বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের রাজ্যে তথা দেশে আম ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এমনকি, জাতীয় ফলের তকমাও পেয়েছে এই ফল। গ্রীষ্মকালে প্রতিটি বাজারে এক্কেবারে রাজকীয়ভাবে উপস্থিত থাকে বিভিন্ন প্রজাতির আম। পাশাপাশি, এই ফলের ব্যবসা করেও অনেকে ভালো অঙ্কের রোজগার করেন।
তবে, আমের পাশাপাশি এই গাছের পাতাও কিন্তু বিক্রি হয় চড়াদামে। শুধু তাই নয়, এই পাতা বিক্রির মাধ্যমেই আমাদেরই রাজ্যের এক কৃষক করছেন লক্ষ লক্ষ টাকা আয়ও। শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি। ওই কৃষক আম নয়, বরং এই গাছের পাতা বিক্রির মাধ্যমেই ব্যবসার নতুন এক দিগন্ত খুলে দিয়েছেন। এছাড়াও, তিনি করে দিয়েছেন কর্মসংস্থানের সুযোগও।
আমরা জানি যে, “পঞ্চপল্লব”-এর মধ্যেও স্থান পেয়েছে আম পাতা। মূলত, পুজো-পার্বণের পাশাপাশি যে কোনো মঙ্গল অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয় এই পাতা। এছাড়াও, অনেকে ঘর বা দোকান সাজানোর কাজেও আমের পল্লব ব্যবহার করেন। এমতাবস্থায়, আম পাতার অর্থাৎ আমের পল্লবের চাহিদা বেশ ভালই থাকে। পাশাপাশি, জেনে অবাক হবেন যে, এমন বেশ কয়েকটি উন্নত মানের আম গাছের জাত রয়েছে যেগুলি শুধুমাত্র আম পাতা বিক্রি করার উদ্দেশ্য নিয়েই চাষ করা হয়।
আর ঠিক সেই উদ্দেশ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার সাতপুর মছলন্দপুরের বাসিন্দা দীপক কুমার রায় কয়েক বিঘা জুড়ে চাষ করছেন আম গাছের। তাঁর এই চাষে মূল লক্ষ্য থাকে আমি গাছের পাতা। শুধু তাই নয়, বিগত পাঁচ বছর ধরে তিনি এই চাষ করে আসছেন। সাধারণত, সুবর্ণরেখা জাতের আম গাছ রোপণের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয় এই চাষ।
জানা গিয়েছে যে, এই চাষের ক্ষেত্রে ওই গাছগুলির উচ্চতা রাখা হয় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ ফুটের মধ্যে। এছাড়াও, চাষের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় জৈব সার ও ভার্মি কম্পোস্ট। এই প্রসঙ্গে দীপক বাবু জানান যে, বিশেষ একটি পদ্ধতিতে আমের পাতা তুলে তা বান্ডিল করার মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হয় স্থানীয় বাজার সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে।
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এই চাষে মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। যদিও, একবার গাছ লাগানোর পর সেখান থেকে প্রায় কুড়ি বছর যাবৎ পাতা তোলা সম্ভব। এমতাবস্থায়, এই চাষ অত্যন্ত লাভজনক হয়ে উঠতে পারে কৃষকদের কাছে। যে কারণে অনেকেই এখন এই চাষের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চলতি বছরে দক্ষিণবঙ্গে অন্যান্য বছরের তুলনায় আমের ফলন যথেষ্ট কম হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা অবশ্য জানিয়েছেন যে, আমের ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো কোনো বছর প্রচুর ফলন ধরে আবার ঠিক তার পরের বছরই ফলন কমে যায়। চলতি বছরেও ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছে।