বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত আড়াই মাস ধরে কাজ করেও মজুরি পাচ্ছেন না একশো দিনের কর্মীরা। যদিও উৎসব বা জাঁক-জমক অনুষ্ঠানের পিছনে কোটি-কোটি টাকা ব্যায় করছে কলকাতা পুরনিগম (Calcutta Municipal Corporation)। তাই প্রশ্ন উঠছে তাহলে মজুরির টাকা দিতে গিয়ে কেন ভাঁড়াড়ে টান পড়ছে কলকাতা পুরসভার? এই বিষয়ে এবার বিরোধীদের একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়ছে কলকাতা পুরনিগম। যদিও ইতিমধ্যেই দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস মিলেছে।
অর্থসংকটে পুরনিগম (Calcutta Municipal Corporation)?
সূত্রের খবর,বর্তমানে কলকাতা পুরনিগমে (Calcutta Municipal Corporation) প্রায় সাড়ে চোদ্দ হাজার ১০০ দিনের কর্মী রয়েছেন। জানা যাচ্ছে, তাঁদের পিছনে মজুরি বাবদ মাসে প্রায় আট থেকে নয় কোটি টাকা ব্যয় হয় পুরসভায়। অভিযোগ, বিগত আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে কাজ করেও বেতন পাচ্ছেন না একশো দিনের এই কর্মীরা। এইভাবে আচমকা হাতে টাকা আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহা বিপদে পড়েছেন ওই কর্মীরা। কারণ, মাস গেলে এতদিন তাঁদের হাতে অন্তত ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা আসত। কিন্তু, এখন সেই সামান্য টাকাও তাঁরা পাচ্ছেন না।
এখানেই শেষ নয়! জানা যাচ্ছে, কলকাতা পুরসভার (Calcutta Municipal Corporation) অর্থভান্ডার এতটাই দৈন হয়ে পড়েছে যে বাধ্য হয়ে একাধিক প্রকল্প স্থগিত রাখতে হয়েছে। সূত্রের খবর, বর্তমানে পুরসভার স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মীদের বেতন ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন দিতে মাসে প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা খরচ হয়।
আরও পড়ুন: দরদর করে ঝরছিল ঘাম! এখন কেমন আছেন অসুস্থ সৌগত রায়?
জানা যাচ্ছে প্রায় ১৮ হাজার স্থায়ী কর্মীর জন্য বর্তমানে খরচ হচ্ছে ৭৮ কোটি। অন্যদিকে অস্থায়ী প্রায় ২০ হাজার কর্মীদের বেতন বাবদ খরচ হয় মোট ১৫ কোটি টাকা। এছাড়াও প্রায় ৩৫ হাজার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের জন্য় মাস গেলে পুরসভার (Calcutta Municipal Corporation) খরচ হয় ৪০ কোটি। প্রথা অনুযায়ী এরমধ্যে স্থায়ী কর্মীদের বেতনের ৮৫ শতাংশ রাজ্য সরকার বহন করলেও বাকি ১৫ শতাংশ খরচ দিতে হয় পুরসভাকে। যদিও অস্থায়ী কর্মীদের বেতনের পুরো টাকাই পুরসভাকে বহন করতে হয়।
পুরসভা সূত্রে খবর,২০২২ সাল থেকে ১ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুরনিগমর কাছে ঠিকাদার সহ পাওনাদারদের বকেয়ার পরিমাণ পৌঁছেছে ৮৯৪ কোটিতে। অথচ এই কলকাতা পুরনিগমের ভাঁড়ার থেকেই গত সেপ্টেম্বর মাসে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটিগুলিকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়াও আগামী ১২ই মার্চ প্রাক দোল উৎসব অনুষ্ঠিত হতে চলেছে কলকাতার ধনধান্য অডিটোরিয়ামে। সেখানেও পুরনিগমের তরফে লাখ খানেক টাকা ব্যয় করা হতে পারে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম এপ্রসঙ্গে বলেছেন, ‘পৌরসভায় আগে যাঁরা ছিলেন, বিকাশদারা জমি বেচে অর্থনীতি সামাল দিয়েছেন। আর আমরা আন-অ্যাসেস্ট জমিগুলো ঠিক করে অর্থনৈতিক ঠিক করার চেষ্টা করছি। ট্যাক্স না বাড়িয়েও পুরনিগমের খরচ বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’ ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিরোধী কাউন্সিলর সজল ঘোষ জানিয়েছেন, কর্মীরা নর্দমার পাঁক তুলে দৈনিক ২০০ টাকাও যদি না পায় তাহলে তাঁরা কিসের জন্য কাজ করবে? তিনি জানিয়েছেন ওরা নাকি রোজ মাইনে চায়। অন্যদিকে মেয়র পারিষদ অসীম বসু আশ্বস্ত করেছেন যে তেরোটি বোরোর পেমেন্ট বাকি আছে তা নাকি সামনের সপ্তাহে মিটিয়ে দেওয়া হবে।