বাংলা হান্ট ডেস্ক : আরজিকর কাণ্ডের (RG Kar Case) প্রতিবাদে (Protest) অবস্থানরত চিকিৎসকদের আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ হয়ে উঠেছেন কিঞ্জল নন্দ। চিকিৎসকের পাশাপাশি তিনি একজন তুখোর অভিনেতা। তবে শুধু কিঞ্জল একাই নন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন এমনই আরও একজন সিনিয়র চিকিৎসক। তিনি হলেন বাসুদেব মুখোপাধ্যায় (BD Mukherjee)। একটা সময় বাংলা সিরিয়ালের দাপিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। টিভির পর্দাতেও বেশিরভাগ সময় চিকিৎসকের চরিত্রেই দেখা গিয়েছে তাঁকে।
আরজিকর কাণ্ডের (RG Kar Case) প্রতিবাদ নিয়ে বিডি মুখোপাধ্যায়
যদিও করোনার পর থেকে ধারাবাহিকে অভিনয় করা বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই ৮০ বছর বয়সে এসেও নিয়মিত রোগী দেখার পাশাপাশি এখনও নাটকে অভিনয় করছেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা-চিকিৎসক। সম্প্রতি রাজ্যে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের (RG Kar Case) ঘটনায় আনন্দবাজার অনলাইনে মুখ খুলে ছিলেন। এরই মধ্যে দেখতে দেখতে তিলোত্তমার হত্যা-ধর্ষণ কাণ্ডের একমাস অতিক্রান্ত।
যেদিন এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে সেদিন অর্থাৎ ৯ আগস্ট সকালবেলা তখন সবেমাত্র একটা অস্ত্রপোচার শেষ করেছিলেন বিডি মুখোপাধ্যায়। তারপরেই আরজিকরের (RG Kar Case) এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর পেয়ে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। আরজিকরের (RG Kar Case) মত মেডিকেল কলেজের ভিতরে এমন একটা ঘটনা ঘটতে পারে তা শুনেই স্তম্ভিত গিয়েছিলেন অভিনেতা। এদিন তিনি বলেছেন, ‘আরজি কর-কাণ্ডের (RG Kar Case) প্রতিবাদে আন্দোলন এখন আর শুধুই চিকিৎসকেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সমাজের সর্ব স্তরের মানুষ আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। প্রত্যেকেই একটা সুস্থ সমাজ গড়ার দাবিতে লড়াই করছেন। এবং অবশ্যই নির্যাতিতার সুবিচারের জন্য লড়াই করছেন।’
তবে সেইসাথে তিনি দাবি করেছেন একদল মানুষ চিকিৎসকদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। এপ্রসঙ্গে সরাসরি কাঞ্চন মল্লিক এবং লাভলী মৈত্রের নাম করেই তিনি এদিন বলেছেন, ‘কাঞ্চন মল্লিক বা লাভলি মৈত্রের মতো কয়েক জন অশিক্ষিতের মতো কথা বলছেন! যা মুখে আসে, তা-ই কিন্তু বলা যায় না। অসুস্থ হলে তো সেই আমাদের কাছেই আসতে হবে তাঁদের। আমি এই দাবিও করছি, কয়েক জনের জন্য সকলকে খারাপ ভাববেন না।’
আরও পড়ুন : সোজা মেরুদণ্ডের মানুষ! RG Kar কাণ্ডের প্রধান ‘প্রতিবাদী মুখ’, কে এই কিঞ্জল নন্দ?
এছাড়াও এদিন রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবার মধ্যেও সিন্ডিকেট ব্যবস্থার উপস্থিতি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে এদিন তিনি বলেছেন, ‘একজন বর্ষীয়ান চিকিৎসক হিসাবে এটা শুনতে খারাপ লাগে। কারণ সত্যি বলছি, প্রচুর পরিশ্রম করে একটি ছেলে বা মেয়ে চিকিৎসক হয়ে ওঠে। সেখানে শুনছি, অর্থের বিনিময়ে এখন ডিগ্রি পাওয়া সম্ভব। এমনকি, পাশ-ফেলও কাউকে করিয়ে দেওয়া যাচ্ছে! এদেরকে আমার চিকিৎসক বলতেও লজ্জা করে।’
সেইসাথে এদিন জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘জুনিয়র চিকিৎসকেরা আমার ছোট ভাইয়ের মতো। কী সুন্দর ভাবে একটা আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, আমার দেখেও ভাল লাগছে। মিছিল, অবস্থান, তার পর লালবাজার— ওঁদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ অতুলনীয়।’ সেইসাথে আলাদা করে তিনি উল্লেখ করেছেন এই আন্দোলনের অন্যতম মুখ কিঞ্জল নন্দ’র কথা।
প্রসঙ্গত রাজ্যের জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতিতে নামায় অনেকেই বলছেন চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। তাঁদের উদ্দেশ্যে এই বর্ষীয়ান চিকিৎসক এদিন বলেছেন, ‘ কই,পাশাপাশি যে ‘অভয়া ক্লিনিক’ চলছে, সেটা নিয়ে তো সেই ভাবে কোনও কথা বলা হচ্ছে না? চিকিৎসকদের প্রতি সাধারণ মানুষের আবেগ এবং শ্রদ্ধাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত হচ্ছে। আর বিশ্বাস করুন, গত এক মাসে আমি প্রায় দেড়-দু’হাজার রোগী দেখলাম। প্রত্যেকের সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু এক জন রোগীও কিন্তু আমাকে বলেননি যে, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা উচিত। উল্টে আমাকে অনেকেই বলেছেন, সিনিয়র হিসেবে আমাদেরও আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। তা হলে ছোটরা মনে জোর পাবেন।’