বাংলাহান্ট ডেস্ক: ছত্তিশগড় সরকারের সহায়তায় অনন্য সাফল্যের গল্প (Success Story) লিখলেন সায়ো। কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করতে কৃষিক্ষেত্রে এক নতুন দিশা দেখাচ্ছে। শুধু ধান বা গমের মতো ঐতিহ্যবাহী ফসলেই নয়, রাজ্যের কৃষকদের এখন উৎসাহিত করা হচ্ছে উদ্যানচাষ ও সবজি উৎপাদনের দিকে। রাজ্যের উদ্যানপালন বিভাগ কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফল ও সবজি চাষে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, যাতে তারা অধিক আয় করতে পারেন এবং সারা বছর কর্মসংস্থানের সুযোগ পান। এই উদ্যোগ কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতেও নতুন প্রাণসঞ্চার করছে। উদ্যানপালন বিভাগের এই উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক কৃষকই এখন পারম্পরিক ফসল থেকে সরে এসে সবজি ও বাগান ফসলে মন দিচ্ছেন। ঠিক তেমনই ছত্তিশগড় মানোরা উন্নয়নখণ্ডের কেরাকোনা গ্রামের কৃষক সায়ো উদ্যানপালন বিভাগের পরামর্শে মরিচ চাষ শুরু করেছেন। বিভাগীয় কর্মকর্তারা তাঁর জমির পরীক্ষা করে দেখেন যে মাটি ও পরিবেশ মরিচ চাষের জন্য উপযুক্ত। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সায়ো নিজের মোট ৩.৬ হেক্টর জমির মধ্যে ০.৩ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ শুরু করেন।
ছত্তিশগড়ের সায়োর অনন্য সাফল্যের কাহিনি (Success Story)
সায়ো জানিয়েছেন, উদ্যানপালন বিভাগ শুধু প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণই দেয়নি, বরং মরিচ চাষের সুবিধা ও বাজারের চাহিদা সম্পর্কেও বিস্তারিত দিকনির্দেশনা দিয়েছে। স্থানীয় বাজার এবং পার্শ্ববর্তী হাটে মরিচের ভালো দাম পাওয়ায় তিনি লাভবান হচ্ছেন। তাঁর কথায়, “আগে ঐতিহ্যবাহী ফসল থেকে যা আয় হতো, এখন মরিচ চাষে তার দ্বিগুণ আয় হচ্ছে। আগামী মৌসুমে আমি আরও বেশি জমিতে মরিচের চাষ করতে চাই (Success Story)।”
আরও পড়ুন:ইউনূসের ওপর আর নেই ভরসা! বাংলাদেশে ৮০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ বন্ধ করল IMF
বিশেষজ্ঞদের মতে, মরিচ চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা হলেও এতে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান অত্যন্ত জরুরি। মরিচ মূলত তিনটি ঋতুতে চাষ করা হয় এবং এর জন্য ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সবচেয়ে উপযুক্ত। অতিরিক্ত ঠান্ডা বা পালা গাছের ক্ষতি করতে পারে। জলনিকাশযুক্ত কালো দোআঁশ মাটিতে এই ফসল সবচেয়ে ভালো জন্মে এবং মাটির pH মান ৬ থেকে ৭-এর মধ্যে থাকা দরকার। চাষের আগে জমি ২-৩ বার ভালোভাবে চাষ করে নিতে হয় এবং শেষবার চাষের সময় প্রতি হেক্টরে ১০-১৫ টন গোবর বা কম্পোস্ট সার মেশাতে হয়। পাশাপাশি মাটি পরীক্ষার ভিত্তিতে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশ (NPK)-এর সুষম প্রয়োগ করলে ফলন আরও বৃদ্ধি পায় (Success Story)।
আরও পড়ুন:অপ্রতিরোধ্য ভারত বারংবার টক্কর দিচ্ছে চিনকে! এবার দেশেই তৈরি হতে চলেছে স্মার্টফোন হাব
উন্নত জাতের মরিচ যেমন ভিএনআর রানি ৩৩২, ভিএনআর উন্নতি, অরকা মেঘনা বা কাশি সুরখ চাষ করলে কৃষকরা আরও ভালো ফলন পান। ছত্তিশগড় সরকার কৃষকদের এমন আধুনিক জাত ও প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করতে সচেষ্ট। রাজ্যের উৎপাদন লিঙ্কড ইনসেনটিভ (PLI) স্কিমের মতো উদ্যোগে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো ও বাজার সম্প্রসারণের কাজও সমানভাবে চলছে (Success Story)।
রাজ্যের কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, ছত্তিশগড় এই উদ্যানচাষ বিপ্লব কেবল কৃষকদের আয়ই বাড়াচ্ছে না, বরং রাজ্যের সামগ্রিক কৃষি কাঠামোকেও আধুনিক ও টেকসই করে তুলছে (Success Story)।