বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতায় সোমবার রাত থেকে শুরু হয়েছে মেঘভাঙা বৃষ্টি। যার জেরে পুরো কলকাতা শহর জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এর জন্য স্তব্ধ হয়ে রয়েছে জনজীবন। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুরসভার মেয়র পরিষদ ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) জানিয়েছেন, যদি আর কোনও বৃষ্টি না হয়, তবে শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) তৎপর নজরদারি
সোমবার রাত থেকে ঘরে বসেই কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। শহরের কোথায় জল জমেছে, তা খতিয়ে দেখা এবং জল কীভাবে নামানো যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ দেন তিনি। মঙ্গলবার সকাল প্রায় সাড়ে ৭টায় তিনি সরাসরি পুরসভার কন্ট্রোল রুমে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন মেয়র। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত মেয়রের সঙ্গে পুরসভার মেয়র পরিষদ (নিকাশি) তারক সিংহের একাধিক বার কথা হয়েছে।
তারক সিংহ জানান, “দুর্গাপুজোর সময় কলকাতায় এমন বৃষ্টি আগে কখনও দেখিনি। রাত থেকেই নিকাশি সিস্টেম কাজ শুরু করেছে। কিছু গালিপিট ইতিমধ্যেই কাজ করছে, তবে কিছু গালিপিট এখনও কাজে লাগানো যায়নি। রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভোর ৫টায় লকগেট খোলা হয়েছে, নিকাশি বিভাগ কাজ শুরু করেছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি না হলেও শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে রাত হয়ে যাবে।”
‘রেড অ্যালার্ট’ জারি কলকাতায়
কলকাতা পুরসভার সূত্র জানিয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর গঙ্গায় জোয়ার আসায় লকগেট বন্ধ রাখা আবশ্যক। নিকাশি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সেক্ষেত্রে জলমগ্ন পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
প্রসঙ্গত, রাত থেকে ভোর পর্যন্ত শহরে ৩৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। উত্তর কলকাতার কয়েকটি এলাকা কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বিকে পাল, বিটি রোড, কলেজ স্ট্রিট, সিআর অ্যাভিনিউ, জেএম অ্যাভিনিউসহ অনেক রাস্তা এখনও জলমগ্ন। বেহালা, বড়িশা, ঠাকুরপুকুর, জোকা, মেটিয়াবুরুজ, গার্ডেনরিচসহ বিভিন্ন এলাকায় জলরোধ অবস্থা। জলমগ্ন হয়ে একাধিক বাড়ি, রাস্তা ও গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। শিয়ালদহে রেলওয়ে ট্র্যাক ডুবে যাওয়ায় ট্রেন পরিষেবা বন্ধ। মেট্রো পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ দুই শীর্ষ নেতার মৃত্যুতে কেঁপে উঠল জঙ্গলমহল! নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে খতম দুই মাও মাস্টারমাইন্ড
মঙ্গলবার ভোর থেকেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) এবং তারক সিংহ সহ নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা পুরসভায় বসে পুরো কলকাতার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। মেয়র জানান, শহরের রাস্তার জল নামানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। তিনি সতর্ক করেছেন, ফের বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হতে পারে। হাওয়া অফিসও জানাচ্ছে বৃষ্টি চলবে। তাই কলকাতার স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে আসতে আরও সময় লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।