বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একেই ‘কালী’ তথ্যচিত্র এবং সেই সংক্রান্ত একটি পোস্টার নিয়ে সরগরম রয়েছে দেশের রাজনীতি। পোস্টারের মধ্যে মা কালীকে সিগারেট খেতে দেখতে পাওয়া যায়, যা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রতিবাদে নেমেছে বহু মানুষ। সেই আঁচ সম্প্রতি এসে পৌঁছেছে বাংলাতেও। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এই প্রসঙ্গকে হাতিয়ার করে মা কালীকে ‘মদ ও মাংসের দেবী’ বলে উল্লেখ করেন, যার পরেই তৃণমূল নেত্রীর সমালোচনায় সরব হয় বিজেপি। এমনকি বর্তমানে এই বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য মধ্যপ্রদেশে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর পর্যন্ত দায়ের করল রাজ্যের অপরাধ দমন শাখা।
মহুয়া মৈত্রর এহেন মন্তব্য ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হেনেছে বলে অভিযোগ তাদের। বাংলাতেও এদিন বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদের সামিল হয় বিজেপি। শুধু তাই নয়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এদিন আদালতে যাওয়ারও হুশিয়ারি দেন। বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে তৃণমূল সাংসদের মন্তব্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, “উনি যে মন্তব্য করেছেন, তা হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দিয়েছে। আমাদের দেবদেবীকে নিয়ে কেউ যদি অপমান করে, তাহলে সেটা আমরা মানব না।”
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চিত্রপরিচালক লীনা মণিমেকলিয়ের কালী তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয় কানাডার একটি মিউজিয়ামে। এরপরেই সেই সংক্রান্ত একটি পোস্টার গোটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ে, যেখানে মা কালীকে সিগারেট খেতে দেখা যায়। এই ঘটনা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করেছে বলে অভিযোগ উঠতে থাকে। এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে মহুয়ার দাবি, “মা কালী তো মদ মাংসের দেবী। সেখানে যদি সিগারেট খায়, তাহলে আর কিসের আপত্তি?” এরপরেই তিনি বলেন, “আসলে এটা সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করছে, আপনি ঈশ্বরকে কিভাবে দেখছেন, সেটার ওপর। আপনি যদি ভুটান কিংবা সিকিমে যান, সেখানে ঈশ্বরকে হুইস্কি দেওয়া হয়। আবার উত্তরপ্রদেশে এগুলি খারাপ।”
যদিও এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদের পাশে দাঁড়ায়নি দল। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণটাই মহুয়া মৈত্রের ব্যক্তিগত মত বলে দাবি জানানো হয় তৃণমূল দলের পক্ষ থেকে।
এদিন কলকাতাতেও মহুয়া মৈত্রর বক্তব্যের বিরুদ্ধে পথে নামে বিজেপি। বউবাজার থানায় অভিযোগ পর্যন্ত দায়ের করা হয়। একই সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “পয়গম্বর বিতর্কে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নূপুর শর্মার গ্রেফতারির জন্য আওয়াজ তোলেন। কিন্তু এখন যে মা কালীকে নিয়ে এত বিতর্ক হচ্ছে, সেই সম্পর্কে তিনি কিছু বলছেন না।” এরপরেই বিজেপি নেতা বলেন, “আমরা দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব। এর মধ্যে যদি প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আদালতে পর্যন্ত যাব।”