সভার মাঝেই ইস্তফার কথা বলে ফেললেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ! কী এমন ঘটল?

Published on:

Published on:

Firhad Hakim Draws Line Over Mini Pakistan Remark
Follow

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘মিনি পাকিস্তান’ মন্তব্য ঘিরে কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে চরম উত্তেজনা ছড়াল। বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের কটাক্ষে ক্ষুব্ধ হয়ে সভার মধ্যেই বড় ঘোষণা করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি শুধু মেয়র পদ নয়, রাজনীতিও ছেড়ে দেবেন বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন তিনি।

কী নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক?

ঘটনার সূত্রপাত তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর আনা একটি নিন্দা প্রস্তাব থেকে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিমদা’ বলে সম্বোধন করা এবং ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগান নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষিতেই এই প্রস্তাব আনা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপর সাংস্কৃতিক আক্রমণ হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে সবাইকে একজোট হতে হবে।

এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বক্তব্য রাখেন কলকাতার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। এর পর শাসক পক্ষের হয়ে শেষ বক্তা হিসেবে উঠে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।

ফিরহাদের (Firhad Hakim) বক্তব্যে নতুন মোড়

বক্তৃতার সময় ফিরহাদ (Firhad Hakim) বলেন, “ফজলুল হকের মন্ত্রিসভায় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যোগ দিয়েছিলেন। পাকিস্তান চাওয়ার প্রশ্নে হিন্দু মহাসভা তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল।” এই মন্তব্যের পরই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

‘মিনি পাকিস্তান’ মন্তব্য ঘিরে বিস্ফোরণ

বিরোধী বেঞ্চ থেকে তখনই সজল ঘোষ পাল্টা বলেন, “আপনিও তো কলকাতার একটা অংশকে মিনি পাকিস্তান বলেছিলেন।” এই মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মেয়র (Firhad Hakim)। এরপরেই সভাকক্ষ কার্যত উত্তাল হয়ে ওঠে।

ইস্তফার চ্যালেঞ্জ ফিরহাদের

আঙুল উঁচিয়ে ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) বলেন, “যদি কেউ এমন একটি ভিডিও বা বক্তব্য দেখাতে পারেন, যেখানে আমি ‘মিনি পাকিস্তান’ বলেছি, তাহলে আজই মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেব।” তিনি আরও বলেন, “আমি মুসলমান হতে পারি, কিন্তু আমার দেশ ভারত। পাকিস্তান আমার শত্রু।” পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিজের আসন ছেড়ে মেয়রের কাছে যান তৃণমূল কাউন্সিলর ও রাসবিহারীর বিধায়ক দেবাশিস কুমার।

অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফিরহাদ (Firhad Hakim) বলেন, এই ধরনের মন্তব্য তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে আঘাত করে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি রাজনীতিও ছেড়ে দেবেন বলে জানান। তাঁর দাবি, বাংলায় আগে এই ধরনের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ছিল না এবং এই রাজনীতি বেশিদিন টিকবে না।

Firhad Hakim Unfazed Amid Voter List Row

আরও পড়ুনঃ দলকে না জানিয়ে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক? অভিষেক কড়া বার্তা দিতেই রচনা বললেন…

এদিন ‘মিনি পাকিস্তান’ মন্তব্যের উৎস নিয়েও মুখ খোলেন ফিরহাদ (Firhad Hakim)। পাকিস্তানের কোনও সংবাদপত্রে তাঁর সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে, এই দাবি উড়িয়ে দেন তিনি। তিনি বলেন, তিনি উর্দু পড়তে জানেন না এবং বাংলায় পাকিস্তানের কাগজ আসে না। এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করে ফিরহাদ বলেন, “গল্পের গরু গাছে তোলা হচ্ছে।”