভ করতে পারে। জানা যাচ্ছে, অশোকনগর থেকে 30 কিলোমিটার দূরে মহিদপুর গ্রামে সিএম রাইজ স্কুলের অনুমোদন দেওয়া হলেও এর জন্য সরকারের প্রায় 10 বিঘা জমির প্রয়োজন হয়। কিন্তু মাত্র 6 বিঘা জমি থাকার ফলে প্রশাসন এই বিদ্যালয়টি অন্য জায়গায় সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
এই খবরটি গ্রামে বসবাসকারী বৃজেন্দ্রর কাছে যাওয়া মাত্র তিনি সিদ্ধান্ত নেন, তিনি কোনমতেই স্কুলটিকে গ্রাম থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হতে দেবেন না। এবং সেই কারণে সম্প্রতি তিনি তাঁর 4 বিঘা জমি সরকারকে দান করার ঘোষণা করেন। এই জমির দাম প্রায় 25 লাখ টাকা বলে জানা গেছে। এরপর সেই ব্যক্তি প্রশাসনিক আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে তাঁর জমি স্কুলের জন্য বিনামূল্যে দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
প্রসঙ্গত, বৃজেন্দ্র এই পরোপকারী মানসিকতা পেয়েছেন তাঁর বাবার কাছ থেকে। জানা যায়, তাঁর পিতা প্রয়াত নাথান সিংহ রঘুবংশী প্রায় 40 বছর ধরে গ্রামের প্রধান ছিলেন। এবং তাঁর আমলে নিজের জমিতে স্কুল থেকে পঞ্চায়েত ভবন, একাধিক ভিত তিনি তৈরি করেন। এর পাশাপাশি তাঁর দুই বিঘা জমিতে গ্রামের দরিদ্র মানুষদের জন্য ঘর তৈরি করার ব্যবস্থাও করেন। ফলে বৃজেন্দ্রর এই মানসিকতার যে তাঁর বাবার থেকেই পাওয়া, তা বলা যায়।
বর্তমানে স্কুলের জন্য জমি পাওয়ার পর জেলা প্রশাসন দ্রুত তাদের কাজ শুরু করেছে এবং আশা করা হচ্ছে, খুব দ্রুত স্কুলটির নির্মাণ করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে বৃজেন্দ্র বলেন, “শিক্ষার থেকে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই নেই। আমিও গ্রাম থেকে শহরে লেখাপড়া করতাম। তাই জানি এর গুরুত্ব কতটা। তবে সরকারের এত বড় প্রকল্পের সুফল যাতে আমাদের গ্রামের ছেলে মেয়েরা পায়, সেই কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”