বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নজিরবিহীন! কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) অধিবেশন কক্ষেই তৃণমূল এবং বিজেপির (TMC-BJP) কাউন্সিলরদের তুমুল মারপিট। আর সেই মারামারি থামাতে গিয়ে অবস্থা কাহিল হল কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim)। কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে এই ঘটনা যে একেবারেই নজিরবিহীন তেমনটাই মত পুরসভার আধিকারিকদের একাংশের।
শনিবার পুরসভার মাসিক অধিবেশন ছিল। সেখানেই শাসক-বিরোধীর মারামারিতে শোরগোল পড়ে যায়। এদিন প্রথমে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের (Sajal Ghosh) সঙ্গে মারামারি শুরুর হয় ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসুর।
অধিবেশনে পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা বলেন, “বিরোধীদের প্রশ্ন কোথায়?” এরপর মেয়র ফিরহাদ হাকিম বিরোধী বেঞ্চের দিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “এখন বিরোধীরা প্রশ্নই করেন না। তাই আমাদের কাউন্সিলরদেরই প্রশ্ন করতে হয়।” একথা শোনা মাত্র ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল বলেন, “বিরোধীরা প্রশ্ন করলেও উত্তর দেওয়া হয় না।”
আরও পড়ুন: ‘লাল দিয়ে যেটা দাগ সেটা দেখুন…জগিং করতে স্পেনে গিয়েছেন মমতা’, শুভেন্দুর তুমুল খোঁচা
তবে চেয়ারপার্সন তাকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, প্রশ্ন করলে উত্তর দেওয়া হবে। মেয়র সজল ঘোষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘আপনি প্রশ্ন জমা দিন, আমরা আপনাদের সব প্রশ্নের জবাব দেব।’’ এরপর পাল্টা সজল ফের বলেন, ‘‘টেন্ডার দুর্নীতি নিয়ে আমি বিগত অধিবেশনে প্রস্তাব জমা দিয়েছিলাম। সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়নি। আসল কথা হল পুরসভা পরিচালনার দায়িত্বে যারা রয়েছেন, তারাই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।’’
আরও পড়ুন: ‘দুর্গা’ বানান ভুল! এই বিদ্যে নিয়ে শিক্ষকতা? চাকরিপ্রার্থীর আবেদনই খারিজ করে দিলেন বিচারপতি
এর পরই নাকি হই হট্টগোল শুরু করেন শাসকদলের কাউন্সিলরেরা। সজল ঘোষের কাছের আসনে বসে ছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু। এরপর সজল ঘোষের দিকে এগিয়ে যান তিনি। তর্কাতর্কি থেকে হাতাহাতি। বিজেপির অভিযোগ, হঠাৎই সজলকে ধাক্কা দেন অসীম। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে বিজেপির বিজয় ওঝা। সামনা-সামনি চলে আসেন তৃণমূল কাউন্সিলররাও।
বিজেপির আরও অভিযোগ, হাতাহাতি চলাকালীন তৃণমূল কাউন্সিলর সুদীপ পোল্লে নাকি সজল ঘোষকে ঘাড়ে চেপে ধরেন। ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। ক্ষুব্ধ হয়ে অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান চেয়ারপার্সন মালা রায়। পরে অবশ্য পুর-সদস্যদের অনুরোধে তিনি ফিরে আসেন। কাউন্সিলরদের উদ্দেশে চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘এটা মারামারি করার জায়গায় নয়। এমন কাজ করতে চাইলে হয় নরদান পার্কে যান, নয় লেবুতলা পার্কে যান।’
ওদিকে সজলের উপর আক্রমণ করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে অধিবেশন বয়কট করেন গেরুয়া কাউন্সিলরেরা। ওদিকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অসীম বলেন, সজলই গালিগালাজ করে সভাকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেছেন। অধিবেশন কক্ষের মধ্যেই এইরকম মারামারির ঘটনা নিয়ে সজল এবং অসীম দুই কাউন্সিলরের কাছেই জবাব তলব করেছেন পুর চেয়ারপার্সন মালা। ঠিক থাক জবাব না মিললে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।