নকশালদের হাতে খুন হয়েছিলেন বাবা! “মিস ইন্ডিয়া” হয়ে ফিল্মের দিকে পা বাড়াচ্ছেন বস্তারের মেয়ে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলার ছবি এখন বদলে যাচ্ছে। এখানকার নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা দেশ তথা সমগ্র বিশ্বেই তাঁদের নিজেদের প্রতিভা তুলে ধরছেন। খেলাধুলার পাশাপাশি শিক্ষা এবং বিনোদনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে এখানকার ছেলে-মেয়েদের অবাধ বিচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সেই রেশ বজায় রেখেই এখানকারই প্রত্যন্ত গ্রামের এক তরুণী সদ্যই গ্ল্যামারের জগতে পা রাখতে চলেছেন। খুব অল্প বয়সেই মিস ইন্ডিয়ার খেতাব জিতেছেন লিপি মেশরাম। গোয়ায় আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় লিপি মেশরামই বস্তারের প্রথম তরুণী যিনি এই খেতাব জিতেছেন।

অথচ একটা সময়ে লিপির বাবা “লাল আতঙ্ক” অর্থাৎ নকশালদের শিকার হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে, লউন্ডিগুড়ায় বাড়ির সামনে লিপির পিতাকে গুলি হত্যা করে নকশালরা। মোট ৩ টি গুলিতে বিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এদিকে, বাবার মৃত্যুর পর লিপির মা তাঁর সন্তানদের অত্যন্ত কাঠিন্যের সাথে মানুষ করে সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করেন।

“মিস ইন্ডিয়ার” ওই প্রতিযোগিতায় লিপি সমগ্র দেশের ৩০ জন প্রতিযোগিনীকে হারিয়ে এই মুকুট মাথায় তোলেন। এই প্রসঙ্গে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় লিপি বলেন, “ভালো অবস্থানে আসাটা খুবই জরুরি। আমারও একটি স্বপ্ন ছিল এবং এই স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি। বস্তারের একটি গ্রামীণ এলাকা থেকে বেরিয়ে এসে শহুরে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়া আমার পক্ষে কঠিন ছিল।”

পাশাপাশি, তিনি আরও জানান যে, “তবে পরিবারের সমর্থন এবং বন্ধুদের উৎসাহ আমাকে শক্তি দিয়েছে। আমি ভিলাই পৌঁছেছি এবং গ্ল্যামারাস স্টুডিওতে যোগদানের পর, আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে শুরু করি। গোয়ায় এই প্রতিযোগিতায় পৌঁছে আমি এই শিরোপা অর্জন করতে পেরেছি।”

Lipi Meshram

এছাড়াও, জানা গিয়েছে যে, IAS-এর জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছেন লিপি। সবচেয়ে বড় কথা হল, ছত্তিশগড়ের এই কন্যা বর্তমানে চলচ্চিত্র জগতেও পা রাখতে চান। ইতিমধ্যেই তিনি হায়দ্রাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতে অডিশনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাশাপাশি, “মিস ইন্ডিয়া” লিপি মেশরাম একজন সমাজকর্মী এবং গায়িকাও। তাঁর ভালো কাজের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অধীনে বস্তারের অ্যাম্বাসেডরও বানানো হয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর